শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

ওসির বিরুদ্ধে রিট করে শংকায় ব্যারিস্টার সুমন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০ আগস্ট ২০২২, ০৩:৪৩ পিএম

শেয়ার করুন:

ওসির বিরুদ্ধে রিট করে শংকায় ব্যারিস্টার সুমন

রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলামের আটতলা বাড়িসহ বিপুল সম্পদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি দখলের অভিযোগের বিষয়ে রিট করে শংকার কথা জানালেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। 

বুধবার (১০ আগষ্ট) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন শংকার কথা জানান।


বিজ্ঞাপন


তিনি বলেন, এই রকম একজন ওসির বিরুদ্ধে ভয়ে কেউই মামলা করবে না। এই ওসির বিরুদ্ধে মামলা করতে সারাদেশে এমন কোনো বাদী খুঁজে পাওয়া যাবে না। হয়তো তার বিরুদ্ধে মামলায় আইনজীবী পাওয়া যাবে, কিন্তু বাদী পাওয়া যাবে না। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আজকে আমার রিট শুনানির সময় এক আইনজীবী ওসির পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন। দাঁড়িয়ে তিনি বলার চেষ্টা করেছেন যে ওসির বাড়িটি তাদেন সব ভাইবোনদের করা। 

তিনি বলেন, রিট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তার (ওসির) আইনজীবী দাঁড়িয়ে গেছেন। তাহলে চিন্তা করেন ওসি কত বড় শক্তিশালী। কতবড় সিন্ডিকেটের লোক। এ রিটে এখনো পর্যন্ত কোনো শুনানির পর্যায় আসে নাই। তার আগেই ওসির পক্ষে আদালতে আইনজীবী? মানে কী। মানে হচ্ছে তিনি অনেক শক্তিশালী। 

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ওসি সাহেব যখন দারোগা ছিলেন তখনই তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধার জমি দখলে নিয়েছেন।


বিজ্ঞাপন


আজকে এ রিটের শুনানির সময় ‘কড়া’ মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন,সবকিছুর জবাবদিহিতা থাকতে হবে।

বুধবার (১০ আগস্ট) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রিটের শুনানি হয়।

হাইকোর্ট বলেছেন, এভাবে দুর্নীতি-অনিয়ম চলতে পারে না, চলতে দেওয়া যায় না। সবকিছুর জবাবদিহিতা থাকতে হবে। 

এদিন সকালে এ বিষয়ে রিট করেন সুমন।

পরে আদালত  ব্যারিস্টার সুমনকে উদ্দেশ করে বলেন, রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলামের আটতলা বাড়িসহ বিপুল সম্পদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি দখলের অভিযোগের বিষয়ে দুদকে একটি আবেদন করুন। দুদক যদি ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমরা দেখব। এরপর আদালত রিট শুনানি আগামী ২১ আগস্ট পর্যন্ত মুলতবি করেন।

এর আগে গত ৮ আগষ্ট রাজধানীতে আটতলা বাড়ি-প্লটসহ বিপুল সম্পদের মালিক ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলামের বিপুল সম্পদের বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করেন তিনি। 

গত ৫ আগস্ট একটি জাতীয় পত্রিকায় এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। 

ওইদিন আদালত থেকে বেরিয়ে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানান ব্যারিস্টার সুমন। তিনি বলেন, একজন পুলিশ কর্মকর্তার এত সম্পদ হয় কীভাবে? তার বেতন ভাতা এত বেশি না যে তিনি এই পরিমাণ পরিমাণ সম্পদের মালিক হবেন। বুঝা যাচ্ছে— তিনি অসাধু ইনকাম করেছেন। তার এসব সম্পদ দেখে নৈতিকতা সম্পন্ন ব্যক্তিরাও দুর্নীতিবাজ হয়ে যাবেন।

এর আগে গত ৫ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ঢাকায় আটতলা বাড়ি করেছেন। বানাচ্ছেন আরেকটি ডুপ্লেক্স বাড়ি। ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জে তার রয়েছে চারটি প্লট। বাড়ি ও প্লটসহ এই বিপুল সম্পদের মালিক ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম। রাজধানীর মোহাম্মদপুর হাউজিং সোসাইটিতে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি দখলেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।’

‘সরকারি একটি সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে ওসি মনিরুলের এসব অবৈধ সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে পুলিশ সূত্র বলছে, যতটুকু তথ্য পাওয়া গেছে, তার সম্পদের পরিমাণ এর চেয়ে অনেক বেশি।’

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘পুলিশের একজন পরিদর্শক হয়ে ওসি মনিরুল কীভাবে এত সম্পদের মালিক হয়েছেন, তা নিয়ে পুলিশ বিভাগে আলোচনা চলছে। বর্তমানে তিনি নবম গ্রেডে ২২ হাজার টাকা স্কেলে সাকল্যে সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা বেতন পান। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি এই সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ধারণা করছেন।’

এআইএম/ একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর