শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

‘নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট হতে পারে মহামারির সমাধান’

মাহফুজ উল্লাহ হিমু
প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯:৪৯ এএম

শেয়ার করুন:

‘নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট হতে পারে মহামারির সমাধান’

অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ। দেশের একজন প্রথিতযশা চিকিৎসক ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ। কর্মজীবনে দীর্ঘ সময় তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক এবং সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শুরু থেকেই গণমাধ্যমে মহামারির গতিবিধি, করণীয় নিয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে কাজ করে আসছেন এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

মহামারির দুই বছর, বর্তমান সার্বিক অবস্থা, সংক্রমণের দেশীয় ও বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা মেইলের সঙ্গে কথা বলেছেন অধ্যাপক বেনজির আহমেদ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মাহফুজ উল্লাহ হিমু


বিজ্ঞাপন


ঢাকা মেইল: করোনার নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট কী স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে?

অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ: যদি আমরা ওমিক্রনের কথা বলি, তাহলে একদিকে অনেক লোক আক্রান্ত হয়েছে। পাশাপাশি এটি এত মারাত্মকও ছিল না। ওমিক্রনে হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যু ঘটনা অনেক কম ছিল। আবার যেহেতু অল্প সময়ে অনেক লোক আক্রান্ত হয়েছে, সুতরাং মানুষের মধ্যে রেজিস্টেন্স ডেভেলপ করেছে এবং দ্রুতই এর প্রকোপ কমে যাবে। সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ রকম ঘটনা ঘটেছে। অর্থাৎ এটা মানুষের মধ্যে এক ধরনের প্রটেকশন তৈরি করছে। যাতে হয়তো মহামারির একটি সমাধান দেখা দিতে পারে। এতে ঝুঁকি কমছে বলা যায়।

ঢাকা মেইল: সর্বশেষ গবেষণায় দেখা গেছে, নতুন করে করোনায় আক্রান্তদের শতকরা ৮২ ভাগই ওমিক্রনে আক্রান্ত, বাকিরা ডেল্টায়। এক্ষেত্রে নতুন ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে পুরাতন ভ্যারিয়েন্ট কী হারিয়ে যাচ্ছে?

অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ: যেহেতু ওমিক্রন অনেক দ্রুত ছড়ায় তাই এটিই বেশি সংক্রমণ ঘটাচ্ছে। আর কেউ যদি একটা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়, তাহলে তার পক্ষে অপর ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়া সম্ভব না। স্বাভাবিকভাবেই ওই ভ্যারিয়েন্টগুলো পেছনে পড়ে যায়। যেমন আগে ইউকে ভ্যারিয়েন্ট, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট করেছিল, এখন ওমিক্রনও তাই করছে। সুতরাং ওই ভ্যারিয়েন্টগুলো আর বেশি থাকবে না। হয়তো কোনো ভ্যারিয়েন্টই বেশি সংক্রমণ করবে না।


বিজ্ঞাপন


ঢাকা মেইল: সারা বিশ্বে টিকা কার্যক্রম চলমান থাকলেও এত আক্রান্ত ও মৃত্যুর কারণ কী?

অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ: এর মূল কারণ সেখানকার গড় বয়স অনেক বেশি। ৮০ এবং ৯০ বছরের বেশি অনেক মানুষ রয়েছে। যা আমাদের মতো উন্নয়নশীল বা স্বল্পোন্নত দেশে নেই। যেহেতু তাদের অনেক লোক বেশি বয়স্ক। এজন্য তাদের মৃত্যুটাও অধিক হচ্ছে।

ঢাকা মেইল: দীর্ঘমেয়াদী এই চাপ নিতে দেশের স্বাস্থ্যখাত কতটুকু প্রস্তুত বলে মনে করেন?

অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ: এখান থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া দরকার। প্রথমত, রোগ প্রতিরোধে আমাদের সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে। রোগ প্রতিরোধে সক্ষম হলে আমাদের হাসপাতালের ওপর চাপ কমবে। দ্বিতীয়ত, আমাদের হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে। আমরা দেখছি, হাসপাতালগুলো অনেক সময় চাপ সামলাতে পারছে না। আমাদের এখানে অক্সিজেনের সমস্যা ছিল, আইসিইউর সমস্যা এখনও আছে। এসব খাতে উন্নয়ন সাধন করতে হবে। যেন ভবিষ্যতে আমরা এ ধরনের অন্য কোনো পরিস্থিতির জন্য সর্বদাই প্রস্তুত থাকতে পারি। এছাড়াও এই খাতগুলোতে উন্নয়ন হলে আমাদের দীর্ঘমেয়াদী সেবার মান বাড়বে। 

এমএইচ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর