সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সহকারী সমিতির সদস্য মো. হুমায়ুন কবিরকে মেরে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে বিএনপিপন্থী দুই আইনজীবী মো. ঈসা ও এবিএম ইব্রাহিম খলিলের বিরুদ্ধে। এই দুই আইনজীবী সরকারের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে কর্মরত।
মঙ্গলবার (৩ মার্চ) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির একটি চেম্বারে এই ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক বরাবর বিচার চেয়ে একটি আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী আইনজীবী সহকারী। এ ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন ভুক্তভোগীর সহকর্মীরা।
আবেদনে হুমায়ুন কবির বলেন, আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির বুলবুল, [রুম নং-১২৫ (মেইন বিল্ডিংয়ের নিচতলা) এর ক্লার্ক হিসেবে গত ২৫ বছর যাবত সততা ও দক্ষতার সাথে কাজ করছি। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সহকারী সমিতিতে আমার সদস্য নং-৭১৫।
আজ (মঙ্গলবার) ৪ মার্চ সকাল ৮টার সময় প্রতিদিনের মতো আমি আমার স্যারের চেম্বারে প্রয়োজনীয় কাজ করছিলাম। তখন এই রুমে বরাদ্দপ্রাপ্ত কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। এ সময় অ্যাডভোকেট মো. ইসা (সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল) স্যার একজন মহিলাসহ আমাদের চেম্বারে ঢুকে বসে গল্প করতে থাকেন। কিছুক্ষণ পরে আমি মামলাসংক্রান্ত কাজে বাইরে যাওয়ার সময় ঈসা স্যারকে বলি- ‘স্যার, আমি একটা কাজে বাইরে যাচ্ছি। আমি আসার আগে আপনি যদি চলে যান, তাহলে দরজাটা একটু চাপিয়ে দিয়ে যাবেন।’ এই কথা বলার সাথে সাথে তিনি উচ্চস্বরে বলেন: ‘বেয়াদব! তুই আমাকে চিনিস?’ তারপর তিনি আকস্মিকভাবে আমাকে কিল-ঘুষি, চড়, থাপ্পড় এবং স্টিলের লাঠি দিয়ে বাড়ি ও লাথি মারা শুরু করেন। এ সময় মাননীয় অ্যাটর্নি জেনারেল স্যারের ক্লার্ক বিদ্যুৎ দাদা ঠেকানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। আমাকে বেধড়ক মারার পর ঈসা স্যার চলে যান।
সকাল ১০টা নাগাদ ঈসা স্যার, এ বি এম ইব্রাহীম খলিল (সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল) স্যারসহ ৩/৪ জন আইনজীবীকে সাথে নিয়ে পুনরায় আমাদের রুমের দরজায় এসে বলেন- ‘এই তুই আমাকে চিনিস না।’ এই কথা বলেই তারা সবাই পুনরায় চড়, থাপ্পড়, কিল, ঘুষি মারা শুরু করেন।
বিজ্ঞাপন
ইব্রাহীম খলিল স্যার আমার গলায় ঝুলানো পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নিয়ে যান এবং আমাকে চড়, থাপ্পড়, কিল, ঘুষি মেরে নিচে ফেলে দেন। তারপর ৩/৪ জন মিলে আমাকে বেধড়ক লাথি মারতে থাকেন। তখন অ্যাডভোকেট এস এম আমিনুল ইসলাম স্যারের ক্লার্ক মো. আলামিন, পাশের রুমের অ্যাডভোকেট আবেদা গুলরুক ম্যাডামের ক্লার্ক ফারজানা আক্তার শিমু এবং কজলিস্ট সরবরাহকারী আল আমিন ঠেকাবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
আমি ইতোমধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করেছি। চিকিৎসাসংক্রান্ত প্রমাণপত্র এই দরখাস্তের সঙ্গে সংযুক্ত করলাম।
আবেদনে তিনি উপরোক্ত ঘটনায় অভিযুক্তদের যথাযথ বিচার প্রার্থনা করেন।
প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে ফৌজদারী মামলার অভিযোগ রয়েছে।
এআইএম/জেবি