শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

ভোগান্তির পাশাপাশি কলহ কমবে পারিবারিক আদালত আইনে

আমিনুল ইসলাম মল্লিক
প্রকাশিত: ০৫ জুলাই ২০২২, ০৭:০৬ এএম

শেয়ার করুন:

ভোগান্তির পাশাপাশি কলহ কমবে পারিবারিক আদালত আইনে
ফাইল ছবি

জেলা পর্যায়ে সব বিচারকের পারিবারিক কলহের মামলা বিচারের সুযোগ রেখে নতুন ‘পারিবারিক আদালত আইন-২০২২’ এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। একই সঙ্গে নতুন এই আইনে মামলা দায়েরের ফি বাড়িয়ে ৫০ থেকে ২০০ টাকা করা হয়েছে। এতে দ্রুত সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি হবে বলে মনে করছেন বিশিষ্ট আইনজীবীরা।   

আইনজীবীদের মতে— নতুন এই আইন করে মানুষের সুবিচার নিশ্চিত করার মাধ্যমে সরকার এক ধাপ এগিয়ে গিয়েছে। আদালতে মামলার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই। আর মামলা জট কমাতে ও ভুক্তভোগীকে সুবিধা দিতে এ ধরনের আইন যুগোপযোগী। 


বিজ্ঞাপন


সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এ কে এম ফয়েজ ঢাকা মেইলকে বলেন, সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত যুগোপযোগী। এতে মামলায় ভুক্তভোগীরা শতভাগ সুবিধা পাবেন। মামলা জটও কমে যাবে। 

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী জেসমিন সুলতানা ঢাকা মেইলকে বলেন, সরকারের এই সিদ্ধান্ত খুবই সময়োপযোগী। কারণ প্রত্যেক জেলায় একটি করে পারিবারিক কোর্ট ছিল, সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে সরকার। পারিবারিক মামলায় বিচারকের সংখ্যা বা আদালতের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এতে সুবিধা পাবেন ভুক্তভোগীরা। 

আপিল বিভাগের আইনজীবী আরও বলেন, আমরা প্র্যাকটিস করতে গিয়ে দেখেছি প্রত্যেক জেলায় একটি করে আদালত ছিল। যেখানে সবাই মামলা নিয়ে যেত। পারিবারিক মামলার পাশাপাশি এই আদালতে অন্যান্য মামলার চাপও থাকতো। কাজেই ভুক্তভোগীরা অল্প সময়ে বিচার পেত না। মামলার দীর্ঘ সূত্রিতা বেড়ে যেত। কিন্তু সরকার এ ধরনের আইন করে সবার জন্য উপকার করেছেন। সরকারের নতুন এই আইন মাইলফলক হয়ে থাকবে। 

এর আগে গতকাল শনিবার (৩ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইন ও বিচার বিভাগের উপস্থাপন করা আইনের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। 


বিজ্ঞাপন


এ সময় গণভবন প্রধানমন্ত্রী থেকে এবং মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান। 

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আগের আইনটি সামরিক শাসনামলের। ১৯৮৫ সালে একটি ফ্যামিলি কোর্ট অর্ডিন্যান্স হয়, সেই অর্ডিন্যান্সে পারিবারিক বিষয়গুলো দাম্পত্য কলহ, তালাক, ম্যারিজ রেজিস্ট্রেশন, শিশুদের ভরণপোষণ- এ সংক্রান্ত বিষয়গুলো ছিল। 

এর আগে এ বিষয়গুলো ফৌজদারি কার্যবিধির ৪(৮৮)-তে বিবেচ্য হতো। হাইকোর্টের বিধি-বিধান অনুযায়ী এটিকে (সামরিক শাসনামলের অধ্যাদেশ) আইনে পরিণত করতে হবে, তাই এ আইনের খসড়াটি নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব। 

সচিব বলেন, আগে যেটা ছিল মোটামুটি সেটাই আছে। এখানে ৩১টি ধারা আছে। বিবাহ বিচ্ছেদ, দম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধার, দেনমোহর, ভরণপোষণ এবং শিশু সন্তানদের অভিভাবকত্ব ও তত্ত্বাবধান সংক্রান্ত বিষয়গুলো এ আদালত বিবেচনায় নেবে।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, একটাই মূল পরিবর্তন আনা হয়েছে। সেটা হলো- আগে ছিল যে আদালতে রায় হবে সেটার আপিল কর্তৃপক্ষ ছিলেন জেলা জজ। এখান সংশোধন এনে বলা হচ্ছে, জেলাপর্যায়ে আরও জজ আছেন, নারী-শিশু বা শ্রম আদালত। শুধু জেলা জজ বললে ওনার ওপর একটু বেশি চাপ পড়ে যায়। সরকার যদি মনে করে কোনো জেলাতে আপিলের জন্য অতিরিক্ত মামলা আছে, সেক্ষেত্রে জেলা জজপর্যায়ের অন্যান্য যে জজরা রয়েছেন, তাদেরকেও আপিল আদালত হিসেবে বিবেচনা করা যাবে।

এআইএম/এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর