শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

নুরুল হত্যা: তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২২ মে ২০২২, ১২:৫৬ পিএম

শেয়ার করুন:

নুরুল হত্যা: তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ
নুরুল ইসলাম (ফাইল ছবি)

রাজশাহীর পুটিয়ার শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শামীম আক্তারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে মামলার বাদী নুরুল ইসলামের মেয়ে নিগার সুলতানার করা এজাহার আগামী দশ দিনের মধ্যে নথিসহ গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিষয়টি পিবিআইয়ের একজন যোগ্য ও মেধাবী অফিসারকে দায়িত্ব দিতে বলা হয়েছে। এই অফিসার তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করবেন আদালতে।

রোববার (২২ মে) এ বিষয়ে শুনানি করে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. সেলিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি দ্বৈ বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।


বিজ্ঞাপন


আদালতের আদেশের বিষয়টি ঢাকা মেইলকে জানিয়েছেন নিহত শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলামের মেয়ে নিগার সুলতানার আইনজীবী মো. আবু বকর সিদ্দিক।

তিনি বলেন, নুরুল হত্যার ঘটনায় নিহতের মেয়ে নিগার সুলতানা তার পিতাকে হত্যার অভিযোগে রাজশাহীল পুটিয়া থানায় এজাহার দায়ের করেছিলেন। থানার সে সময়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাকিল উদ্দিন আহমেদ সেই এজাহারটি না নিয়ে আসামিদের রক্ষার জন্য একটি এজাহার তৈরি করেছিলেন। পরে ২০১৯ সালে পুলিশের ওসি সাকিলের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একটি রিট দায়ের করেন নিগার সুলতানা।

এ রিটের শুনানি শেষে বিভাগীয় তদন্তে প্রমানিত হয় যে সাকিল উদ্দিন আহমেদ অন্যায়ভাবে নিগার সুলতানার এজাহার পাল্টে দেন আসামিদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য এবং তিনি নতুন করে একটি এজাহার তৈরি করেন। পরে হাইকোর্ট বিষয়টি পিবিআইকে তদন্ত করতে আদেশ দেন। কিন্তু সঠিকভাবে তদন্ত করতে ব্যর্থ হয় হন পিবিআই। পিবিআইয়ের তদন্তে হতাশ হন হাইকোর্ট। পিবিআইয়ের এরকম প্রতিবেদন দাখিল আদালত প্রত্যাশা করেননি। সাকিলের মতো আরেকটি প্রতিবেদন দাখিল করেছিল পিবিআই। এ প্রতিবেদনটি আজ বাতিল করল হাইকোর্ট।

বাদীর দায়ের করা আট আসামির (আব্দুর রহমান পটল, মিঠু ওরফে গুন্ডা মিঠু, আহসানুল হক মাসুদসহ) বিরুদ্ধে এজাহার গ্রহণ করতে রায় দিলেন আদালত।


বিজ্ঞাপন


ঘটনার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১০ জুনে নিখোঁজ হন পুঠিয়ার সড়ক ও পরিবহন মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম। পরদিন সকালে পুঠিয়ার একটি ইটভাটা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নির্বাচনের ফলকে কেন্দ্র করে তিনি হত্যার শিকার হন বলে অভিযোগ করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে নিগার সুলতানা আটজনের নাম উল্লেখ করে পুঠিয়া থানায় এজাহার দাখিল করেন। কিন্তু সেই এজাহারটি লিপিবদ্ধ না করে থানার তৎকালীন ওসি সাকিল উদ্দিন আহমেদ ছিঁড়ে ফেলেন। পরে সাদা কাগজে বাদীর সই রেখে নিজেরাই একটা এজাহার লিখেন। যা পরে হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত বিচারিক অনুসন্ধান কমিটির তদন্তে বেরিয়ে আসে। একই সঙ্গে ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন। সে আদেশ অনুসারে তদন্ত শুরু করে পিবিআই।

এর আগে নুরুল ইসলামের মেয়ের করা রিটের শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর মামলার এজাহার বদলে দেওয়ার অভিযোগের ঘটনায় রায় দেন হাইকোর্ট।

রায়ে আদালত আশা প্রকাশ করে বলেন, পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার তদন্ত তদারকিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবেন। বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তা বা সংস্থাকে অবিলম্বে কেস ডকেট (নথি) পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হলো। পিবিআইকে তদন্তকালে মূল এজাহারের বর্ণনা, রাজশাহীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অনুসন্ধান রিপোর্ট ও অনুসন্ধান কার্যক্রমে সাক্ষীদের সাক্ষ্য বিবেচনায় নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।

এআইএম/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর