শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

তারেক-জোবায়দার মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আদালতে হট্টগোল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২৩, ১১:১৮ পিএম

শেয়ার করুন:

তারেক-জোবায়দার মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আদালতে হট্টগোল
ফাইল ছবি।

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আদালতের এজলাস কক্ষে আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের ধাওয়া দিয়ে এজলাস থেকে বের করে দেয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বেশ কয়েক জন বিএনপি সমর্থিত আইনজীবী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (৩০ মে) দুপুর ২টার পর ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়। এ সময় বিচারক এজলাস কক্ষ ছেড়ে চলে যান।


বিজ্ঞাপন


এ ব্যাপারে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ঢাকা বার ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, গতকাল সোমবার (২৯ মে) আমরা আদালতের বিচারককে অনুরোধ করেছিলাম এ মামলায় প্রতিদিন সাক্ষ্যগ্রহণ করা হলে বিষয়টি নিয়ে মানুষের মধ্যে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হবে। তিনি বলেছিলেন, মঙ্গলবার আমাদের বক্তব্য শুনবেন। পরে আজ মঙ্গলবার দুপুর ২টায় আমরা আদালতে এসে এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিপি, দুদকের আইনজীবী এবং আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা আদালতের মধ্যেই আমাদের ওপর অতর্কিত আক্রমণ করে।

>> আরও পড়ুন: নিপুণ রায়ের তিন মাসের আগাম জামিন

বিএনপি সমর্থিত এই আইনজীবীর অভিযোগ, তাদের আক্রমণে প্রায় অর্ধশত আইনজীবী আহত হন। একই সময় তিনজন নারী আইনজীবীর শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। এছাড়াও সরকার সমর্থিত আইনজীবীদের হামলায় গুরুতর আহত হন আইনজীবী আবদুল খালেক মিলন, জহিরুল ইসলাম মুকুল ও আনোয়ার হোসেন। তাদের কাকরাইল ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এছাড়া জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ঢাকা বার ইউনিটের আহ্বায়ক মাসুদ আহমেদ তালুকদার অভিযোগ করেন, পিপি, আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের আক্রমণে আইনজীবী আবদুল খালেক মিলন, জহিরুল ইসলাম মুকুলসহ প্রায় অর্ধশত বিএনপি সমর্থিত আইনজীবী আহত হয়েছেন।


বিজ্ঞাপন


বিষয়টিতে দুদকের পিপি মোশাররফ হোসেন কাজল অভিযোগ করেছেন, তারা (বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা) আদালতে বিশৃঙ্খলা করেছে। আদালত দখল করতে চেয়েছে। এজলাসে হট্টগোল করেছে। আমি আমার স্থানেই বসে ছিলাম। আইনজীবী আহত হওয়ার বিষয়ে কিছু জানি না। মঙ্গলবার দুজন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল বুধবার আবার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে।

>> আরও পড়ুন: তারেক-জোবায়দার বিরুদ্ধে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তার সাক্ষ্য

এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিচারক এজলাসে উঠে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন। পরে সাক্ষ্য দিতে এমতিন অ্যান্ড কোম্পানির চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট এ কে আব্দুল মতিন আদালতে উপস্থিত হন। এরপর তিনিসহ মোট দুইজন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়।

আইনজীবীরা জানিয়েছেন, সাক্ষ্যগ্রহণের সময় এজলাসের ভেতরে ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে হট্টগোলের সূত্রপাত হয়। ওই সময় আদালতের বাইরে অতিরিক্ত পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। পরে আদালতের বাইরে অবস্থান নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা ঢাকা বার ভবনের সামনে এসে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।

সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, জোবায়দা রহমান ও তাঁর মা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। পরের বছর তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। পরে তারেক রহমানের শাশুড়ি মারা যাওয়ায় এই মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

>> আরও পড়ুন: ২২৭ কোটির ক্ষতিপূরণের মামলায় রবিকে জবাব দিতেই হচ্ছে

২০২২ সালের ১ নভেম্বর অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। বর্তমানে তারা পলাতক।

গত ১৩ এপ্রিল তারেক-জোবায়দার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২১ মে মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক জহিরুল হুদার সাক্ষ্যের মাধ্যমে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। পরে গত ২৫ মে এ মামলায় সাক্ষ্য দেন- জব্দ তালিকার সাক্ষী এমরান আলী শিকদার ও সৈয়দ আজাদ ইকবাল। তারা ঘটনার সময় দৈনিক দিনকালে চাকরি করতেন। এরপর গত ২৯ মে তারেক-জোবায়দার বিরুদ্ধে তিন ব্যাংক কর্মকর্তা সাক্ষ্য দেন। ওই তিন ব্যাংক কর্মকর্তা হলেন- এস এম মুসা করিম, ওবায়দুর রশিদ খান ও ইমরান আহমেদ। তারা সবাই এবি ব্যাংকের কর্মকর্তা। এ নিয়ে এ মামলায় মোট ৫৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে বলে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল জানিয়েছেন।

এআইএম/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর