বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

প্রথম ভাইভাতেই চাকরি পাওয়ার উপায়

চাকরি ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ মে ২০২২, ০১:০০ পিএম

শেয়ার করুন:

প্রথম ভাইভাতেই চাকরি পাওয়ার উপায়

পরপর বেশ কয়েকটি চাকরির লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন রাকিব। ভাইভা বা মৌখিক পরীক্ষাও অংশ নিয়েছেন। তবুও চাকরি হয়নি। রাকিবের মতো এমন সমস্যার ভুক্তভোগী হয়েছেন অনেকেই। একটি চাকরির ক্ষেত্রে কেবল লিখিত পরীক্ষা নয়, ভাইভাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। 

শুনলে অবাক হবেন, ভাইভাতে একজন প্রার্থীর উত্তর বা কথার টপিক চাকরিদাতাকে ৫০ শতাংশের মতো প্রভাবিত করে। তাহলে বাকি অর্ধেক? চাকরিপ্রার্থীর মুখভঙ্গি, দেহভঙ্গি, আচরণ ইত্যাদিই গুরুত্ব দেন চাকরিদাতা। অর্থাৎ, কেবল পুঁথিগত বিদ্যায় ভালো হলেই চলবে না। একটি চাকরি পেতে অবশ্যই প্রার্থীকে আচরণগত বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দিতে হবে। তবেই তিনি সফল হবেন। 


বিজ্ঞাপন


interviewসময় মেনে চলুন 

ভাইভার সময় দেওয়া হলো সকাল ১০টা। বাসা থেকে সকাল ৯টায় বের হয়ে পড়েছেন জ্যামে। ভাইভা শুরু হওয়ার ২/৩ মিনিট আগে পৌঁছালেন নির্ধারিত স্থানে। হাঁপাতে হাঁপাতে প্রবেশ করলেন ভাইভা কক্ষে। এমনটা হলে কিন্তু চাকরিদাতা আপনাকে মোটেও পছন্দ করবেন না। তারা ধরে নেবে সময় সম্পর্কে আপনি মোটেও সচেতন নন। আর এমন কর্মীকে কেউ চান না। এছাড়া তাড়াহুড়া করায় আপনার আত্মবিশ্বাসও থাকবে কম। তাই সময় মেনে ভাইভা দিতে যান। 

মার্জিত পোশাক পরুন

কী পরিধান করেছেন তা দেখেই চাকরিদাতা আপনার রুচি সম্পর্কে ধারণা করবেন। হালকা রঙের মার্জিত পোশাক পরুন। পুরুষরা শার্ট-প্যান্ট পরুন। প্যান্টের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিন কালো, নেভি ব্লু বা অ্যাশ রঙকে। শার্ট পরুন সাদা বা হালকা আকাশি। ফুল হাতার শার্ট গুঁটিয়ে পরবেন না। 


বিজ্ঞাপন


নারীরা শাড়ি বা সেলোয়ার কামিজ পরতে পারেন। ওয়েস্টার্ন পোশাকও পরা যায়। তবে তা চাকরির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না তা খেয়াল রাখুন। থ্রি কোয়ার্টার বা ফুল হাতার ব্লাউজ পরুন। হালকা রঙের ও কম কাজের শাড়ি পরতে হবে। এক রঙা, চিকন পাড়ের সুতি শাড়ি পরতে পারেন। আঁচল ছেড়ে রাখা যাবে না। চাকরির ভাইভাতে মেকআপ না করেই যাওয়া ভালো। হালকা শেডের লিপস্টিক ব্যবহার করুন। পুরুষ ও নারী উভয়েই হাতে একটি ঘড়ি পরুন। হেয়ার স্টাইল মার্জিত রাখুন। 

interview
 আত্মবিশ্বাস নিয়ে বসুন 

চাকরিদাতার সামনে আপনি কীভাবে বসছেন এটিও কিন্তু বেশ উপকারি। কখনোই হাত গুটিয়ে ভাঁজ করে বসবেন না। বুকের কাছে হাত ভাঁজ করে রাখবে না। চেয়ারে পিঠ সোজা করে শান্তভাবে বসুন। চেয়ারের হাতলে দুই হাত মেলে রাখুন। কখনোই চেয়ারে হেলান দিয়ে আলসেমি ভঙ্গিতে বসবেন না। পায়ের পাতা রাখুন সোজা। এক পায়ের ওপর অন্য পা ভুলেও ওঠাবেন্ না। 

প্রশান্ত থাকুন 

টেনশন হচ্ছে বলে আপনি শার্টের বোতয়াম বা টাই নিয়ে টানাটানি করছেন বা একটু পরপর চুল ঠিক করছেন। এমন আঙ্গিক মুদ্রাদোষ কিন্তু চাকরিদাতা একদমই পছন্দ করেন না। ভাইভা দিতে গেলে প্রশান্ত থাকুন। চেয়ারে বসে ধীরে ধীরে শ্বাস নিন। এতে হার্টবিট নিয়ন্ত্রণে থাকবে। সুন্দরভাবে প্রশ্নের জবাব দিতে পারবেন। 

interviewহাতের ভঙ্গিমায় গুরুত্ব দিন 

ভাইভা বোর্ডে হাতের ভঙ্গি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। রোবটের মতো বসে থাকা যেমন উচিত নয়। তেমন অতিরিক্ত হাত নাড়ানোও ভালো নয়। হাত মুষ্টিবদ্ধ না রেখে তালু খুলে রাখুন। এটি বিশ্বস্ততার প্রতীক। কথোপকথনের সময় নিজেকে বোঝাতে হাতের তালু দিয়ে নিজের বুকের ডান পাশ স্পর্শ করুন। কথা না বললে, এক হাতের আঙুল অন্য হাতের আঙুলের ফাঁকে ঢুকিয়ে রাখতে পারেন। 

চোখে চোখ রেখে কথা বলুন 

প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে আপনি যদি নিচের দিকে তাকিয়ে থাকেন তবে তা চাকরিদাতার কাছে আপনার অক্ষমতা প্রকাশ করবে। তার চোখে চোখ রেখে কথা বলুন। একের অধিক ইন্টারভিউয়ার থাকলে সবার দিকে চোখ ঘুরিয়ে কথা বলতে হবে। যিনি প্রশ্ন করেছেন তার দিকে বেশি তাকান। চোখে চোখ রেখে কথা বলা আত্মবিশ্বাস ও বিশ্বস্ততার প্রতীক। 

interviewহাসিমুখে থাকুন 

ভাইভা দিতে গেলে অবশ্যই মুখে স্মিত হাসি ধরে রাখুন। প্রশ্নের উত্তর হাসিমুখে দিতে চেষ্টা করুন। কোনো প্রশ্নের উত্তর না পারলেও সেটিও হাসিমুখে ভদ্রভাবে জানান। চাকরিদাতা প্রার্থী মুখভঙ্গিকে গুরুত্ব দিয়ে খেয়াল করেন। 

মার্জিত ভাষায় কথা বলুন 

ভাষাগত কোনো মুদ্রাদোষ থাকলে তা আগেই কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করুন। কথা বলতে গেলে আঞ্চলিকতার টান আসলে তা এড়িয়ে চলুন। প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে খুব তাড়াহুড়া করবেন না। আবার আমতা আমতা করে অনেক সময়ও নেবেন না। শ্রুতিমধুর লাগবে এমন ভাষায় কথা বলতে চেষ্টা করুন। 

interviewকর্মক্ষেত্র সম্পর্কে ধারণা রাখুন 

ভাইভা দিতে যাওয়ার আগে কোম্পানি সম্পর্কে এবং যে পদের জন্য আবেদন করেছেন তা সম্পর্কে ধারণা নিয়ে রাখুন। এ সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে আপনার ভাবনা এবং পরিকল্পনা জানান। এতে চাকরিদাতা বুঝবেন যে কোম্পানি ও কাজের প্রতি আপনার আগ্রহ রয়েছে। 

মিথ্যার আশ্রয় নিবেন না

নিজেকে যোগ্য প্রমাণ করতে মিথ্যার আশ্রয় নেবেন না। ভুল তথ্য প্রদানে চাকরি হলেও পরবর্তীতে সত্য সামনে এলে আপনাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হবে। সঙ্গে চাকরিও চলে যেতে পারে। তাই মিথ্যা এড়িয়ে চলুন। 

চাকরির ভাইভাতে গিয়ে ভয় না পেয়ে আত্মবিশ্বাস বজায় রাখুন। মার্জিত আচার ব্যবহার করুন। সৌজন্যবোধ বজায় রাখুন। যোগ্য কর্মী হিসেবে চাকরিদাতা এমন প্রার্থীকেই পছন্দ করেন। 

এনএম/এজেড

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর