আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের মা শামসুন্নাহার বেগম এবং ভাই শিশির আহমেদ শাহনেওয়াজ আহমেদ রাজধানীর উত্তরার একটি পাঁচতলা বাড়িতে বসবাসের অধিকার ফিরে পেয়েছেন।
সোমবার (৫ মে) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রাখেন। এতে বিচারিক আদালতের ‘স্থিতাবস্থার আদেশ’ বাতিল হয়ে যায়। এর ফলে বাড়িটিতে বসবাসে এখন আর কোনো আইনি বাধা রইল না শামসুন্নাহার বেগম ও তার ছেলের।
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য, ২০০২ সাল থেকে এই বাড়িতে থাকছিলেন শামসুন্নাহার ও শাহনেওয়াজ। বাড়িটি রাজধানীর উত্তরা রেসিডেনসিয়াল মডেল টাউনের ৩ সেক্টরের ১১ নম্বর সড়কে অবস্থিত।
তবে ২০১৭ সালে, পারিবারিক বিরোধের জেরে তুরিন আফরোজ নিজের প্রভাব খাটিয়ে মা ও ভাইকে ওই বাড়ি থেকে বের করে দেন বলে দাবি করেছেন শাহনেওয়াজ। এরপর উভয় পক্ষই বাড়ির মালিকানা নিয়ে আদালতে দুটি দেওয়ানি মামলা করেন। ২০১৮ সালে আদালত বাড়ির ভোগদখল নিয়ে স্থিতাবস্থার আদেশ দেন। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের মার্চে এই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন শাহনেওয়াজ।
২০২৩ সালের ২ এপ্রিল হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চান, কেন ওই স্থিতাবস্থা অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না। চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মো. সেলিমের একক বেঞ্চ চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি রুল যথাযথ ঘোষণা করে স্থিতাবস্থা বাতিল করেন। এর বিরুদ্ধে আপিল করলেও সোমবার আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখেন।
আইনজীবীদের মতে— এই রায়ের ফলে শামসুন্নাহার ও তার ছেলে আবারও ওই বাড়িতে বসবাস করতে পারবেন। তবে বাড়ির চূড়ান্ত মালিকানা ও ভোগদখল সংক্রান্ত মামলাগুলো বিচারিক আদালতে স্বাভাবিক নিয়মে চলবে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে, মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, শামসুন্নাহার বেগম ১৯৯১ সালে উত্তরার ওই বাড়ির জমি কিনেছিলেন। পরের বছর তিনি তার স্বামী তসলিম উদ্দিনকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেন।
তুরিন আফরোজ আদালতে দাবি করেছেন, ১৯৯৪ সালে তার বাবা ওই সম্পত্তি তাকে হেবা করেন। অন্যদিকে শামসুন্নাহার ও শাহনেওয়াজের দাবি, তসলিম উদ্দিন কখনোই মেয়েকে হেবা করেননি।
তারা আদালতে জানান, ১৯৯৭ সালে শামসুন্নাহার নিজেই ছেলে শাহনেওয়াজকে জমি হেবা দেন। এরপর নামজারি করে ১৯৯৯ সালে হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন থেকে ২৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে বাড়ি নির্মাণ করেন। ২০০২ সাল থেকে তারা সেই বাড়িতে বসবাস করছিলেন।
এইউ