শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

‘ভোটাধিকার প্রয়োগ করে ঋণ শোধ করবে মানুষ’

কাজী রফিক
প্রকাশিত: ০৪ এপ্রিল ২০২৩, ০৫:২০ পিএম

শেয়ার করুন:

‘ভোটাধিকার প্রয়োগ করে ঋণ শোধ করবে মানুষ’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজের জীবন দিয়ে এ দেশের মানুষকে ভালোবেসেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর পর তার কন্যা শেখ হাসিনা একই পথ অনুসরণ করছেন। কাজ করে চলেছেন এ বাংলার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে৷ আগামী নির্বাচনে দেশের মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকন্যার ভালোবাসার ঋণ শোধ করবে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। সম্প্রতি ঢাকা মেইলকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকার তিনি এসব কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ঢাকা মেইলের স্টাফ রিপোর্টার কাজী রফিক।

ঢাকা মেইল: আগামী নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপিকে নিয়ে আপনার ভাবনা কি?


বিজ্ঞাপন


আমিনুল ইসলাম: আমরা তো অবশ্যই চাই বিএনপি নির্বাচনে আসুক। আওয়ামী লীগ তো কখনোই খালি মাঠে গোল দিতে চায় না। আমরা তো ক্ষমতার বাইরে থেকে রাজনৈতিক দল গঠন করেছি। প্রচণ্ড ক্ষমতাধর মুসলিম লীগ ছিল রাষ্ট্র ক্ষমতায়, মুসলিম লীগ কারা করতেন? এই সমাজের সবচেয়ে প্রভাবশালী অভিজাত জোতদার শ্রেণি যারা তারা। তাদের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু প্রজাদের নিয়ে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করলেন, নাম দিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সেই প্রজাদেরকেই বঙ্গবন্ধু পরবর্তীতে তাদের অধিকার আদায়ের মাধ্যমে রাজায় পরিণত করে। সেই তথাকথিত সামন্ত প্রভুদের পরাজিত করে আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে আওয়ামী লীগই এই জনপদের সাধারণ মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করা সত্যিকারের রাজনৈতিক দল। সুতরাং আমি মনে করি বিএনপি যদি মনে করে তারা মানুষের ওই আস্থার জায়গায় আছে তাহলে তারা নির্বাচনে আসুক। এটা ভাবার কোনো কারণ নাই যে ওরা আসলে আমরা ভয় পাব।

ঢাকা মেইল: নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপিকে নিয়ে আওয়ামী লীগ কি কোনো কারণে ভীত?

আমিনুল ইসলাম: ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত এক ছিল এবং জামায়াতের নেতা যারা মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত হয়েছে, ফাঁসিতে ঝুলেছে, তারাও জীবিত ছিল। তাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রেখে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মহাজোটকে সাথে নিয়ে ৩০০ আসনে ২৬২ আসনে জয়লাভ করেছিল। তারা পেয়েছিল মাত্র ২৯টা আসন, জামায়াত পেয়েছিল দুটি আসন। তাহলে আওয়ামী লীগ গত ১৪ বছরে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ, অর্থনীতি, কৃষি, সামাজিক সূচকের প্রতিটি ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করার পরে তাদেরকে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ আছে বলে মনে করি না। বরং আমি মনে করি আমরা আরো ভালো রেজাল্ট করব।

ঢাকা মেইল: আগামী নির্বাচনে জনগণের কাছে আপনাদের প্রত্যাশা কি?


বিজ্ঞাপন


আমিনুল ইসলাম: আমি বরাবরই এই দেশের মানুষের প্রতি আস্থাশীল। তারা কখনোই বেঈমানি করে না। বেঈমানি করে না বলেই ৭৫-এ বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের ২১ বছর পর, মুজিবের বাংলায় নিষিদ্ধ করার পরও ১৯৯৬ সালে এদেশের মানুষ আবার বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে ভোট দিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেছিল। এদেশের মানুষকে বঙ্গবন্ধু প্রাণ দিয়ে ভালোবেসে ছিলেন। ঠিক তার মতো তার কন্যা এদেশের মানুষের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সুতরাং আমি মনে করি আগামী নির্বাচনে এই মানুষগুলো আধুনিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ চতুর্থবারের মতো তাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করে দেশের উন্নয়ন অভিযাত্রা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে নৌকায় ভোট দেবেন। দেশের মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকন্যার ভালোবাসার ঋণ শোধ করবে।

ঢাকা মেইল: বাজারে নিত্যপণ্যের চড়া দাম। এ বিষয়ে কি বলবেন?

আমিনুল ইসলাম: দেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি অস্বীকার করার সুযোগ নেই। সেটা আমরা করছিও না। আবার আপনি যখন কোভিডপরবর্তী ধাক্কা সামলাতে না সামলাতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভয়াবহতায় বিশ্ব অর্থনীতির দিকে নজর দেবেন, দেখবেন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বহুগুণ বাড়েনি এমন কোনো দেশ পাবেন না। দুনিয়ার অন্য দেশের বাজারের সাথে বাংলাদেশের তুলনা করলে দেখবেন আমরা অনেক দেশের তুলনায় ভালো আছি। তার মানে এই নয় যে দেশের সব মানুষ খুব ভালো আছে। অনেকে কষ্টে আছে। এই সরকার মানুষের পাশে আছে বলেই মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য টিসিবির মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রির ব্যবস্থা করেছে। অন্যদিকে বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযানও চলমান। অর্থাৎ সরকার বসে নেই। সাধারণ মানুষের কল্যাণে অব্যাহতভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

ঢাকা মেইল: আওয়ামী লীগের গত ১৩ বছরের কার্যক্রমকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?

আমিনুল ইসলাম: আমরা শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়নেই সীমাবদ্ধ নই। সামগ্রিকভাবে দেশকে একটা শক্ত অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে চাই, যাতে ২০৪১ সালের মধ্যেই উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মেলাতে পারি। তাই পরিকল্পিত পথে এগোচ্ছে সরকার। গত ১৪ বছরে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর দিকে নজর দিলে তা স্পষ্ট প্রতীয়মান হবে। যেমন ধরুন, ২০০৯ সালের আগে শুধু ৪১ ভাগ মানুষই বিদ্যুতের আওতায় ছিল, তাও লোডশেডিং ছিল ১৪-১৫ ঘণ্টা। এখন শতভাগ মানুষ বিদ্যুতের আওতায়, যদিও শতভাগ মানুষ ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছে না, মাঝে মাঝে একটু লোডশেডিং হচ্ছে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ প্রায় প্রতিটি সেক্টরে উন্নয়ন ও অগ্রগতি দৃশ্যমান। নানান সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় গ্রামীণ দরিদ্র মানুষের জীবনে লেগেছে স্বচ্ছলতার ছোঁয়া। গ্রামীণ অর্থনীতি হয়েছে অনেক শক্তিশালী। যে কারণে আজ আমেরিকার কংগ্রেসে বাংলাদেশের অসামান্য উন্নয়নের স্বীকৃতি নিয়ে বিল পাশ হয়। সারা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোলমডেল।

ঢাকা মেইল: ঢাকা মেইলকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

আমিনুল ইসলাম: ঢাকা মেইল ও আপনাকেও ধন্যবাদ।

কারই/জেএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর