কারও কাছে মাদকদ্রব্য হিরোইন ২৫ গ্রাম পাওয়া গেলে আসামিকে ফাঁসি অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের কথা বলা হলেও পৌনে ৪ কেজি হিরোইনের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ। অভিযোগ উঠেছে আইনের কোনো তোয়াক্কা না করেই এসব মাদক মামলায় তাদেরকে জামিন দেওয়া হয়েছে। এটি আদালতের ন্যায় বিচারের ব্যত্যয় কী না তা উঠেছে নানা তর্ক-বিতর্ক।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি অবকাশকালীন বেঞ্চ এমন অন্তত ২০ টি মামলার আসামিকে জামিন দিয়েছেন। যেগুলোর আদেশ পরবর্তীতে চেম্বার আদালতে স্থগিত করা হয়েছে আজ।
বিজ্ঞাপন
এমন বিষয় বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে দেখা যায়। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এমন পরিস্থিতি দেখে রেগে যান। জানতে চান এত বড় পরিমানের হিরোইনের মামলায় কেন জামিন দেওয়া হয়েছে। এতো হিরোইনের মামলা কিভাবে এলো?
এসময় উন্মুক্ত আদালতে দাঁড়িয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন আদালতকে বলেন, হাইকোর্টের একটি অবকাশকালীন বেঞ্চ থেকে ২০ টি হিরোইনের মামলায় আসামিদের জামিন দেওয়া হয়েছে। পরে সব গুলো মামলায় আসামিদের জামিন স্খগিত করেছেন।
পরে আদালত থেকে বের হলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এমন জামিনের ঘটনা সাভাবিক নয়। তিনি বলেন, হাইকোর্টে ২৫ গ্রামের হিরোইনের মামলায় বেশি জামিন হয় না। দুই/একটি হলেও সেটি খুব রেয়ার ঘটনা।
আদালত আমার কাছে জানতে চান এতোগুলো মামলা কেন নিয়ে এসেছেন, তখন বললাম একটি আদালত থেকেই এতোগুলো জামিন দেওয়া হয়েছে। আরেকটি বেঞ্চের আদেশ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ৩ কেজি ৮ শ গ্রাম হেরোইনের মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে দশ বছরের সাজা দিয়েছেন বিচারপতি বদরুজ্জামান ও জাহিদ সরোয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।
বিজ্ঞাপন
কিন্তু শরিফুল নামের ওই আসামি দশ বছরের বেশি সময় কারাগারে থাকায় তাকে খালাস দেওয়া হয়।
এমন আদেশের বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, বিচারপতিদের এমন আদেশ দেওয়ার ক্ষমতাই নাই। আইনে আছে হয় মৃত্যুদণ্ড না হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিতে হবে। কিন্তু কিভাবে তারা দশ বছরের সাজা দিলেন? হাইকোর্টের এ রায়টি বৈধ হয়নি বলে আমরা মনে করি।
পরে আদালত আমাদের সাবমিশন শুনে সে আদেশটি স্থগিত করেছেন। মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইন-১৯৯০ এর ১৯ (১) ধারা বলছে ২৫ গ্রামের বেশি হেরোইনসহ কেউ গ্রেফতারের পর বিষয়টি প্রমানিত হলে তার সাজা হবে ফাঁসি অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তবে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত শরিফুলকে কনডেম সেল থেকে নরমাল সেলে আনা হয়।
এআইএম/একেবি

