বৃহস্পতিবার, ২২ মে, ২০২৫, ঢাকা

প্রাথমিকে কোটাবিহীন শিক্ষক নিয়োগের বড় বিজ্ঞপ্তি আসছে

চাকরি ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ মে ২০২৫, ০২:২৬ পিএম

শেয়ার করুন:

primary teacher job circular 2025

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন এমন ব্যক্তিদের জন্য এসেছে সুখবর। শীগগিরই কোটাবিহীন বড় নিয়োগ আসছে প্রাথমিকের। নিয়োগের নতুন বিধিমালা চূড়ান্ত হলে আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতে পারে বলে জানা গেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে। এই নিয়োগে থাকবে না পোষ্য ও নারী কোটা। ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে এই নিয়োগ দেওয়া হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের এক কর্মকর্তা সম্প্রতি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আমরা কখনো পদের সংখ্যা উল্লেখ করি না। তাই কত পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আসবে, সেটা বলা ঠিক হবে না। তবে বর্তমানে সহকারী শিক্ষক পদে ৮ হাজার ৪৩টি শূন্য পদ রয়েছে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময় এই শূন্য পদ বেড়ে ১০ থেকে ১২ হাজার হতে পারে।’ 


বিজ্ঞাপন


‘এ ছাড়া সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের জন্য ৫ হাজার ১৬৬ সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। অপরদিকে প্রায় ৩০ হাজার সহকারী শিক্ষকের পদোন্নতির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের প্রক্রিয়া চলমান। তারা পদোন্নতি পেলে এসব পদেও নতুন করে সহকারী শিক্ষক নেওয়া হবে। তাই বলা যায়, সামনে যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে, সেখান থেকে বেশিসংখ্যক প্রার্থী নেওয়া হবে। আবেদনের সময় পদ বাছাই করে দেওয়ার সুযোগ পাবেন প্রার্থীরা।’— যোগ করেন তিনি। 

এই কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিকের ২০২৫ সালের নতুন বিধিমালায় কোটা থাকবে না। তবে বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের ২০ শতাংশ অগ্রাধিকার থাকবে।

নতুন নিয়োগ বিধিমালার অগ্রগতির নিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০২৫ অনুমোদনের জন্য বর্তমানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। ইতোমধ্যে এ বিধিমালা নিয়ে একটি বৈঠকও হয়েছে সেখানে। এখন সচিব কমিটির বৈঠক বাকি রয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে এরপর সেটি অর্থ মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় ও সরকারি কর্ম কমিশনে মতামতের জন্য পাঠানো হবে। বিধিমালা যেদিন প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করা হবে, তার পরদিনই আমাদের নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। আমরা সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

প্রাথমিকে বর্তমান কোটা 

বর্তমানে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯–এ সহকারী শিক্ষক পদে ৬০ শতাংশ নারী কোটা, ২০ শতাংশ পোষ্য কোটা ও ২০ শতাংশ পুরুষ কোটা রয়েছে। ২০২৫ সালের নতুন বিধিমালায় এই তিন কোটা থাকবে না। তবে বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের ২০ শতাংশ অগ্রাধিকার থাকবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্র অনুযায়ী, উচ্চ আদালতের রায় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন অনুসারে, সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরির সব গ্রেডে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে ৯৩ শতাংশ। কোটার ভিত্তিতে বাকি ৭ শতাংশ নিয়োগ হবে। 

প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদটি ১৩তম গ্রেডের। তাই এই পদের নিয়োগে ৭ শতাংশের বেশি কোটা রাখার সুযোগ নেই। ৭ শতাংশ কোটার মধ্যে থাকবে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানের জন্য ৫ শতাংশ; ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকদের জন্য ১ শতাংশ কোটা। বাকি ৯৩ শতাংশ নিয়োগ দেওয়া হবে মেধার ভিত্তিতে। 

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে ৯৩ শতাংশ নিয়োগের বিষয়ে আগেই জানিয়েছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। গত বছরের ৮ ডিসেম্বর খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে খুলনা বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, ‘প্রাথমিকে ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। থাকবে না কোনো পোষ‍্য কোটা।’

সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগীত ও শারীরিক শিক্ষাবিষয়ক প্রশিক্ষণ দিতে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতার বিষয়টিও নতুন নিয়োগ বিধিমালায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। নতুন বিধিমালা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশিত হলে এই পদে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে আর কোনো বাধা থাকবে না বলে জানান ওই কর্মকর্তা। 

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ক্লাস্টারের ভিত্তিতে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। একেকটি জেলা–উপজেলায় ২০ থেকে ২৫টি বিদ্যালয় মিলে একটি করে ক্লাস্টার হয়। এই হিসাব অনুযায়ী সারা দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট ক্লাস্টার রয়েছে ২ হাজার ৫৮৩টি। একটি ক্লাস্টারের জন্য একজন করে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষক নেওয়া হবে। ২০ থেকে ২৫টি বিদ্যালয়ের জন্য একজন করে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। ক্লাস্টারের হিসেবে দুটি পদ মিলে মোট ৫ হাজার ১৬৬ সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে সংগীত বিষয়ে ২ হাজার ৫৮৩ ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে ২ হাজার ৫৮৩ জন।

এনএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর