শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা: রায় দেখে রিভিউয়ের সিদ্ধান্ত

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৪২ পিএম

শেয়ার করুন:

21 august
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার পরের কয়েকটি চিত্র। ছবি- সংগৃহীত।

বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সব আসামির খালাসের রায় বহাল রেখে আপিল বিভাগ যে রায় দিয়েছেন সেটি রিভিউ করা হবে কি না, তা পূর্ণাঙ্গ রায় দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে এ কথা জানান অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল জব্বার ভূঁইয়া।


বিজ্ঞাপন


তিনি বলেন, ‘আজকে হাইকোর্টের আপিল বিভাগ যে রায় দিয়েছেন, সেটির পূর্ণাঙ্গ কপি দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নেব রিভিউতে যাবো কি না। যদি রিভিউ করার মতো যথেষ্ট গ্রাউন্ডস থাকে, তাহলে রাষ্ট্র রিভিউতে যাবে। কারণ এরপর আর কিছু নেই।’

এর আগে সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ মামলার অন্যতম আসামি তারেক রহমান ও লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাস বহাল রেখে রায় দেন।

গত বছরের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রায় দিয়ে মামলার সব আসামিকে খালাস দেন। এরপর চলতি বছরের ১৯ মার্চ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ সুপ্রিম কোর্ট ওই আপিলের চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা হয়। সেদিনের সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের বহু নেতাকর্মী।


বিজ্ঞাপন


TAREQ-BABOR

এই ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। প্রথমে তদন্তে গাফিলতি ও ‘জজ মিয়া নাটক’ তৈরির অভিযোগ ওঠে। পরে ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নতুন করে তদন্ত শুরু হয়। এরপর ২০০৮ সালে ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০১১ সালে আরও ৩০ জনকে যুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ মামলার রায় ঘোষণা করেন। ওই রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন এবং আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বিচারিক আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করেন। পাশাপাশি ডেথ রেফারেন্সের শুনানিও শুরু হয়। দীর্ঘ শুনানির পর ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন এবং সব আসামিকে খালাস দেন। 

হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, এ মামলার তদন্ত সঠিক ও নিরপেক্ষ হয়নি। এ কারণে দণ্ড টেকসই হয়নি এবং সন্দেহের বাইরে আসামিদের দায় প্রমাণ করা যায়নি। আদালত পর্যবেক্ষণে আরও বলেন, এত ভয়াবহ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়াটা দেশের জন্য দুঃখজনক।

হাইকোর্টের দেওয়া এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। পরে আপিল বিভাগে শুনানি হয়। অবশেষে আজ আদালত সেই আপিল খারিজ করে দেন। ফলে হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের রায়ই চূড়ান্তভাবে বহাল থাকল।

এআইএম/এএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর