বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া নাশকতা ও রাষ্ট্রদ্রোহসহ ১১টি মামলার কার্যক্রম বাতিল করেছেন আদালত।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) এ বিষয়ে পৃথক রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেন বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।
বিজ্ঞাপন
এর আগে গতকাল এসব মামলা শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়।
নাশকতার অভিযোগে সাতটি মামলা রাজধানীর দারুস সালাম থানায়, তিনটি মামলা যাত্রাবাড়ী, আরেকটি ছিল সিআর মামলা। যেটি করেছিলেন মোমতাজ উদ্দিন আহেমদ মেহেদী। তিনি সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ও আওয়ামী সমর্থিত আইনজীবী।
এসব মামলা বাতিলের পক্ষে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় খালেদা জিয়া সরাসরি স্পটে ছিলেন না। এগুলো পাবলিক পরিবহন। রাষ্ট্রীয় সম্পদ না। এজন্য সরকার বা পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেনি। আর ২০১৬ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদদের সংখ্যা নিয়ে দায়ের করা সিআর মামলাটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছিল না। পরে আদালত রুল যথাযথ ঘোষণা করে মামলাগুলো বাতিলের রায় দেন।
আদালত থেকে বেরিয়ে বিএনপিপন্থী আইনজীবী মো. আজমল হোসেন খোকন ঢাকা মেইলকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিজ্ঞাপন
সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এইসব মামলা ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, ভিত্তিহীন, বানোয়াট, হয়রানিমূলক এবং বিগত আওয়ামী সরকারের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য। তিনি বলেন, একটি মামলা করা হয়েছে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে। এই ধরনের মামলা দায়ের করতে হলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হয়। মিথ্যা ও বানোয়াট এ মামলা দায়েরে আইন অনুসরণ না করে খালেদা জিয়াকে আসামি করে হয়রানি করা হয়েছে। এছাড়াও নাশকতার অভিযোগে করা অন্যান্য মামলায়ও মিথ্যা ও হয়রানি মূলক তা আমরা আদালতে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি।
সিনিয়র এই আইনজীবী বলেন, খালেদা জিয়াকে তার নিজ বাড়ি এবং রাজনৈতিক কার্যালয়ে বালির ট্রাক দিয়ে বন্দি রেখেও বিভিন্ন মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত উভয়পক্ষকে শুনে মামলাগুলো বাতিল করে আজ রায় দিয়েছেন।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, মিথ্যা বানোয়াট রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা হওয়া সত্ত্বেও আদালতের কাছে আমরা ইতোপূর্বে ন্যায়বিচার পাইনি। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর দেশের আদালতে বিচার প্রার্থীদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথ খুলেছে।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট মো. জাকির হোসেন ভুঁইয়া, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল ও মো. আজমল হোসেন খোকন।
এআইএম/জেবি