মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫, ঢাকা

সংসদে লুকিয়ে প্রাণ রক্ষার গল্প শোনালেন পলক

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:২১ পিএম

শেয়ার করুন:

সংসদে লুকিয়ে প্রাণ রক্ষার গল্প শোনালেন পলক
আদালতে জুনাইদ আহমেদ পলক। ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার মন্ত্রিসভার অনেক সদস্য, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী অনেক নেতা সরকার পতনের পরপরই দেশ ছেড়েছেন। অনেকে আবার দেশে থেকে গ্রেফতার হয়েছেন। এদেরই একজন সাবেক তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক।

একাধিক হত্যা মামলার আসামি সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী আদালতে জানিয়েছেন ৫ আগস্ট তিনি সংসদের ভেতরে একটি জায়গায় লুকিয়ে ছিলেন। সঙ্গে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকারসহ ১২ জনের মতো ছিলেন। যাদের ওইদিন মধ্যরাতে সেনাবাহিনীর একটি দল উদ্ধার করে।


বিজ্ঞাপন


বুধবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পলক বলেছেন, গত ৫ আগস্ট কোনো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন না। তিনি সেদিন জাতীয় সংসদ ভবনে ছিলেন। সেদিন দিবাগত রাত আড়াইটার সময় তাকেসহ ১২ জনকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় সেনাবাহিনী।

এদিন আদালতে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, গত বছরের ৫ আগস্ট রাজধানীর বাড্ডায় রংমিস্ত্রি আবদুল জব্বার হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এই হত্যা মামলায় জুনাইদ আহ্‌মেদ পলকের নাম রয়েছে। হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসা করা জরুরি।

পুলিশের বক্তব্য শেষ হওয়ার পর জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক হাত উঁচু করে কথা বলার জন্য আদালতের কাছে অনুমতি চান। পরে তিনি আদালতকে ৫ আগস্ট কীভাবে হামলার হাত থেকে রক্ষা পান সেকথা বলেন।

প্রসঙ্গত, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই ঢাকার রাস্তায় নেমে আসে লাখো মানুষ। হামলা চালানো হয় গণভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সংসদ ভবন, প্রধান বিচারপতির বাসভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনায়। 


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন

প্রশ্ন করলেই মাথা নিচু করে কাঁদছেন পলক

দোয়া করবেন ভাই, বোবা হয়ে আছি, বোবা: পলক

আদালতের অনুমতি পেয়ে জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক বলেন, ‘বলা হচ্ছে, গত ৫ আগস্ট বাড্ডার খুনের ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত। একটা বিষয় আপনাকে (আদালত) জানিয়ে রাখি। গত বছরের ৫ আগস্ট বেলা ১১টার সময় আমি সংসদে অবস্থান করি। একটা পর্যায়ে আমরা সংসদে আক্রান্ত হই। এক পর্যায়ে আমি, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকারসহ ১২ জন সংসদের বিশেষ কক্ষে অবস্থান করতে বাধ্য হই। রাত আড়াইটার সময় সেনাবাহিনী আমাদের সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।’

পলক আদালতকে আরও বলেন, ‘যেখানে আমি সারা দিন সংসদে অবস্থান করেছিলাম, সেখানে ৫ আগস্ট কোনো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আমার কোনো দায় নেই। ইতিমধ্যে আমার ৮৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। যদি জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হয়, তাহলে আমাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেওয়া হোক।’

জুনাইদ আহ্‌মেদ পলকের বক্তব্যের বিরোধিতা করেন পিপি ফারুক ফারুকী। তিনি আদালতকে বলেন, ‘আমরা শুনেছিলাম, ৫ আগস্ট সংসদে স্পিকারসহ বেশ কয়েকজন লুকিয়ে ছিলেন। আজ জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক সেই ঘটনা বললেন। এখনো স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরীকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি।’

ফারুক ফারুকী আরও বলেন, ‘আমরা বারবারই বলছি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতাকে যারা সরাসরি গুলি করে হত্যা করেছে, তাদের যে শাস্তি, একই শাস্তি, যারা এসব হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক এসব হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় যে কয়েকজন ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সঙ্গে মিটিং করেছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন এই জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক।’

বিইউ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর