শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ডাকসু নির্বাচনের আইনি লড়াইয়ে প্রশংসায় আইনজীবী শিশির মনির

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৪২ এএম

শেয়ার করুন:

ডাকসু নির্বাচনের আইনি লড়াইয়ে প্রশংসায় আইনজীবী শিশির মনির
ডাকসু নির্বাচনের আইনি লড়াইয়ে প্রশংসায় আইনজীবী শিশির মনির

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিতের হাইকোর্টের আদেশ চেম্বার আদালতে উল্টে দিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। তার এই তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত, সাহসী পদক্ষেপ ও আইনি দক্ষতাকে আইনাঙ্গনের অনেকে অভিহিত করেছেন ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হিসেবে।

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্ট বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে ডাকসু নির্বাচন ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেন। তবে এই আদেশের পরই শিশির মনির হাতে লেখা আবেদন নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ছুটে যান। দ্রুত যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন আদালতের সামনে। তিনি আদালতকে বোঝাতে সক্ষম হন যে, হাইকোর্টের আদেশে আইনি ব্যত্যয় ঘটেছে।


বিজ্ঞাপন


পরিস্থিতির গুরুত্ব ও সময়ের সংবেদনশীলতা বিবেচনায় মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যেই চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে দেন। ফলে ডাকসু নির্বাচনের পথে আইনি বাধা দূর হয়। এই সাহসী ও সময়োপযোগী পদক্ষেপের জন্য অ্যাডভোকেট শিশির মনিরকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভূতপূর্ব প্রশংসা জানাচ্ছেন আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ।

শিশির মনিরের ভূমিকার প্রশংসা করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আক্কাস চৌধুরী লিখেছেন, আইনজীবী শিশির মনির এই মুহূর্তে উচ্চ আদালতের অন্যতম সেরা আইনজীবী। ডাকসু নির্বাচন বিষয়ক রিট মামলাটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে নিয়োজিত আইনজীবী হিসেবে উনার আপিল বিভাগের চেম্বার জজে দ্রুত আদেশ প্রাপ্তি সত্যিই প্রশংসনীয়।

আবদুল্লাহ আল মামুন নামে একজন লিখেছেন, শিশির মনিরকে যারা গালি দিয়েছো, তারা সরি বলো। শিশির মনির যে একজন ভালো আইনজীবী, তা আবার প্রমাণ করলেন। এভাবে অংসখ্য ফেসবুক ব্যবহারকারী শিশির মনিরের প্রশংসা করে পোস্ট দিয়েছেন।

ফ্যান পেজে দেওয়া এক পোস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় মূখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখেছেন, আজকের হাইকোর্টের রায় উল্টানোর নায়ক অ্যাডভোকেট শিশির মনির। বিকেলের ঘটনাটা একদম টার্নিং পয়েন্ট। হাইকোর্ট ডাকসু স্থগিত করলেই যদি ওইদিন আপিল না হতো, তবে ২ দিনের মধ্যে সিরিয়াল পেতো না। তারপর কোর্ট টানা ১৫ দিনের জন্য বন্ধ! অথচ ডাকসুর ডেট আর মাত্র ৮ দিন পর।


বিজ্ঞাপন


তিনি লিখেন, মানে—গেম ওভার। কিন্তু সেই ক্রুশিয়াল মোমেন্টে শিশির মনির হাতে লিখে, দৌড়ে গিয়ে চেম্বার জজ কোর্টে পিটিশন দিলেন। শেষ মুহূর্তে যুক্তি দেখিয়ে স্থগিতাদেশকে উল্টে দিলেন। ফলাফল! ডাকসু নির্বাচন বেঁচে গেল ষড়যন্ত্রের হাত থেকে। শিশির মনিরকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি লিখেন, Thanks to শিশির মনির— তার তড়িৎ সিদ্ধান্ত আর বুদ্ধিমত্তার জন্যই ডাকসু থেমে যায়নি। 

আরও পড়ুন

শিশির মনিরকে ঢাবির আইনজীবী নিযুক্ত করায় চটেছেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী

আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের ভিপিপ্রার্থী আবিদুল ইসলামকে উদ্দেশ্য করে তিনি লিখেন, ‘এবার আসি কবির কথায়… শোন হে কবি মি/থ্যান্দ্র/নাথ!! তোমার জন্মের আগেই শিশির মনির ঢাবির ছাত্র ছিল, এখন তিনি ঢাবির অ্যালামনাই। বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে তাকে আইনজীবী করবে, তাতে তোমার মাথাব্যথা কেন? আসলেই শিশির মনির সেই কাজটাই করেছেন যেটার জন্য তোমরা মিছিল করছো। শিশির মনিরের উপর খেপলে বাম খেপতে পারে, কিন্তু তোমরা খেপছো কেন ভাই? মানে ঘাপলাটা অন্য জায়গায়! প্রশ্ন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থীকে— তুমি যদি ডাকসু নির্বাচন সময়মতো হোক, এই চাওয়ার পক্ষে থাকো, তাহলে তো খুশি হওয়ার কথা। কিন্তু তুমি উল্টো চিল্লাচ্ছো কেন? এটা কি স্ববিরোধিতা, নাকি সরাসরি বলি—নিরাবুদ্ধিতা?

তিনি আরও লিখেন, মনে রেখো— যে আইনজীবী দ্রুত সিদ্ধান্তে চেম্বার কোর্ট থেকে স্থগিতাদেশ উল্টে দিয়ে ডাকসু নির্বাচন নিশ্চিত করলেন, তার বিরুদ্ধে দাঁত কেলানো মানেই নিজের অর্বাচীনতা প্রমাণ করা। আরে ভাই, নির্বাচনের পক্ষে থাকলে “আইনজীবী কে”— তা কোনো বিষয় না। কাজটাই আসল। মনে পড়ছে তো? আপনাদের নেতা তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ অনেকেই অ্যাডভোকেট শিশির মনিরের ক্লায়েন্ট ছিলেন। তখন তো কোনো সমস্যা ছিল না। এখন হঠাৎ এতো জ্বালা কেন?

এরপর তিনি লিখেন, সত্যিটা হলো— বিনা কারণে চিল্লাচিল্লি করলে নিজের মার্কেটই নষ্ট হয়। “কবি আবীন্দ্রনাথ” আসলে ভেতরে ভেতরে জ্বলে পুড়ছেন, কারণ তাদের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়েছে। স্থগিতাদেশ উঠতেই কবির মুখের হাসি গায়েব। লোডশেডিং-এর মতোই নিখোঁজ!

এর আগে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করে দেওয়া হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। ফলে ডাকসু নির্বাচনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন শিশির মনির।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ঘিরে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে আলোচনায় অংশ নেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। এ সময় তাকে নিয়ে একটি মন্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি খুবই সংযত ও ভদ্র ভাষায় নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন।

টকশোর একপর্যায়ে বলা হয়, ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী শিশির মনিরকে জামায়াত সমর্থিত আইনজীবী বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং প্রশ্ন তুলেছেন—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কেন তিনি মামলার দায়িত্ব পেলেন।

জবাবে অ্যাডভোকেট শিশির মনির বলেন, ‘আমি শুনেছি, অনলাইনে সে এমন মন্তব্য করেছে। সে আমার ছোট ভাইয়ের মতো। হয়তো না বুঝেই বলে ফেলেছে। আমি এটিকে একদমই ব্যক্তিগতভাবে নিইনি। মাইন্ড করিনি। ছোট মানুষের ছোট কথা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, “অনেক সময় না জেনে কিছু বলে ফেলি আমরা। এটাও হয়তো তেমনই কিছু। আমি বিশ্বাস করি, সে ইচ্ছা করে বলেনি। ইনটেনশন থেকে না, কথার কথায় বলে ফেলেছে।

প্রোগ্রামের হোস্ট তাকে প্রশ্ন করেন, তিনি কি ডাকসু নির্বাচনের পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, নাকি আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন?

জবাবে শিশির মনির বলেন, আমি বহু বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষের আইনজীবী হিসেবে কাজ করছি। শুধু ডাকসু না, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলায় আমি লড়েছি। ‘প্রায় সব মামলায়ই আমরা জয় পেয়েছি। তবে এসব তথ্য হয়তো ওই ছোট ভাই জানেন না। না জানার কারণে হয়তো এমন মন্তব্য করেছেন’, যোগ করেন তিনি।  

শিশির মনির বলেন, আমি বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবেই দেখছি। তার মন্তব্যে আমি কোনো বিদ্বেষ খুঁজে পাইনি। বরং একজন নতুন প্রার্থী হিসেবে কিছু বলেছে—এটিকে অভিজ্ঞতার ঘাটতি হিসেবে দেখা উচিত।

এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর