মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

‘কর্মকর্তাদের সন্তানরা বিদেশে, তাই বায়ুদূষণ নিয়ে মাথাব্যথা নেই’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ০৬:৫৪ পিএম

শেয়ার করুন:

‘কর্মকর্তাদের সন্তানরা বিদেশে, তাই বায়ুদূষণ নিয়ে মাথাব্যাথা নেই’
ঢাকায় বায়ুদূষণ । ফাইল ছবি

পরিবেশ অধিদফতর ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে হাইকোর্ট বলেছেন, সন্তানরা বিদেশে থাকে, তাই দেশে‌র বায়ুদূষণ নিয়ে মাথাব্যথা নেই পরিবেশ অধিদফতর ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের। 

সোমবার (২৭ নভেম্বর) বায়ুদূষণ নিয়ে জারি করা রুলের শুনানির নির্ধারিত দিনে বায়ুদূষণে এ সপ্তাহেও আবারও শীর্ষে রাজধানী ঢাকা, গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ সম্পর্কিত সংবাদ নজরে আনলে এমন মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।


বিজ্ঞাপন


এ সময় ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে উচ্চ আদালতের ৯ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নের সময়সীমা বেঁধে দেন হাইকোর্ট। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশ অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার এ বিষয়ে এক আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

এর আগে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্ট যে আদেশ দেয় তাতে বলা হয়, পরিবেশ অধিদফতরের অনুমোদন ছাড়া চলমান টায়ার পোড়ানো ও ব্যাটারি রিসাইকেলিং বন্ধ। পাশাপাশি ঢাকার পাশের চার জেলা গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও মানিকগঞ্জে যেসব অবৈধ ইটভাটা সেগুলো বন্ধ করা, ঢাকায় বালু, ময়লা, বর্জ্য বহনের সময় বহনকারী ট্রাকসহ সংশ্লিষ্ট যানবাহনগুলো ঢেকে চলাচল করার ব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ নয় দফা নির্দেশ দেওয়া হয়।

high_court
হাইকোর্ট । ফাইল ছবি

আদেশের বিষয়টি জানিয়ে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ১৩ জানুয়ারি দেওয়া ৯ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হলে গত ফেব্রুয়ারিতে বায়ুদূষণ কিছুটা কমতে থাকে। তবে বর্তমানে ঢাকা শহর আবার সর্বোচ্চ বায়ুদূষণের শহর বলে গণমাধ্যমে এসেছে। তাই গণমাধ্যমের খবর যুক্ত করে ১৫ নভেম্বর আবেদনটি করা হয়। আবেদনের সঙ্গে যুক্ত গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বায়ু দূষণের যে বর্ণনা আছে, তা সবার জন্য উদ্বেগজনক ও পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণে আনা না হয়, তবে নাগরিকদের বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার খর্ব হতে পারে বলে আদালত পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।

‘ঢাকার বাতাসে নতুন বিপদ’ শিরোনামে ২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এটি যুক্ত করে এইচআরপিবির পক্ষে গত ২৭ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করা হয়। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি হাইকোর্টের অপর একটি দ্বৈত বেঞ্চ রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা দেন। এর ধারাবাহিকতায় ঢাকায় বায়ুদূষণ রোধে আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতিবিষয়ক শুনানিতে দূষণ রোধে কয়েক দফা নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদনকারী পক্ষ সম্পূরক একটি আবেদন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরে গত ১৩ জানুয়ারি হাইকোর্টের অপর একটি দ্বৈত বেঞ্চ কয়েক দফা নির্দেশনাসহ আদেশ দেন।

আইনজীবীর তথ্যমতে, ৯ দফার মধ্যে ঢাকা শহরে মাটি/বালু/বর্জ্য পরিবহন করা ট্রাক ও অন্যান্য গাড়িতে মালামাল ঢেকে রাখা; নির্মাণাধীন এলাকায় মাটি/বালু/সিমেন্ট/পাথর/নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা; সিটি করপোরেশন রাস্তায় পানি ছিটাবে; রাস্তা/কালভার্ট/কার্পেটিং/খোঁড়াখুঁড়ির কাজে দরপত্রের শর্ত পালন নিশ্চিত করা; সড়ক পরিবহন আইন অনুসারে গাড়ির চলাচল সময়সীমা নির্ধারণ ও উত্তীর্ণ হওয়া সময়সীমার পরে গাড়ি চলাচল বন্ধ করা; পরিবেশগত সনদ ছাড়া চলমান টায়ার ফ্যাক্টরি বন্ধ করা; মার্কেট/দোকানের প্রতিদিনের বর্জ্য ব্যাগে ভরে রাখা এবং বর্জ্য অপসারণ নিশ্চিত করতে সিটি করপোরেশনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা রয়েছে।

এআইএম/এমএইচএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর