বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫, ঢাকা

শীতলক্ষ্যায় বর্জ্য না ফেলতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬ মে ২০২৫, ০৪:১৯ পিএম

শেয়ার করুন:

শীতলক্ষ্যায় বর্জ্য না ফেলতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ 

নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে শিল্পকারখানার বর্জ্য্য ও দূষিত পানি ফেলার ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান নিয়েছে হাইকোর্ট। নদী দূষণ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এ সংক্রান্ত অগ্রগতি জানিয়ে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

মঙ্গলবার (৬ মে) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের এবং বিচারপতি মুবিনা আসাফের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই আদেশ দেন। শুনানি শেষে আদালত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তাকে চ্যালেঞ্জ করে রুলও জারি করেন।


বিজ্ঞাপন


আদালতের আদেশ অনুযায়ী, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআইডব্লিউটিএ) একটি পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই কমিটির দায়িত্ব হবে নিশ্চিত করা, যাতে কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান শীতলক্ষ্যা নদীতে সরাসরি বর্জ্য ও দূষিত পানি ফেলতে না পারে। সেই সঙ্গে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রাপ্ত তথ্যসহ একটি লিখিত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

একইসঙ্গে আদালত পরিবেশ অধিদফতর ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি আলাদা কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন, যারা নদীর পানির দূষণের মাত্রা এবং তাতে সৃষ্ট ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে আগামী তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দেবে।

এই রুলে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, শীতলক্ষ্যা নদীর দূষণে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, কেন দূষণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না এবং কেন ক্ষতিপূরণ আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হবে না।

রিটকারী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (HRPB) পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। আদালতের বাইরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘শীতলক্ষ্যা নদী শুধু নারায়ণগঞ্জবাসীর জীবন-জীবিকার কেন্দ্র নয়, এটি একটি পরিবেশগত সম্পদ। অথচ কারখানার বর্জ্য ফেলে নদীটিকে ধ্বংস করা হচ্ছে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে একসময় এই নদী বিলীন হয়ে যাবে।’


বিজ্ঞাপন


তিনি আরও বলেন, ‘নদীর বাস্তুতন্ত্র, জলজ প্রাণী এবং পানি ব্যবহারকারী মানুষ—সবাই দূষণের ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। দূষণকারীদের অর্থনৈতিকভাবে জবাবদিহির আওতায় না আনলে তারা ভবিষ্যতেও এই কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকবে না।’

উল্লেখ্য, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে শীতলক্ষ্যা নদীর ভয়াবহ দূষণ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ২৪ এপ্রিল এইচআরপিবি জনস্বার্থে একটি রিট দায়ের করে।

রিটের আবেদনে আবেদনকারী ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, রিপন বাড়ই ও সঞ্জয় মণ্ডল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. শফিকুর রহমান।

বিবাদীদের তালিকায় রয়েছেন নৌপরিবহন, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকসহ মোট ১২৮ জন।

এআইএম/এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর