মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫, ঢাকা

জামিন আদেশের পর যা বললেন চিন্ময়ের আইনজীবী

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৪৯ পিএম

শেয়ার করুন:

জামিন আদেশের পর যা বললেন চিন্ময়ের আইনজীবী

হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেও কারাগার থেকে সহসা মুক্তি পাচ্ছেন না বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। মুক্তির জন্য কাগজপত্রের প্রক্রিয়া শেষ হতে লাগতে পারে অন্তত সপ্তাহখানেক সময়। এরপরই চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের চার দেয়াল থেকে মুক্তি পেতে পারেন ভিআইপি এই বন্দি।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) চিন্ময় দাসের জামিন আদেশের পর এসব তথ্য জানান চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য।


বিজ্ঞাপন


চিন্ময়ের আইনজীবী বলেন, নিম্ন আদালতে জামিন না মিললেও উচ্চ আদালত জামিন দিয়েছেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে। কিন্তু তিনি সহসা মুক্তি পাচ্ছেন না। কারামুক্তিতে বাধাও নেই। সমস্যা কাগজপত্র নিয়ে। হাইকোর্ট থেকে অর্ডারটি (আদেশ) নিম্ন আদালতে যাবে, যা চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌছতে সপ্তাহখানেক সময় লেগে যেতে পারে। এরপর তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, গত পরশু ওনার (চিন্ময়) মা এবং আমি কারাফটকে গিয়ে দেখা করেছিলাম। উনি মোটামুটি ভালো আছেন। তবে শরীরটা আগের চেয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। প্রায় ৭ কেজি ওজন কমেছে। আমি ওইদিনই আশ্বাস দিয়েছিলাম জামিন হবে তার।

সূত্র জানায়, বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন মঞ্জুর করে রায় দেন। আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া।

এদিকে, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহার করেছেন চেম্বার বিচারপতি। একইসঙ্গে জামিন স্থগিতের আবেদনের শুনানি আগামী রোববার (৪ মে) ধার্য করা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


বুধবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘রোববার শুনানি হবে। শুনানি আজকে হয় নাই, আদালত রোববার শুনবে এটা।’

আদালতের তথ্যমতে, গত বছরের ২৫ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি বড় সমাবেশ হয়। সমাবেশে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার উপরে ইসকনের লোগো সম্বলিত একটি পতাকা উড়ানো হয়। এর কয়েকদিন পর গত ৩১ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়।

এ মামলায় আরও ১৮ জনকে আসামি করা হয়। একই বছরের ২২ নভেম্বর চিন্ময়ের নেতৃত্বে রংপুরে আরও একটি বড় সমাবেশ হয়। এরপর রাষ্ট্রদ্রোহের সেই মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন চট্টগ্রামের আদালত। সেদিনই চিন্ময় দাসের আইনজীবীরা ওই আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন চেয়ে আবার জামিন আবেদন করেছিলেন।

তার জামিন ঘিরে আদালত চত্বরে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় চিন্ময়ের ভক্তরা। হামলায় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে একজন আইনজীবীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রায় দুই ডজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর ২ জানুয়ারি ওই মামলায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ তার জামিন আবেদন খারিজ করে আদেশ দেন।

এরপর হাইকোর্টে চিন্ময় দাসের পক্ষে জামিন আবেদন করেন সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য। পরে ৪ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কেন জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

প্রতিনিধি/এমএইচটি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর