শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

শব্দ দূষণে হাইকোর্টের বিচার কাজে বিঘ্ন

আমিনুল ইসলাম মল্লিক
প্রকাশিত: ০২ জানুয়ারি ২০২৩, ০৬:১১ পিএম

শেয়ার করুন:

শব্দ দূষণে হাইকোর্টের বিচার কাজে বিঘ্ন

উচ্চ শব্দ দূষণে হাইকোর্টের বিচার কাজ বেশ কিছুদিন ধরে বিঘ্ন ঘটছে। কোর্ট চলার সময় পাশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের সমাবেশ চলছিল।

সোমবার (২ জানুয়ারি) হাইকোর্ট বিভাগের বিজয় ৭১-এর একটি বেঞ্চে বিচার কাজ দীর্ঘ সময় বন্ধ ছিল। এক পর্যায়ে বিষয়টি সমাধানের জন্য সুপ্রিম কোর্টের রেজিষ্ট্রার জেনারেলকে তলব করেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা পরেও রেজিষ্ট্রার জেনারেল সংশ্লিষ্ট কোর্টে উপস্থিত হননি। এজন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওই বেঞ্চের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল।


বিজ্ঞাপন


তিনি বলেন, দশ মিনিট সময়ের মধ্যে রেজিষ্ট্রার জেনারেলকে আসতে বলা হলেও দুই ঘণ্টা পার কিন্তু তিনি এখন আসেননি। এটা দুঃখজনক। আমি দেখেছি ২০১০ সালে, রেজিষ্ট্রার জেনারেলকে ডাকা মাত্রই চলে আসতেন। এখন এটার ব্যত্যয় দেখা যাচ্ছে। আমার পাওয়ার আছে, আমি চাইলে রেজিষ্ট্রারকে ৬ মাসের জেল দিতে পারি। কিন্তু এরকম আদেশ দিলে বিষয়টি আপনারা অন্যভাবে নেবেন। কার পাওয়ার নিয়ে রেজিষ্ট্রার জেনারেল এরকম করছেন জানি না। কেউ কারও কমান্ড না শুনলে, নিজে কাউকে সম্মান না দিলে একদিন তাকেও অসম্মানিত হতে হবে।

এরপর বিচারপতি উপস্থিত সিনিয়র আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনের সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করেন। বিচারপতি বলেন, আপনি বিজ্ঞ সিনিয়র আইনজীবী কোর্ট চলাকালে পরিবেশ কেমন থাকা উচিত বলুন। তখন ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন আদালতকে বলেন, বিচার কাজে নিরবিচ্ছিন্ন শব্দ দূষণ মুক্ত হওয়া প্রয়োজন। তখন বিচারপতি বলেন, এভাবে হলে আমরা কিভাবে বিচার করব? কোর্টের পাশে বিচার কাজ চলার সময় কিভাবে উচ্চ শব্দে সভা-সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হলো? এটি তারা কি খেয়াল করল না? যদিও সভা-সমাবেশ করার অধিকার সবারই আছে। তারা কোর্ট ছুটির দিন কোর্ট সময়ের পরে এসব সভা-সমাবেশ করতে পারে। যারা সভা-সমাবেশ করছে, আমি বলব তাদের কোনো দোষ নেই। তারা তো অনুমতি নিয়ে করছেন। যারা অনুমতি দিলেন তাদেরকে এ বিষয়টি ভাবা উচিত ছিল। স্কুল কলেজ হাসপাতালের পাশে যা ইচ্ছে তাই করা যায় না। আইনে এসব এলাকায় উচ্চ শব্দের হর্ণ দেওয়াও নিষেধ। অথচ এখানে কোর্ট চলার পর থেকে উচ্চ শব্দ শুনছি।

এ সময় ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন আদালতকে বলেন, আমি বিষয়টি জানলাম। আপনি যা বলছেন তা সঠিক বলছেন। আমি নিজেও শুনানি করতে গিয়ে বিরক্তিবোধ করছি। এ বিষয়ে আমি উপর মহলকে অবহিত করব। যেন বিষয়টি দ্রুত সমাধান হয়।

ওই আদালতে শুনানি করতে যাওয়া আইনজীবী ফারুক হোসেন বলেন, আমার একটি মামলা নিয়ে এই কোর্টে এসেছিলাম। বিচারপতি যখন একটি মামলা শুনানির জন্য প্রস্তুতি নিলেন এমন সময় প্রচণ্ড শব্দ আসে কোর্টের ভেতরে। দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়, এরপরেও উচ্চ শব্দ আসে সবার কানে। আদালত তখন ক্ষোভ প্রকাশ করেন। রেজিস্ট্রার জেনারেলকে তলব করেন। আদালতে বিচার কাজ চলার সময় আশপাশে এভাবে সভা-সমাবেশ চলতে পারে না। বেশ কিছুদিন ধরে এভাবে সভা-সমাবেশের শব্দের কারণে বিচার কাজ বিঘ্ন হচ্ছে।


বিজ্ঞাপন


এআইএম/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর