দাম্পত্যের শুরুর দিনগুলো একদম চির বসন্তের রঙে রাঙা হয়ে থাকে। এই সময় প্রেমের দমকা হাওয়ায় স্বামী-স্ত্রীর মন উথালপাতাল হয়। একে অপরকে ছাড়া এক দণ্ড থাকাও তখন যাতনার সমান। এই সোনালি-রুপালি দিনগুলিতে সবকিছুর উপরে স্থান পায় ভালোবাসা। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই চালচিত্রে রঙের হেরফের হয়। অনেক ক্ষেত্রে প্রেমের রঙ ফিকে হতে শুরু করে। আর সেই জায়গায় অভিমানের রং চড়তে থাকে। ফলে সম্পর্কের পথে কাটার সংখ্য়া বাড়ে।
দাম্পত্যে দূরত্ব তৈরি হতেই পারে। তবে একটু সতর্ক হয়ে ঠিক সময়ে ব্যবস্থা নিলেই এই দূরত্ব মিটিয়ে ফেলা সম্ভব। তবে এই কাজে বাধ সাধে 'ইগো'। এমন পরিস্থিতিতে অধিকাংশ পুরুষই সম্পর্কের নুইয়ে পড়া চারাতে পানি দেওয়ার পরিবর্তে ভুলের পর ভুল করতে শুরু করে দেন। আর সেই কারণেই নারীদের মনের সলতে পাকানো আগুন ধীরে ধীরে বহ্নিশিখায় রূপান্তরিত হয়। তারপর দাবানলের আকার নিয়ে সম্পর্ককে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দেয়।
বিজ্ঞাপন
তাই এই ধরনের ভুলের ফাঁদ থেকে নিজেকে দূরে রাখাটাই হল বুদ্ধিমানের কাজ। কিন্তু কী ভুল করছেন সেটা না জানলে বিপদ এড়াবেন কীভাবে?
সকল ভুলের কথা জেনে নিয়ে নিজেকে শুধরে নিন। নইলে আপনাকেও ডিভোর্সের ফাঁদে পড়তে হতে পারে।
১. সারাক্ষণ চিৎকার-চেচামেচি করা
অফিসের ঝাল স্ত্রীর উপরে বের করার অভ্যাস অনেক পুরুষেরই রয়েছে। তবে জেনে রাখুন, আজকালকার নারীরা কিন্তু আপনার ফ্রাস্টেশনের ধার ধারেন না। তাই প্রতিদিন বাড়ি ফিরে স্ত্রীর উপর সব ফ্রাস্টেশন বের করলে তিনিও কিন্তু ছেড়ে কথা বলবেন না। বরং এই ধরনের অভব্য ব্যবহার তাকে ভিভোর্সের কথা ভাবতেও বাধ্য করতে পারে। তাই এখনই এই বদভ্যাস ত্যাগ করুন। নইলে যে বড়সড় বিপদের খপ্পরে পড়বেন, তা তো বলাই বাহুল্য।
বিজ্ঞাপন
২. শারীরিক সম্পর্কে ইতি পড়েছে?
দাম্পত্যের ভিতকে শক্তপোক্ত রাখতে চাইলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক থাকতেই হবে। নইলে ধীরে ধীরে পরস্পরের মাঝে তৈরি হবে এক অসীম শূন্যতা। এমনকী এই পরিস্থিতিতে ডিভোর্স পর্যন্তও কথা এগতে পারে। তাই আপনাদের মধ্যে শারীরিক ঘনিষ্ঠতা না থাকলে আজই এগিয়ে এসে সম্পর্কে উষ্ণতার প্রদীপ জ্বালান। তাহলেই ফের দাম্পত্য গাড়ি মসৃণ গতিতে এগিয়ে যাবে। নচেৎ মাঝ রাস্তায় ইঞ্জিন খারাপ হওয়ার আশঙ্কা তুঙ্গে।
৩. স্ত্রী আপনার সম্পত্তি নন
অনেক পুরুষই স্ত্রীকে নিজের সম্পত্তি বলে মনে করেন। তারা স্ত্রীর সব বিষয়ে নাক গলান। এমনকী তাদের গতিবিধির উপরও জারি করেন বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা। জেনে রাখুন, আপনার এমন ‘মুঘলে আজম’ যুগের আচরণ কিন্তু এখন আর চলবে না। স্ত্রীকে বেঁধে রাখার, তাদের নিয়ন্ত্রণ করার যুগ কিন্তু পেরিয়ে গিয়েছে। তাই এখনকার নারীদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করলে তিনি সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে একবিন্দুও সময় নষ্ট করবেন না। সুতরাং যত শিগগির সম্ভব এই ধরনের বদবুদ্ধি মাথা থেকে দূর করে দিন।
৪. আমিত্বই সংসারকে শেষ করে দেয়
আজকালকার দিনে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে চাইলে নিজের ঢাক নিজেকেই পেটাতে হবে। নইলে পাত্তা পাওয়া তো দূর, কেউ আপনাকে পুছেও দেখবেন না। তবে সব জায়গায় আমি, আমি করে ওঠাটা ঠিক নয়। বিশেষত, স্ত্রীর সামনে যদি সারাক্ষণ নিজের আমিত্বকে তুলে ধরার চেষ্টা চালান, তাহলে সে গুড়ে বালি দিন। কারণ এমনটা করলে অন্যদিকের মানুষটি হীনমন্যতায় ভুগতে পারেন। আর সেই কারণেই তিনি আপনার থেকে আলোকবর্ষ দূরে চলে গেলেও যেতে পারেন। তাই স্ত্রীর থেকে সবসময় ক্রেডিট ছিনিয়ে নেওয়ার অভ্যাসটা এবার ছাড়ুন। বরং সংসারের ভালো চাইলে তাঁকে ছোট ছোট কাজের জন্য বাহবা দিন। এতেই দেখবেন স্ত্রীর মনে আপনার জন্য ভালোবাসা উথলে পড়বে।
৫. সবকিছুতেই বাপের বাড়ির দোষ
কিছু পুরুষ সব বিষয়েই স্ত্রীর বাবা-মাকে দোষ দেন। তাদের নিয়ে যা নয় তাই কথা বলেন। আর এই ধরনের কথা সরাসরি গিয়ে স্ত্রীর বুকে আঘাত করে। ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায় তার হৃদয়। আর এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটতে থাকলে তিনি স্বামীকে ডিভোর্স দেওয়ার সংকল্প করে ফেলেন। তখন শত বুঝিয়েও তার ভালোবাসা আর ফেরত পাওয়া যায় না। তাই আপনার মধ্যেও এই বদভ্যাস থাকলে দ্রুত শুধরে যান।
এজেড

