জুলাই আগস্টের গণহত্যা মামলায় সাবেক সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, বিচারপতি, আমলাসহ ১৬ জনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছিল আজ। সকালে হাজির করার পর তাদের শুনানি শেষে দুপুরে বের করা হয়। এসময় আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খানের মুখ ভরা হাসি ছিল। এরপর বাকীদের বের করে আনা হয়। তবে অন্যরা মলিন মুখেই বের হন। একমাত্র সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক ছাড়া কারও মুখে কোন কথা ছিল না। তারা প্রত্যেকেই নিশব্দে হেঁটে গিয়ে প্রিজন ভ্যানে ওঠেন।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১টার আগে ট্রাইব্যুনাল থেকে প্রথমে বের করা হয় সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক নৌমন্ত্রী শাহাজান খানকে। এসময় উপস্থিত সাংবাদিকরা হেঁটে যাওয়া পলককে উদ্দেশ্য করে বলতে থাকেন, পলক ভাই কেমন আছেন। তিনি তাদের এমন প্রশ্নে শুধুমাত্র একটি বাক্য মুখে উচ্চারণ করেছেন- আপনারা ভালো থাকলেই ভালো, আমরা বোবা। পরে তিনি প্রিজন ভ্যানে উঠে যান। তবে পলকের সাথে বের হওয়া শাহাজান খান বেশ উৎফুল্লই ছিলেন। ট্রাইব্যুনালের গেট থেকে বের হয়েই তিনি হাসতে থাকেন। এসময় সাংবাদিকদের কয়েকজন তার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। তাকে ট্রাইব্যুনাল থেকে বের করার সময় দুই পুলিশ সদস্য ধরে নিয়ে যান প্রিজন ভ্যানের সামনে। প্রিজন ভ্যানে হেঁটে যাওয়ার সময় শাজাহান খান তার ডান পাশে থাকা এক পুলিশ সদস্যের সঙ্গে উচ্চস্বরে হাসাহাসি করে কথা বলছিলেন। সেই মুহূর্তে ট্রাইব্যুনালের সামনে উপস্থিত থাকা কয়েকজন প্রশ্ন করেন ‘শাজাহান ভাই কেমন আছেন?’ জবাবে শাজাহান খান তাদের সালাম দিয়ে হাসতে হাসতে গাড়িতে উঠে যান। এরপর শাজাহান খানসহ আরও কয়েকজন হেভিওয়েট আসামিকে নিয়ে প্রিজন ভ্যান ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণ ত্যাগ করে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: জুলাই-আগস্ট গণহত্যার মামলায় আমু-কামরুল গ্রেফতার
এর কয়েক মিনিট পর বের করা হয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সভাপতি আমির হোসেন আমু, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামকে। এরপর সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক শিল্পমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, হাসিনার জ্বালানী উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, ফারুক খান। সবশেষে বের করা হয় সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দিপু মণিকে। আদালত থেকে দু’টি প্রিজনভ্যানে তাদের কারাগারে নেওয়া হয়। তবে অন্যদিনগুলোতে এই আসামিরা গণমাধ্যমের উদ্দেশ্যে দুই-একটি কথা বললেও আজ কোন কথাই বলেননি।
মঙ্গলবার সকালে গণহত্যার মামলায় ১৬ আসামিকে হাজির করা হলে তাদের আত্মীয়স্বজনরাও হাজির হন। তারা তাদের সাথে দেখা করেন। পরে একে একে তারা চলে যান। তাদের সঙ্গে মামলার আইনজীবীরাও এসেছিলেন।
এমআইকে/এফএ