পুলিশ হেফাজতে বডি বিল্ডার মিস্টার বাংলাদেশ ফারুক হোসেনের মৃত্যুর ঘটনা হাইকোর্টের নজরে আনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আনা হয়।
বিজ্ঞাপন
বিষয়টি নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানভীর আহমেদ।
এসময় তিনি আদালতকে বলেন, পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনে বডি বিল্ডার মিস্টার বাংলাদেশ ফারুক হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া দরকার।
তখন হাইকোর্ট বলেন, আপনি রিট রেডি করে আসুন। আমরা রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) শুনব।
এর আগে বুধবার (৩১ জানুয়ারি) পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনে বডি বিল্ডার মিস্টার বাংলাদেশ ফারুক হোসেনের মৃত্যুর অভিযোগে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইনুল ইসলাম এবং একই থানার চার উপপরিদর্শকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
বিজ্ঞাপন
গত মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে ফারুকের স্ত্রী ইমা আক্তার হ্যাপী এ আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদেশ অপেক্ষমাণ রাখেন। পরে আদালত মামলার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে আগামী ২৮ মার্চের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়ে ডিবি পুলিশকে নির্দেশ দেন।
মামলায় ওসি ছাড়া আসামি করা হয়েছে— বংশাল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইমদাদুল হক, আবু সালেহ, মাসুদ রানা ও বুলবুল আহমেদকে।
মামলার অভিযোগে স্ত্রী ইমা আক্তার হ্যাপী বলেন, গত ১২ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে লালবাগের খাজা দেওয়ান সিং লেনের বাসা থেকে ব্যক্তিগত কাজে বের হন ফারুক হোসেন। এর এক ঘণ্টা পর ফারুক হোসেন স্ত্রী হ্যাপীকে ফোন দিয়ে জানান, তাকে সন্দেহজনকভাবে কায়েতটুলী ফাঁড়ির কতিপয় পুলিশ গ্রেফতার করে আটকে রেখে নির্যাতন করছে। দুই বছরের সন্তানকে কোলে নিয়ে তিনি সেখানে ছুটে যান। দেখেন, ফারুককে পুলিশ সদস্যরা মারধর করে আটকে রেখেছেন।
হ্যাপী সেখানে উপস্থিত এসআই ইমদাদুল হক, মাসুদ রানা, বুলবুল আহমেদসহ অন্যদের পা ধরে তার স্বামীকে ছেড়ে দেওয়ার আকুতি জানান। তখন ইমদাদুল হক তাকে বলেন, ফারুক অনেক বড় ক্রিমিনাল, তাদের গালিগালাজ করেছে। এমনিতে ছাড়া যাবে না। ওকে ছাড়তে হলে এক লাখ টাকা লাগবে।
তখন হ্যাপী জানান, তার স্বামী সিটি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শোয়েবের ব্যক্তিগত দেহরক্ষী। আগে বডি বিল্ডার ছিলেন মিস্টার বাংলাদেশ হিসেবে। তিনটি ছোট ছোট সন্তান, তার ইনকামেই সংসার চলে। তাকে ছেড়ে দিন।
পরে এক লাখ থেকে কমিয়ে তারা ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। তাকে কুপ্রস্তাব দেন। রাজি না হওয়ায় আসামিরা ফারুককে ব্যাপক মারধর করেন। তারা বলেন, ফারুক একজন মাদক ব্যবসায়ী। তারা কিছু করতে পারবে না। তাদের বড় স্যার জানে কী করবে। এর কিছুক্ষণ পর ফারুককে মোটরসাইকেলে করে বংশাল থানার দিকে নিয়ে যায়।
হ্যাপী তখন থানার ওসি মাইনুল ইসলামের হাত-পা ধরে আকুতি মিনতি করে স্বামীকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয় না। তারা তাকে পরদিন সিএমএম আদালতে যোগাযোগ করতে বলেন। পরদিন হ্যাপী কোর্টে যান স্বামীর খবর নিতে। সেখানে অনেক কষ্টে স্বামীর সাক্ষাৎ পান। স্ত্রীকে মারধরের কথা জানান ফারুক। তার কিছু হলে আদালতে বিচার চাইতে বলেন।
এআইএম/জেবি