শনিবার, ৪ মে, ২০২৪, ঢাকা

এরপর কেউ খোঁজ নেয়নি আমার, আক্ষেপ জজ মিয়ার

আমিনুল ইসলাম মল্লিক
প্রকাশিত: ২১ আগস্ট ২০২২, ০৯:৫৩ এএম

শেয়ার করুন:

এরপর কেউ খোঁজ নেয়নি আমার, আক্ষেপ জজ মিয়ার

সাড়ে তিন বছর কনডেম সেলে ছিলাম। যেখানে মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের রাখা হয় দিনের পর দিন। আমি কোনো অন্যায় না করেই এমন কষ্টের দিন কাটিয়েছি। নিজের ক্ষুদ্র ব্যবসা ছিল, সেগুলোও হারিয়েছি। গুলিস্তানে ফলের দোকান ছিল, সেটিও বন্ধ হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দুই লাখ টাকা দিয়েছিল, এরপর কেউ খোঁজ নেয়নি আমার। এখন এমন অবস্থা হয়েছে, কোনোমতে খেয়ে বেঁচে আছি।বলছিলেন ২১ আগষ্ট গ্রেনেট হামলা মামলায় ভুক্তভোগী মো. জালাল ওরফে জজ মিয়া।

এমন বাস্তবতায় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ষড়যন্ত্রের শিকার মো. জালাল ওরফে জজ মিয়া ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন।


বিজ্ঞাপন


গত ১১ আগষ্ট জজ মিয়ার পক্ষে ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির ও মোহাম্মদ কাওসার এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। তবে এই আইন তার পক্ষে বিনা ফিতে নোটিশ পাঠিয়েছেন বলে জানান জজ মিয়া। 

তিনি বলেন, জেল থেকে বের হওয়ার পর কোনো ক্ষতিপূরণ পাইনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ২ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। সেই টাকা দিয়ে মায়ের চিকৎসা করাই। তারপরেও মাকে বাঁচাতে পারিনি। অনেক দিন বেকার, সবাই শুধু আশা দেয় কেউ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে না।

তবে পরলোকগত স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মাদ নাসিম তাকে একটি চাকরি দিয়েছিলেন বলে জানান জজ মিয়া। সেই চাকরি পরিস্থিতির কারণে ছেড়ে দেন জজ মিয়া। এরপর থেকে কেউ তাকে চাকরি দেয়নি। সহযোগিতাও করেনি। 

জীবনের সোনালী সময় অন্ধকার কারাগারে থেকে মানসিক ও শারীরিকভাবে তার যে খেসারত দিতে হয়েছে তার জন্য কোনো ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। এই লোকসান এড়াইবার ব্যবস্থা হিসাবে ১০ কোটি টাকা চেয়ে নোটিশ দিয়েছেন তিনি। তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক আইজিপি খোদাবক্স চৌধুরী, সাবেক এএসপি আব্দুর রশিদ, মুন্সি আতিকুর রহমান, সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিনসহ জড়িতদের সকল সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে তা থেকে এই ক্ষতিপূরণের টাকা আদায় করে দিতে বলা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


আগামী ১৫ দিনের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, ঢাকার ডিসি এবং মতিঝিল ও সেনবাগ থানার ওসিকে এই ক্ষতিপূরণ আদায়ের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে। নোটিশের জবাব না পেলে তিনি পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নিবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে জজ মিয়া বলেন, পরিবারে আমার স্ত্রী, এক মেয়ে ও ছোট বোন আছে। কারাগারে থাকার কারণে কেউ আমাদের সঙ্গে আত্মীয়তা করতে চায় না। আমাদের সঙ্গে আত্মীয়তা করে বিপদে পড়বে, এমন আশংকা করে অনেকে।  

আক্ষেপ করে জজ মিয়া বলেন, আমার পরিবার এখন চলে কিভাবে, কেউ কি আমাদের খোঁজ খবর নেয়? কেউ নেয় না। এজন্য আমি ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছি। 

এখনো আতঙ্কে ভোগেন উল্লেখ করে জজ মিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সাড়ে ১৩ বছর চলছে। কিন্তু আমার ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমি কেমন আছি এটার আর কেউ খোঁজ নেয় না।

এআইএম/ একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর