শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

শেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগকে হেয় করবেন না: হাইকোর্ট

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:০১ পিএম

শেয়ার করুন:

শেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগকে হেয় করবেন না: হাইকোর্ট
২৮ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির বাসায় হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ছবি: সংগৃহীত

গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি মহাসমাবেশ চলাকালে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনার মামলায় জামিন শুনানিতে হাইকোর্ট বলেছেন, এটি একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগের হৃদপিণ্ড। তাঁর বাসভবনে হামলার অর্থই হলো বিচার বিভাগের হৃদপিণ্ডে আঘাত করা। এটা মেনে নেওয়া যায় না। বিচার বিভাগ মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল। তাই বিচার বিভাগকে হেয় করবেন না।

মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বিএনপির তিন শীর্ষ আইনজীবী নেতার জামিন শুনানির সময় বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মন্তব্য করেন।


বিজ্ঞাপন


আদালত শুনানির শুরুতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী তিন আইনজীবী নেতার জামিন প্রার্থনা করেন।

এসময় হাইকোর্ট বিএনপির আইনজীবীদের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগের প্রতীক। তার বাসভবনে ন্যাক্কারজনক হামলা করা হলো, আপনারা কি এর প্রতিবাদ করেছেন? কোনো নিন্দা জানিয়েছেন?

এ সময় অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস বলেন, আমরা সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছি। বিএনপির আইনজীবীদের সংবাদ সম্মেলন সম্পর্কিত পত্রিকার কাটিং আদালতের কাছে তুলে ধরেন।

‘প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা নাটকের অংশ বলে মনে করি’ বিএনপির আইনজীবীদের এই বক্তব্য উল্লেখ করে আদালত বলেন, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা আমরা নাটকের অংশ বলে মনে করি না। এটা ন্যাক্কারজনক ঘটনা। আপনারা একেকজন এক আদর্শের থাকতে পারেন। বাইরে রাজনীতি করতে পারেন। কিন্তু কোর্ট নিয়ে রাজনীতি করবেন না। জুডিশিয়ারি সবার। জুডিশিয়ারিকে মেলাইন (হেয়) করবেন না।


বিজ্ঞাপন


TTT

এ সময় জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, জুড়িশিয়ারিকে মেলাইন করার প্রশ্নই আসে না। জুডিশিয়ারি না থাকলে আমাদের অস্তিত্ব থাকবে না। ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, প্রধান বিচারপতিকে আমার জীবনের অংশ বলে মনে করি।

এ সময় হাইকোর্ট রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমীর কাছে তার বক্তব্য জানতে চান। কে এম মাসুদ রুমী বলেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ থেকে তাণ্ডব চালানো হয়েছে। বিচারপতির বাসভবনে হামলা করা হয়েছে। কিন্তু বিএনপির আইনজীবীরা এটাকে নাটকের অংশ বলে মন্তব্য করেছেন। তারা এঘটনার প্রতিবাদ জানাননি।

শুনানি শেষে আদালত বিএনপির তিন আইনজীবী আইন পেশায় তাদের অবদান, তাদের ব্যক্তিগত ইমেজ বিবেচনায় নিয়ে তিন সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। এই জামিন আদেশ অন্য মামলায় রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়।

জামিন পাওয়া তিন আইনজীবী হলেন, বিএনপি নেতা ও সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, মাহবুব উদ্দিন খোকন ও নিতাই রায় চৌধুরী। তিন সপ্তাহ পর তাদের ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে নিয়মিত জামিন নিতে হবে।

আইন পেশায় এই তিন আইনজীবীর অবদান বিবেচনা করে আদালত তাদের আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

এআইএম/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর