শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

বিচারপতির বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৫:৫৮ পিএম

শেয়ার করুন:

বিচারপতির বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) উপ-নির্বাচনে একটি রাজনৈতিক মত বিনিময় সভায় অংশ নেওয়ায় প্রধান বিচারপতির কাছে এ অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির ৬ আইনজীবী নেতা এ অভিযোগ দাখিল করেন। প্রধান বিচারপতির ব্যক্তিগত সহকারী লিখিত অভিযোগটি গ্রহণ করেছেন।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিচারপতির স্ত্রী ও ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারজানা রাব্বী বুবলী। তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক সভা নয়, নিজ বাড়িতে তার বাবা ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার দোয়া মাহফিলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন অংশ নিয়েছিলেন।  

এদিকে ওই আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন গত ১৫ সেপ্টেম্বর তার ফেসবুক পেজে বিচারপতির সঙ্গে থাকা ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনে নৌকা মার্কার বিজয়কে সফল করার লক্ষ্যে ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারজানা রাব্বী বুবলীর আহ্বানে ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের মতবিনিময়।’

প্রধান বিচারপতির কাছে দাখিল করা লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট বাংলাদেশের মানুষের বিচার পাওয়ার সর্বশেষ আশ্রয়স্থল। ধর্ম, বর্ণ, দলমত নির্বিশেষে এদেশের সব মানুষ তাদের বিচার পাওয়ার আশায় এবং সাংবিধানিক সংকটে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে থাকেন। আদালত তার সততা, নিরপেক্ষতা, প্রজ্ঞা ও আইনের আলোকে দেশের মানুষের জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত করে থাকেন। এদেশের মানুষ এখনো এটাই বিশ্বাস করে। 


বিজ্ঞাপন


একজন মাননীয় বিচারপতি যখন বিচারিক দায়িত্ব পালন করেন তখন তার ধর্মীয়, রাজনৈতিক বা অন্য সব পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে নিরপেক্ষ বিচার করে থাকেন। আইনের আলোকে সুষ্ঠু বিচার করা যেমন জরুরি তেমনি সাধারণ মানুষের মধ্যে ন্যায় বিচার পাওয়া যাবে, নিরপেক্ষ বিচার পাওয়া যাবে, এই বিশ্বাস থাকাটাও জরুরি। বিচার বিভাগের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস ধরে রাখার আবশ্যকতায় সিভিল আপিল নং ০৬/২০১৭ বাংলাদেশ সরকার এবং অন্যান্য বনাম  অ্যাভোকেট আসাদুজ্জামান সিদ্দিকী এবং অন্যান্য মামলায় বিচারপতিদের জন্য আচরনবিধি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। 

সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, মিডিয়ায় ও ভিডিও থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায় মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকার আসন্ন জাতীয় সংসদ উপ-নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর নির্বাচনী মত বিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন। ওই মতবিনিময় সভায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা ও প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন এবং মাইক হাতে মাননীয় বিচারপতি মহোদয়কে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। 

ওই মত বিনিময় সভায় উপস্থিত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাননীয় বিচারপতি সাহেবকে তার স্থানীয় অভিভাবক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ওই সভাকে রাজনৈতিক দলের মত বিনিময় সভা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। একটি রাজনৈতিক দলের মত বিনিময় সভায় উপস্থিত হয়ে তিনি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক নির্ধারিত নিম্নলিখিত আচরণ বিধি ভঙ্গ করেছেন।

আমরা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মনে করি ওই ঘটনার মাধ্যমে বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকার সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে আচরনবিধি লঙ্ঘন করেছেন এবং সুপ্রিম কোর্টের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছেন। তাই এ বিষয়ে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। 

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ কামাল হোসেন, সিনিয়র সহ সম্পাদক মাহফুজ বিন ইউসুফ, সহ সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান, কার্যনির্বাহী সদস্য গোলাম আকতার জাকির, মনজুরুল আলম সুজন ও কামরুল ইসলাম চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। তারা বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল থেকে নির্বাচিত।

মরহুম ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার মেয়ের জামাতা হলেন বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার।
 
এআইএম/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর