বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৪, ঢাকা

আনার হত্যার আসামিদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য দিতে আদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩ জুন ২০২৪, ০৭:৩৬ পিএম

শেয়ার করুন:

আনার হত্যার আসামিদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য দিতে আদেশ

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যা মামলার প্রধান আসামি মো. আখতারুজ্জামানসহ ১০ জনের ব্যাংক হিসাবের লেনদেনের তথ্য সরবরাহ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (৩ জুন) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এই আদেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপ) তাপস কুমার পাল গণমাধ্যমকে বলেন, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম হত্যা মামলায় জড়িত ১০ জনের ব্যাংক হিসাবের তথ্য সরবরাহ করার আদেশ চেয়ে আদালতে আবেদন করে পুলিশ। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন। ফলে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট এসব ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের তথ্য মামলার তদন্তকারী সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশকে সরবরাহ করবে।


বিজ্ঞাপন


আলোচিত এ হত্যা মামলায় গ্রেফতার শিলাস্তি রহমান আজ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিচ্ছেন। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে তিনি এই জবানবন্দি দিচ্ছেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জালাল উদ্দিন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আট দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গত শুক্রবার শিলাস্তি রহমানসহ তিনজনকে আদালতে হাজির করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আদালত তাঁদের প্রত্যেককে আবার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। দুদিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ শিলাস্তি রহমানকে আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করে ডিবি। পরে বিকেলে এ হত্যা মামলায় স্বীকারোক্তি দেওয়া শুরু করেন শিলাস্তি রহমান।

ব্যাংক হিসাবের তথ্য চাওয়া হয়েছে যাদের— শিমুল ভূইয়া (৫৬), তানভীর ভূইয়া (৩০), সেলেষ্টি রহমান (২২), আখতারুজ্জামান শাহীন (৫৩), মো. সিয়াম হোসেন (৩৩), মোস্তাফিজুর রহমান (৩৩), ফয়সাল আলা সাজী (৩৭), চেলসি চেরী (২১), তাজ মোহাম্মদ খান (৬০) ও মো. জামাল হোসেন (৫২)।

an


বিজ্ঞাপন


গত ১২ মে ঝিনাইদহর কালীগঞ্জ থেকে কলকাতায় যাওয়ার পরেরদিন রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান তিনবারের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। এরপর ২২ মে সকালের দিকে তার খুনের খবর প্রকাশ্যে আসে। পুলিশ বলছে, কলকাতার উপকণ্ঠে নিউটাউনের অভিজাত আবাসন সঞ্জীভা গার্ডেনসের একটি ফ্ল্যাটে আনারকে খুন করা হয়। খুনের আলামত মুছে ফেলতে দেহ কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়। এরপর সুটকেস ও পলিথিনে ভরে ফেলে দেওয়া হয় বিভিন্ন জায়গায়।

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্যকে হত্যার পর মরদেহ ফেলার কাজে অংশ নেওয়া মুম্বাই থেকে ভাড়া করে আনা কসাই জিহাদকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ।

আর ঢাকায় ডিবির হাতে গ্রেফতার হন হত্যাকাণ্ডের মূল সংঘটক চরমপন্থী নেতা আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়াসহ তিনজন। নেপালে গ্রেফতার হয়েছে সিয়াম হোসেন নামে আরেক অভিযুক্ত। সিয়ামও মরদেহ ফেলায় অংশ নিয়েছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। 

এদিকে গত সপ্তাহে কলকাতায় গ্রেফতার জিহাদ হাওলাদার ওরফে কসাই জিহাদ জানিয়েছেন, নিউ টাউনের সঞ্জীভা গার্ডেনসের বাথরুমে টুকরো টুকরো করা হয় এমপি আনারের লাশ। পরে সেগুলো পলিথিনে ভরে ট্রলিতে করে নিয়ে পাবলিক টয়লেটসহ বিভিন্ন খালে ফেলে দেয়া হয়েছে।

কসাই জিহাদকে নিয়ে খুনের ঘটনাস্থল কলকাতার সঞ্জীভা গার্ডেনসের ওই ফ্ল্যাট এবং একটি বর্জ্যখাল পরিদর্শন করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল। বাংলাদেশে গ্রেফতার তিনজনকে ভিডিও কলে যুক্ত করে জিহাদের সঙ্গে সামনাসামনি জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু তথ্য উঠে আসে। 

পরে কলকাতার গোয়েন্দা পুলিশকে নিয়ে সংসদ সদস্য আনারের দেহাংশের খোঁজে সঞ্জীভা গার্ডেনসের ফ্ল্যাটের কমোড, স্যুয়ারেজ লাইন ভেঙে অনুসন্ধান করা হয়। সেখানকার সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করা হয় মাংসের বেশকিছু টুকরো। তবে সেগুলো এমপি আনারের দেহাংশ কিনা, তা জানতে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। মাংসপিণ্ড উদ্ধার হলেও আনারের দেহের হাড় কিংবা মাথার অংশ এখনও উদ্ধার করতে পারেনি সিআইডি।  

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ওই ফরেন্সিক রিপোর্ট আসবে। তা পজিটিভ হলে সংসদ সদস্যের মেয়ে কিংবা এবং তার ভাইকে ডিএনএ প্রোফাইল ম্যাচিংয়ের জন্য ডাকা হবে। 

এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর