রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

চাঁদাবাজির ১০ লাখ টাকা অপুর সঙ্গে ভাগ করে নেন রিয়াদ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪ আগস্ট ২০২৫, ০১:৪৩ পিএম

শেয়ার করুন:

চাঁদাবাজির মামলায় দোষ স্বীকার করলেন রিয়াদ

সাবেক এমপি শাম্মি আহম্মেদের বাসায় চাঁদাবাজির অভিযোগে গুলশান থানার মামলায় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের বহিষ্কৃত নেতা আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। রিয়াদ জানিয়েছেন, চাঁদাবাজি থেকে পাওয়া ১০ লাখ টাকা অপুর সাথে সমান ভাগে ভাগ করেছেন তিনি।

রোববার (৩ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ’র আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এদিন রিয়াদসহ চার আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এসময় রিয়াদ স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হন।


বিজ্ঞাপন


এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গুলশান থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোখলেছুর রহমান তার জবানবন্দি রেকর্ড করতে আবেদন করেন। এছাড়া অপর তিন আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমানের আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। কারাগারে যাওয়া অন্যরা হলেন মো. ইব্রাহিম হোসেন, সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সাদাব।

তারাও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতা ছিলেন।  ঘটনার পর তাদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া গত ২ আগস্ট অপর আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বর্তমানে তিনি রিমান্ডে রয়েছেন।

জবানবন্দিতে রিয়াদ বলেন, ২৬ জুলাই বিকালে চাঁদার বাকি ৪০ লাখ টাকা আদায় করতে ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, সিয়াম, সাদমানকে ওই বাসায় পাঠাই। আর আমি গুলশান মোড়ে অবস্থান নেই। পুলিশ ফাঁদ পেতে আমাকেও ওই বাসায় যেতে বলে। তখন পুলিশের কথা বিশ্বাস করে ওই বাসায় যাই। তখন পুলিশ এসে টাকাসহ হাতেনাতে আমাদের গ্রেফতার করে। আমি গরিবের ছেলে। টাকার লোভ সামলাতে পারিনি।

গত ২৭ জুলাই আদালত তাদের সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ওই দিন আইনের সংঘাতে জড়িত শিশু মো. আমিনুল ইসলামকে গাজীপুর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। ২৬ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় ভুক্তভোগী সিদ্দিক আবু জাফর বাদী হয়ে গুলশান থানায় চাঁদাবাজির মামলা করেন। এতে তিনি ছয়জনকে আসামি করেন। রিয়াদ ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন কাজী গৌরব অপু, সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব, মো. ইব্রাহিম হোসেন ও আইনের সংঘাতে জড়িত শিশু মো. আমিনুল ইসলাম।


বিজ্ঞাপন


মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৭ জুলাই সকাল ১০টায় আসামি আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ, কাজী গৌরব অপু গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক এমপি শাম্মি আহম্মেদের বাসায় যান। তখন তারা হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করেন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যায়িত করে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করানোর হুমকি দেন এবং টাকা চেয়ে চাপ দিতে থাকেন তারা। একপর্যায়ে মামলার বাদী সিদ্দিক আবু জাফর বাধ্য হয়ে নিজের কাছে থাকা নগদ পাঁচ লাখ টাকা ও ভাইয়ের কাছে থেকে নিয়ে আরও পাঁচ লাখ টাকা প্রদান করেন। এই ঘটনার পর গত ১৯ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে আসামি রিয়াদ ও অপু বাদীর বাসায় প্রবেশ করে তার ফ্ল্যাটের দরজায় সজোরে ধাক্কা মারেন। বিষয়টি গুলশান থানা পুলিশকে মোবাইল ফোনে অবহিত করলে আসামিরা চলে যায়। পরবর্তীতে ২৬ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টায় আসামি রিয়াদের নেতৃত্বে অপরাপর আসামিরা বাদীর বাসার সামনে এসে তাকে খুঁজতে থাকেন। বাসার দারোয়ান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাকে বিষয়টি জানান। তখন আসামিদের দাবি করা বাকি ৪০ লাখ টাকা না দিলে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দিবেন বলে হুমকি দিতে থাকেন। পরবর্তীতে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করলে তাৎক্ষণিক গুলশান থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পাঁচ আসামিকে হাতেনাতে আটক করে এবং ওই সময় এজাহারনামীয় আসামি কাজী গৌরব অপু দৌড়ে পালিয়ে যান।

এমআইকে/এআইএম/এফএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর