বর্তমান চাকরির বাজারে যেকোনো ভালো প্ল্যাটফর্মে আবেদন করতে গেলে ই-মেইল করতে হয়। খুব সহজ এই কাজটিই করতে হয় গোছানো উপায়ে। ই-মেইলের কিছু শিষ্টাচার রয়েছে। কীভাবে একটি সুন্দর ও পরিপাটি মেইল লেখা যায় সে বিষয়ে চলুন বিস্তারিত জেনে নিই।
ফরমাল ছবি ব্যবহার করুন
বিজ্ঞাপন
একটি ই-মেইল এড্রেসে ছবি খুব গুরুত্ব বহন করে। ৫৫% ইমেইল চেক করা হয় না, যদি সেই ইমেইল এড্রেসে ব্যক্তির ছবি না থাকে। এখন কথা হচ্ছে কেমন ছবি দেবেন নিজের? সেলফি, জাকজমক পোশাক পরা ছবি, ক্যাজুয়াল ছবি ই-মেইলের ব্যবহার করা যাবে না। অবশ্যই মার্জিত ও পরিপাটি ছবি ই-মেইলে ব্যবহার করুন। কেননা ছবি দেখে প্রাপক আপনার ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা নেবেন।
নাম ও ঠিকানাও গুরুত্বপূর্ণ
ফরমাল ই-মেইল এড্রেসে অবশ্যই ফরমাল নাম ব্যবহার করুন। এঞ্জেল, রাতের তারা, বিগ বস, চিল বয় জাতীয় নাম একদমই ব্যবহার করা যাবে না। ইমেইল এড্রেসের নামটি হবে আপনার নামের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। যেমন- [email protected]/ [email protected]। চাইলে নামের সঙ্গে পেশার নাম ব্যবহার করতে পারেন। যেমন- [email protected]/ [email protected]।

বিজ্ঞাপন
To, Cc, Bcc এর ব্যবহার
To অংশটিতে যে ঠিকানায় ই-মেইল পাঠাতে চাইছেন সেই এড্রেসটি লিখবেন। এই অংশে একাধিক এড্রেস লিখলে তাদের কাছে আলাদা করে ই-মেইল যাবে।
CC বলতে Carbon Copy (কার্বন কপি) বোঝায়। ধরুন আপনি একজনকে মেইল করবেন। চাচ্ছেন আরও কিছু ব্যক্তিকে সেই তথ্য দিতে। এক্ষেত্রে বাকিদের CC তে মেইল করতে পারেন।
BCC বলতে Blind Carbon Copy (ব্লাইন্ড কার্বন কপি) বোঝায়। একই ম্যাসেজ অনেক জনকে যদি পাঠাতে চান এবং সবার কাছ থেকে অন্যদের ই-মেইল এড্রেস গোপন রাখতে চান তবে BCC ব্যবহার করুন। এতে সবার কাছেই মেইলটি যাবে এবং কেউ অন্য কারোর মেইল জানবে না।
আপনি ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মেইল করবেন ৫০ জন কে সেই ক্ষেত্রে আপনি BCC ব্যবহার করে মেইল কবেন
সম্ভাষণ গুরুত্বপূর্ণ
ফরমাল মেইলের ক্ষেত্রে সম্ভাষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ইংরেজিতে হাই বা হ্যালো লিখে কোনোভাবেই ই-মেইল শুরু করা যাবে না। যাকে ই-মেইল করছেন, তার গুরুত্ব বিবেচনা করে ‘ডিয়ার স্যার’ বা ‘ডিয়ার প্রফেসর’— এভাবে লিখতে পারেন। সঙ্গে যোগ করতে পারেন প্রাপকের নাম।
প্রাপকের নাম জানা না থাকলে শুধু ‘ডিয়ার স্যার’ লিখুন। বাংলায় লিখলে ‘জনাব...’ বা ‘প্রিয়...’ দিয়ে শুরু করতে পারেন।

বানান বা ব্যাকরণে যেন ভুল না হয়
ই-মেইল হুট করে পাঠাবেন না। লেখা শেষে ভালো করে বানান ও ব্যাকরণ পরীক্ষা করে নিন। ইংরেজি বা বাংলা যে ভাষাতেই ই-মেইল লিখুন না কেন শুদ্ধ বানান লেখা জরুরি। ভুল বানানের ই-মেইল হলে চাকরিদাতারা প্রথম ধাপেই আপনাকে অযোগ্য মনে করবেন। তাই এই ব্যাপারে সচেতন থাকুন।
মেনে চলুন এসব গাইডলাইন
কোনো মেইলের উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন ১-২ দিনের মধ্যেই উত্তর দেওয়া। অফিস সময়ের বাইরে অফিশিয়াল ঠিকানায় মেইল করবেন না। অনেক অফিস নির্দিষ্ট সময়ের পর মেইল চেক করে না। ই-মেইলের ভাষা যেন সহজ ও সুপাঠ্য হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। কম কথায় প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে চেষ্টা করবেন।

লেখার ফন্ট সবসময় ১২-১৪ ফন্ট রাখবেন। লেখা কখনোই Capital Letter ব্যবহার করবেন না। ই-মেইলে ভুলেও কোনো ধরনের Emoji /Symbol ব্যবহার করবেন না।
ই-মেইল লেখার সময় বিনা প্রয়োজনে কোনো বাক্য যোগ করবেন না। মেসেঞ্জারে চ্যাট করার সময় আমরা যেমন সংক্ষিপ্ত আকারে লিখি, যেমন- অ্যাসাপ, বিআরবি, এলওএল। এ ধরনের শব্দ না লেখাই ভালো। পূর্ণ শব্দ লিখুন। You লিখতে গিয়ে সংক্ষেপে U লিখবেন না।
ই-মেইল লেখা শেষে শুভেচ্ছা জানিয়ে দু-তিনটি শব্দ অবশ্যই লিখবেন। এছাড়া ই-মেইলের শেষে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজের নাম ও পরিচয়ের তথ্য যুক্ত করতে পারেন। ই-স্বাক্ষর যোগ করার উপায়ও ই-মেইলেই পেয়ে যাবেন। নাম, পরিচয়, প্রয়োজনে মুঠোফোন নম্বর ‘ই-স্বাক্ষর’ হিসেবে যুক্ত করুন।
সবমিলিয়ে একটি পরিচ্ছন্ন ই-মেইল তৈরি করুন। প্রাপক সেটি পেয়ে যেন বিরক্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
এনএম

