ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় বার ও বেঞ্চের মধ্যে সমন্বয় জরুরি। বার ও বেঞ্চের সম্পর্ককে বলা হয় একটি পাখির দুটি ডানা। এই দুটি ডানার মধ্যে একটি ভেঙে গেলে অপরটি চলতে পারে না। ক্ষতিগ্রস্থ হন সাধারণ বিচারপ্রার্থীসহ সংশ্লিষ্টরা। সম্প্রতি ঢাকার আদালত অঙ্গনে বিচারক ও আইনজীবীর মধ্যে বৈরী সম্পর্ক লক্ষ করা গেছে। একটি দুঃখজনক ঘটনাও ঘটে গেছে। আর এতে করে বদনাম হচ্ছে দেশের এই গরুত্বপূর্ণ বিভাগের। সমালোচনাও করছেন অনেকেই। এসব ঘটনায় বিচারকের বিরুদ্ধে আইনজীবী আর আইনজীবীর বিরুদ্ধে বিচারকদের সংগঠনের বিবৃতিও লক্ষণীয়।
আদালত অঙ্গনে আইনজীবী ও বিচারকের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া না থাকলে বিচারপ্রার্থী মানুষদের ভোগান্তি আরও বাড়বে। এজন্য যতদ্রুত সম্ভব এ বিষয়ে সমাধান করা উচিত বলেও মন্তব্য করছেন সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজ্ঞরা। তাদের মতে বিচারক ও আইনজীবী পরিচালিত হওয়ার আলাদা নিয়মনীতি আছে। সেটা অনুসরণ করলে এই সমস্যা কমে যাবে।
সঠিক ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বার ও বেঞ্চের মধ্যে সমন্বয় প্রয়োজন উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি ও সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার এবিএম আলতাফ হোসেন ঢাকা মেইল কে বলেন, সঠিক ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা জরুরি। বিচারক এবং আইনজীবী গাইডেড বাই ল’।
তিনি বলেন, আইনজীবী ছাড়া যেমন বিচারক অর্থহীন তেমনি বিচারক ছাড়া আইনজীবীরা অর্থহীন। সম্প্রতি ঢাকা বারের একটি ঘটনায় যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তা কাম্য নয়। কিছু কিছু বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য দেখা যাচ্ছে সেটি দৃষ্টিকটু। এগুলো আমাদের সমাধান করা উচিত। আইনে বলে দেওয়া আছে বিচারক একটি মামলার কীভাবে পরিচালনা করবেন এবং জামিন দেবেন। জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে তার ক্ষমতার কথাও বলা আছে। কাজেই আদালত আদালতের নিয়মে চলবে এবং আইনজীবীরা আইনজীবীদের নিয়মে চলবেন। বার ও বেঞ্চের মধ্যে সমন্বয় থাকা জরুরি।
বিজ্ঞাপন
বিচার বিভাগে এরকম ঘটনা এখন নাকি পূর্বেও ছিল এমন প্রশ্নের জবাবে এই আইনঅজ্ঞ বলেন, এ রকম ঘটনা অগেও ঘটেছে। এটা নতুন কিছু না। তবে এ সব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আমরা দেখতে চাই না।
জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মাদ সাকিল আহমদ ঢাকা মেইলকে বলেন, বার ও বেঞ্চ একটি পাখির দুটি ডানা। এ ডানা দুটি ঠিক রাখতে হবে। যার যার কাজ বা দায়িত্ব নিয়ম অনুযায়ী পালন করলে সাধারণ বিচারপ্রার্থীরা উপকৃত হবে। সাধারণ মানুষ বার ও বেঞ্চের মধ্যে বিতর্ক বা কোনো ধরনের ঝামেলা হোক সেটা চায় না। আমরা আইনজীবীরা যেমন বেঞ্চকে বিচারিক কাজে সহযোগিতা করব তেমনি মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে আইনজীবীকে সঠিকভাবে সহযোগিতা করা উচিত।
আইনজীবী ও বিচারকের সঙ্গে যা ঘিটেছিল সেদিন
হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিন না মেলায় ঢাকার একটি আদালতে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় গত ১৭ মে। বিচারকের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে বিএনপিপন্থী কয়েকজন আইনজীবী প্রকাশ্যে আদালতের পরিবেশ বিঘ্নিত করেন। এমনকি একজন বিচারককে ‘আওয়ামী লীগের দালাল’ বলেও গালাগাল করা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে এই ঘটনা ঘটে। কেরাণীগঞ্জ মডেল থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যা চেষ্টার মামলায় আসামি হানিফ মেম্বার জামিন চেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো আবেদন করেন। আদালত সেটি নামঞ্জুর করলে উত্তেজনার সূচনা হয়।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, জামিন না পাওয়ায় আইনজীবী খোরশেদ আলম ও আরও কয়েকজন প্রকাশ্যে বিচারকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় তারা বিচারককে উদ্দেশ করে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’, ‘আওয়ামী লীগের দালাল’ ইত্যাদি মন্তব্য করেন এবং আদালতের কাজের তালিকা (কজলিস্ট) ছুড়ে ফেলেন।
ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, খোরশেদ আলম বিচারককে উদ্দেশ করে বলেন, ‘ঘটনার তারিখ, সময়, স্থান সব এক, শুধু বাদী আলাদা—এটা কি সম্ভব?’ এরপর তিনি এজলাস ছেড়ে চলে যান। এ সময় আরেক আইনজীবী আব্দুল খালেক মিলন বলেন, ‘আমরা সিএমএম কোর্টে রাজনীতি করেছি। আজ শেখ হাসিনা পদত্যাগ না করলে আমরা হয়তো খুন হয়ে যেতাম।’ তিনি বিচারককে উদ্দেশ করে আরও বলেন, ‘আপনি যে চেয়ারে বসে আছেন, সেটা আমাদের কারণে।’
আদালতের নথি অনুযায়ী, গত ৬ মে বাদী ফজলুল হক একটি অভিযোগ দাখিল করেন, যাতে হানিফ মেম্বারের বিরুদ্ধে জমি দখল, লুটপাট, যৌন নিপীড়ন এবং হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়। বাদীর ভাষ্যমতে, হানিফ দীর্ঘদিন ধরে প্রভাব খাটিয়ে ইউপি সদস্যের মতো আচরণ করছেন, যদিও তিনি নির্বাচিত নন। মামলায় উল্লেখ রয়েছে, একসময় নদীতে নৌকা বাইচে অংশ নেওয়া হানিফ বর্তমানে কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক এবং দখলবাজি, গ্যাস সংযোগে অনিয়মসহ নানা অপরাধে যুক্ত।
এদিকে আদালতের কার্যক্রম চলাকালে বিচারককে হুমকি ও অশালীন ভাষায় আক্রমণের ঘটনায় বিচার বিভাগে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। আদালত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই ধরনের আচরণ বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রতি গুরুতর অবমাননা এবং আইনের চোখে ফৌজদারি অপরাধের শামিল।
বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্ট মহল থেকে অভিযুক্ত আইনজীবীদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে। তারা বলছেন, আদালতের সম্মান রক্ষা ও বিচারককে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা বিচারব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আসামিকে জামিন না দেওয়ার ঘটনায় কোর্ট রুমের কজলিস্ট ছুড়ে ফেলা এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কারণে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঢাকা বার ইউনিটের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলমসহ পাঁচ আইনজীবীর সনদ বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
রোববার (১৮ মে) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানায় সংগঠনটি। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে কোনো নেওয়া না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
খোরসেদ আলম বাদে বাকি আইনজীবীরা হলেন- জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল খালেক মিলন, ফোরামের ঢাকা বার ইউনিটের প্রাথমিক সদস্য অ্যাডভোকেট মো. জাবেদ, অ্যাডভোকেট এস এম ইলিয়াস হাওলাদার ও অ্যাডভোকেট মো. জহিরুল।
জুডিশিয়াল কাউন্সিলেল বিবৃতি
বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন গভীর ক্ষোভ ও চরম উদ্বেগের সঙ্গে জানাচ্ছে যে, গত ১৭ মে দুপুরে ঢাকার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চলমান এজলাসে কিছু আইনজীবী কর্তৃক বিচারক ও বিচারকার্যের প্রতি প্রকাশ্য অবমাননা, চিৎকার-চেঁচামেচি, অশ্রাব্য গালিগালাজ, অশালীন মন্তব্য, কোর্টরুমের কজলিস্ট ছুড়ে ফেলা ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের যে ন্যক্কারজনক ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, তা দেশের বিচার বিভাগ, বিচারক ও আইনের শাসনের প্রতি সরাসরি হুমকি এবং সুস্পষ্ট ফৌজদারি অপরাধ। একপর্যায়ে এমন পরিস্থিতি হয় যে, বিচারককে বাধ্য হয়ে এজলাস ত্যাগ করতে হয়।
প্রকাশিত ভিডিও এবং প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার জিআর ১৫৬/২৫ মামলার জামিন শুনানির সময় বিচারক আইনানুগভাবে জামিন নামঞ্জুরের আদেশ প্রদান করলে, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা চরম মাত্রার ঔদ্ধত্যপূর্ণ, অবমাননাকর ও সহিংস আচরণে লিপ্ত হন। আইনজীবী খোরশেদ আলম একটি নথি দেখিয়ে উচ্চস্বরে আঙুল নেড়ে আদালতকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ঘটনার তারিখ, ঘটনার সময়, ঘটনার স্থান সেইম-দুইটা মামলা (বাদী আলাদা); এটা হয় নাকি?’। আইনজীবী আব্দুল খালেক মিলন বিচারককে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘শোনেন স্যার, বলতে তো এখন খারাপ শোনা যায়, আমাদের কারণে আজ এই চেয়ারে বসা আপনি’। অপর আইনজীবী মো. জাবেদ জামিনের জন্য পুনরায় শুনানির তারিখ নির্ধারণের জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা পুনরায় জামিনের একটা আবেদন করি। আপনি কালকে শুনানির জন্য রাখেন।
বিচারক তাদের আইনানুগ প্রক্রিয়ায় স্পেশাল পুটআপ নিয়ে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যাওয়ার জন্য বললে আইনজীবীরা আরও ক্ষিপ্ত ও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে ওই আইনজীবীরা বিচারককে আওয়ামী লীগের দালাল, ফ্যাসিবাদের দোসরসহ নানান অশ্রাব্য গালিগালাজ করতে থাকেন। তারা এজলাসে থাকা কজলিস্টও ছুড়ে ফেলে দেন। তাদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও অবৈধ বলপ্রয়োগের কারণে বিচারকার্য ব্যাহত হওয়ায় বিজ্ঞ বিচারক এজলাস ত্যাগ করতে বাধ্য হন।
এদিকে বিচারকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনায় বিএনপিপন্থি ৪ আইনজীবীকে শোকজ করেছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
এই ঘটনার মাধ্যমে শুধু একজন বিচারককে অপমান করা হয়নি, বরং গোটা দেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থার ভিত্তি কেঁপে উঠেছে। বিচারকের স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে, যা কোনোভাবেই একটি সভ্য, গণতান্ত্রিক ও আইনশাসিত দেশে গ্রহণযোগ্য নয়। এজলাসে অরাজকতা সৃষ্টি, বিচারকের প্রতি হুমকি ও অপমান এবং বিচারকার্যে অবৈধ বলপ্রয়োগ দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ধারা ২২৮ ও ৩৫৩ অনুযায়ী গুরুতর ফৌজদারি অপরাধ।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিচারিক কর্তৃত্বকে পাশ কাটিয়ে, পেশিশক্তি ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিজ পক্ষে আদেশ আদায়ের অপচেষ্টা স্পষ্টভাবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, নিরপেক্ষতা ও শৃঙ্খলার ওপর আঘাত। এটি একটি সংগঠিত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রয়াস, যা রাষ্ট্রের মৌলিক কাঠামোকে দুর্বল করার শামিল। বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এই ঘটনাকে স্বাধীন বিচারব্যবস্থার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক অপতৎপরতা হিসেবে দেখছে। বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতি কর্তৃক ঘোষিত স্বাধীন বিচার বিভাগের রোডম্যাপ বাস্তবায়নের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এমন ঘটনা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে বিপন্ন করার হীন ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়। এমন ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই কাম্য নয়, বিচারকদের অবমাননার সঙ্গে অ্যাসোসিয়েশন আর কোনো আপস করবে না। ভবিষ্যতে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ও ন্যক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে এবং স্বচ্ছ বিচারিক পরিবেশ নিশ্চিতকল্পে অ্যাসোসিয়েশন অবিলম্বে দেশের সব এজলাসে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেন।
এতে আরও বলা হয়, এই পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাসোসিয়েশন বার কাউন্সিলের কাছে অবিলম্বে এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত দোষী আইনজীবীদের সনদ বাতিলসহ তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে, বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন দেশের সব জেলা আদালতের বিচারকদের সঙ্গে নিয়ে যেকোনো কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবে।
আসামির জামিন না দেওয়ায় এজলাসে বিচারককে হেনস্তার ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় বিচারকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। মঙ্গলবার ঢাকা আইনজীবী সমিতির ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ঢাকা বার ইউনিটের আহ্বায়ক খোরশেদ আলম এ দাবি জানান। তিনি বলেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি পূর্ণাঙ্গ নয়। খণ্ডিতাংশ ভাইরাল করা হয়েছে। বিচারক নিজে আদালতে মোবাইল ফোন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। অথচ তিনিই নির্দেশ ভঙ্গ করে এজলাসের ভিডিও করে তা ভাইরাল করেছে। এটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। এ ব্যাপারে ওই বিচারককে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা আইনজীবীরা বার ও বেঞ্চের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে সচেষ্ট থেকেছি। তবে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন রাজনৈতিক সংগঠনের মতো আক্রমণাত্মক বিবৃতি দিয়েছে। তারা বিচার-বিশ্লেষণ এবং আমাদের কোনো জিজ্ঞাসাবাদ না করে একতরফাভাবে বিবৃতি দিয়েছে। ফলে আমাদের সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের সাধারণ সম্পাদক বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্দেশে বিচার বিভাগে গণতন্ত্রকামী আসামিদের জেলহাজতে রাখার সব নির্দেশনা প্রদানকারী বলে সর্বজনবিদিত। তার আপন ভাই যশোরের যুবলীগ নেতা এবং তার ভাই বৈষম্যবিরোধী মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তিনি বিচার বিভাগে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে অপচেষ্টা করছেন।
এআইএম/ইএ

