জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনের সময় ময়মনসিংহের গৌরীপুরে পুলিশের হামলায় তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার তদন্ত শেষ করতে দুই মাস সময় বেঁধে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন আগামী ২৭ নভেম্বরের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) মামলাটির শুনানি হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২–এ। বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক বেঞ্চ সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে এই আদেশ দেন। শুনানিতে প্রসিকিউশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সাইমুম রেজা তালুকদার, ফারুক আহাম্মদ এবং সহিদুল ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
মামলার এজাহার অনুযায়ী, গত জুলাই মাসে সারা দেশে চলা গণআন্দোলনের মধ্যে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় একটি বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হন এবং আহত হন বহু ছাত্র ও সাধারণ মানুষ। ঘটনায় গৌরীপুর থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) শফিকুল আলম এবং সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) দেলোয়ার হোসাইনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।
এদিন সকালে তাদেরকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। প্রসিকিউশন পক্ষ জানায়, তদন্ত এখনও চলমান রয়েছে এবং ঘটনার পূর্ণাঙ্গ চিত্র ও দায়ীদের ভূমিকা নির্ধারণে আরও সময় প্রয়োজন। আদালত সেই আবেদনে সম্মতি জানিয়ে দুই মাস সময় মঞ্জুর করেন।
গুরুত্বপূর্ণ এই মামলায় অভিযুক্তরা সরাসরি রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সদস্য হওয়ায় বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বলে বিবেচিত হচ্ছে। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী ধাপে অভিযোগ গঠন, সাক্ষ্যগ্রহণ এবং বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হবে।
নিহতদের পরিবার ও আন্দোলনকারীদের ভাষ্য অনুযায়ী, ওইদিন পুলিশ কোনো উসকানি ছাড়াই নির্বিচারে গুলি চালায়। এই ঘটনায় দায়ীদের বিচারের দাবিতে তখন থেকেই আন্দোলন চলছে।
বিজ্ঞাপন
ট্রাইব্যুনাল মামলাটিকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে তদন্ত শুরু করে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনের আওতায় সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রয়েছে।
এআইএম/এইউ

