তিন হাজার ১৯০টি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে ১৩৫ মিনিটে। অর্থাৎ প্রতি মিনিটে মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে ২৪টি। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের এমন কার্যক্রমের প্রশংসা করছেন সবাই। মামলাজট কমাতে এমন কার্যক্রম আদালতের অন্য বেঞ্চকেও উদ্বুদ্ধ করবে বলে মত দিয়েছেন অনেকেই।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন কার্যক্রমে বিচার বিভাগের জন্য বড় কিছু পাওয়ার নেই। শুধু জটের তালিকা থেকে কিছু মামলা কমবে। তারপরও এ ধরনের আদেশ ইতিবাচক সাড়া ফেলবে।
বিজ্ঞাপন
জানতে চাইলে হিউম্যান রাইডস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মনজিল মোরসেদ ঢাকা মেইলকে বলেন, সারাদেশে মামলাজট বাড়ছেই। ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ বিচারপ্রার্থীরা। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের মামলা নিষ্পত্তির কথা শুনেছি। এমন নিষ্পত্তির আদেশ হরহামেশা দেখা যায়। কারণ এসব মামলা অনেক দিন ধরে জমা ছিল। খেয়াল করলে দেখা যাবে, এসব পিটিশনে অনেকগুলো মামলা একত্রিত ছিল। একটি আদেশ দিয়ে সেগুলো নিষ্পত্তি করে দেওয়া হয়েছে। এজন্য এ ধরনের আদেশ মামলা নিষ্পত্তিতে বড় মাইলফলক- এটা বলা যায় না। শুধু কার্যতালিকা থেকে কিছু মামলা কমে গেল।
তবে রাষ্ট্রের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত মনে করেন, এতগুলো মামলা সোয়া দুই ঘণ্টায় নিষ্পত্তি হয়েছে- এটি প্রশংসার দাবি রাখে। এতে তিন হাজারের বেশি সাধারণ বিচারপ্রার্থী ভোগান্তি থেকে রেহাই পেয়েছেন। একটি কমন অর্ডারের মাধ্যমে এসব মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে। আর এসব মামলা নিষ্পত্তির জন্য ট্রায়ালের কিছু ছিল না। তারপরও তো এগুলো নিষ্পত্তি হলো। ইতিবাচক বিষয়ের প্রশংসা করলে আদালতের কাজের গতি আরও বাড়বে।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর বিশেষ উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) দুপুর ২টা থেকে বিকেল সোয়া ৪টা পর্যন্ত ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৮ ধারা মোতাবেক ২০২১ সাল পর্যন্ত এসব ফৌজদারি বিবিধ মামলার শুনানি ও নিষ্পত্তি করেন এসব বেঞ্চ।
মামলা নিষ্পত্তির জন্য প্রধান বিচারপতির এমন উদ্যোগ চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার সাইফুর রহমান।
বিজ্ঞাপন
এর আগে ৯টি বিশেষ বেঞ্চ গঠন করে ২৮ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদেশ প্রকাশ করা হয়।
তিন হাজার ১৯০টি মামলার মধ্যে বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি কে এম ইমরুল কায়েশের বেঞ্চে নিষ্পত্তি হয়েছে ২৪৯টি, বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের বেঞ্চে ৪৯৪টি, বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি মো. শওকত আলী চৌধুরীর বেঞ্চে ৪৬৯টি, বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের বেঞ্চে ৪৯১টি, বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের বেঞ্চে ২৯৭টি, বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের বেঞ্চে ৪৮৯টি, বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের বেঞ্চে ৯৯টি, বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের বেঞ্চে ৩০০টি এবং বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের বেঞ্চে ৩০২টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। ৯ বিশেষ বেঞ্চে মোট নিষ্পত্তি হয়েছে ৩ হাজার ১৯০টি পুরাতন মামলা।
এআইএম/এমআর

