জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনাকে নিয়ে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে শিশুদের মা জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকোর করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে শিশুদের মা ও বাবার পরস্পরের বিরুদ্ধে করা দুটি অভিযোগও খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২ জুন) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
আদেশের বিষয়টি ঢাকা মেইলকে জানিয়েছেন নাকানো এরিকোর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি বলেন, ইমরান শরীফের বিরুদ্ধে দায়ের করা আদালত অবমাননার অভিযোগ খারিজ হয়েছে। এরিকোর বিরুদ্ধে দায়ের করা আদালত অবমাননার অভিযোগও খারিজ। এছাড়াও বিদেশ যাওয়ার অনুমতি চেয়ে করা আবেদনও খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
এর আগে গত ১৭ মে দুই শিশুকে নিয়ে বিদেশ ভ্রমণে যাওয়ার জন্য আদালতের অনুমতি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করেন নাকানো এরিকোর আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির।
এরও আগে ঢাকার পারিবারিক আদালতে করা মামলাটির (শিশুদের বাবার) নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দুই শিশু তাদের মায়ের কাছে থাকবে বলে আদেশ দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে তিন মাসের মধ্যে পারিবারিক আদালতে থাকা মামলাটি নিষ্পত্তি করতে সংশ্লিষ্ট আদালতকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ।
জাপান থেকে আসা দুই শিশু নিয়ে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে তাদের মা নাকানো এরিকো করা আবেদন (লিভ টু আপিল) নিষ্পত্তি করে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের ভার্চুয়াল আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ১১ জুলাই বিয়ে করেন জাপানের নাগরিক নাকানো এরিকো ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইমরান শরীফ। তাদের সংসারে তিন মেয়ে রয়েছে। ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। ২০২১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সব থেকে ছোট মেয়েকে জাপানে রেখে বড় এবং মেঝো মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। একই বছরের ১৯ আগস্ট দুই মেয়েকে ইমরানের কাছ থেকে ফিরে পেতে ঢাকায় এসে রিট করেন নাকানো এরিকো।
অন্য দিকে, ছোট মেয়েকে ফিরে পেতে আরেকটি রিট করেন ইমরান। গত বছরের ২১ নভেম্বর এরিকো ও ইমরানের পৃথক রিটের শুনানিতে দুই শিশু তাদের বাবার হেফাজতে থাকবে বলে আদেশ দেন হাইকোর্ট। পরে সেই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন এরিকো। আবেদনের প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ দুই শিশুকে তাদের মায়ের কাছে রাখার আদেশ দেন। তবে শিশুদের বাবা আদালতের নির্ধারিত সময়ে শিশুদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন বলেও আদেশে বলা হয়। পাশাপাশি শিশুদের মাকে নিয়মিত লিভ টু আপিলও দায়ের করতে বলা হয়। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ আদেশের পর চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি নিয়মিত লিভ টু আপিল করেন। পরে এর ওপর শুনানি শেষে এই আদেশ দেওয়া হয়।
এআইএম/এইউ
