কোটা পদ্ধতি সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ১৬ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত ঘটনায় মৃত্যু, সহিংসতা, নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা তদন্তে হাইকোর্ট বিভাগের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে তদন্ত কমিশন গঠন করেছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (০১ আগস্ট) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
বিজ্ঞাপন
হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানকে সভাপতি করে গঠিত তদন্ত কমিশনের অপর দুই সদস্য হলেন— হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরী।
কমিশন তদন্ত কাজ শেষ করে আগামী ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে সরকারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে দেশের বিভিন্ন স্থানে ১৬ জুলাই সংঘটিত ঘটনায় ৬ জন নিহত হওয়া এবং সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনা তদন্তের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানকে দায়িত্ব দিয়ে এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়। এ বিষয়ে ১৮ জুলাই প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিশন তদন্ত কাজ শেষ করে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সরকারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
গত মঙ্গলবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সারাদেশে সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং নিহতের বিষয়টি তদন্তে তদন্ত কমিশনের পরিধি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে এই কমিশনের সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে তিনজন করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আজ জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ১৮ জুলাই জারি করা প্রজ্ঞাপন রহিত করা হলো, এ স্বত্ত্বেও ওই প্রজ্ঞাপনের অধীন গৃহীত কার্যক্রম এই প্রজ্ঞাপনের অধীন গৃহীত হয়েছে বলে গণ্য হবে।
কমিশনের কার্যপরিধি অনুযায়ী, গত ১৬ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত সময়ে নিহত ব্যক্তিদের মৃত্যুর কারণ উদঘাটন ও তাদের মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করবে কমিশন। ১৬ হতে ২১ জুলাই পর্যন্ত সংঘটিত সহিংসতা, নাশকতা, অগ্নসংযোগ, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা এবং এই সময়ে সংঘটিত সহিংসতা, নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনায় বিভিন্ন সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বয়ত্তশাসিত দপ্তর/সংস্থা/প্রতিষ্ঠান, সরকারি কোম্পানি, সংবিধিবদ্ধকর্তৃপক্ষ ও করপোরেশন এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ১৬ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত সংঘাত-সহিংসতার ঘটনায় অনেক প্রাণহানি ঘটে। সরকারি হিসাবেই এখন পর্যন্ত ১৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ২৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২৭ জুলাই রাতে সাংবাদিকদের কাছে নিহত ব্যক্তিদের একটি তালিকা পাঠান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবদুল হান্নান। তবে সে তালিকায় ৬৬ জনের পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি।
গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ ও পরবর্তী সংঘাতে এখন পর্যন্ত ২১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
/এএস