বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

‘ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যকলাপে ঢাবির সাধারণ ছাত্ররা জিম্মি’

মো. ইলিয়াস
প্রকাশিত: ০৩ জুন ২০২২, ০৪:৩১ পিএম

শেয়ার করুন:

‘ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যকলাপে ঢাবির সাধারণ ছাত্ররা জিম্মি’
ছবি: ঢাকা মেইল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢবি) শাখা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যকলাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্ররা জিম্মি হয়ে আছে বলে দাবি করে শিক্ষার্থীদের এই দশা থেকে মুক্ত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ঢাবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব আমানুল্লাহ আমান। ঢাকা মেইলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন স্টাফ রিপোর্টার মো. ইলিয়াস।

ঢাকা মেইল: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ-ছাত্রদল দীর্ঘদিন সহ-অবস্থানে থাকলেও সম্প্রতি পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার কারণ কী?


বিজ্ঞাপন


আমানুল্লাহ আমান: গত আড়াই বছরে ছাত্রদল শিক্ষার্থীবান্ধব নানা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। সাম্প্রতিক সময়েও শিক্ষকদের নির্যাতনের প্রতিবাদে সোচ্চার, এমনকি কর্মসূচিও পালন করেছি আমরা। সেই ধারাবাহিকতায় প্রতিনিয়তই আমাদের প্রোগ্রামের পরিধি বাড়ছিল। এসব দেখে ছাত্রলীগ প্রতিহিংসাপরায়ণ ও আতঙ্কগ্রস্ত হয় যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল এখন সুদৃঢ় হচ্ছে। যার কারণে ছাত্রদলকে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করার জন্য তারা এই প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে।

ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে ছাত্রলীগের নীলনকশার অংশ হিসেবে মিথ্যা ব্লেম দিয়ে ছাত্রদলকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করছে। আমরা আমাদের অধিকারের প্রশ্নে আপসহীন। আমরা মনে করি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে হলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের কাছে সাধারণ ছাত্ররা জিম্মি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই জিম্মি দশা থেকে মুক্তি করার জন্য আমরা ক্যাম্পাসে যাব, ইনশাআল্লাহ।

ঢাকা মেইল: ছাত্রলীগ বলছে- ছাত্রদলকে ক্ষমা চাইতে হবে, এ বিষয়ে কী বলবেন?

আমানুল্লাহ আমান: ছাত্রদলের পক্ষে এরকম কী বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, তারা তা স্পষ্ট করে এখনও বলতে পারেনি যে- ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের কোনো বক্তব্যে তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে ছাত্রদলকে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করার জন্য এটা তাদের গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এটা একটা উড়ন্ত কথা, আর কার কাছেই বা ক্ষমা চাইবে?


বিজ্ঞাপন


ঢাকা মেইল: ছাত্রলীগ বলছে- ক্যাম্পাসে ছাত্রদলকে ঢুকতে দেওয়া হবে না, এ ব্যাপারে আপনাদের কী পদক্ষেপ?

আমানুল্লাহ আমান: ছাত্রদলকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হবে না এই সিদ্ধান্ত ছাত্রলীগের হাতে ন্যস্ত করা হয়নি। এটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিষয়। তাদের (ছাত্রলীগ) হাতে যে অস্ত্র ছিল, এটা মিডিয়ার কল্যাণে দেশবাসী দেখেছে। ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম জনপ্রিয় একটি সংগঠন। ছাত্রদল ক্যাম্পাসে ঢুকবে কি না এটা ছাত্রলীগ বলার কোনো অধিকার রাখে না। আমরা ক্যাম্পাসে গেলে যদি কোনো বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় এর দায়-দায়িত্ব ছাত্রলীগকে নিতে হবে। কারণ হুমকি-ধামকি তাদের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে।

অবশ্যই আমরা ক্যাম্পাসে যাব। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আমাদের কর্মসূচি চলছে, এছাড়া ছাত্রদলের বেশকিছু নেতা গুরুতর আহত হয়েছেন, আমাদের নামে এ পর্যন্ত চারটি মামলা হয়েছে। আমাদের অক্ষরে অক্ষরে চ্যালেঞ্জ থাকে, অন্য কোনো সংগঠন মতো আমাদের সংগঠন নয়। ক্যাম্পাসে কে থাকবে, কে থাকবে না, এটা ছাত্রলীগ নির্ধারণ করার কে? বরং ভবিষ্যতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের (ছাত্রলীগ) অব্যাহত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর যে নিপীড়ন চালায় সে জন্য সাধারণ শিক্ষার্থী ছাত্রলীগকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেবে সেটাও ‘দুঃখের’ বিষয়।

ঢাকা মেইল: ক্যাম্পাসে ঢোকার জন্য প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে কি না?

আমানুল্লাহ আমান: হ্যাঁ অবশ্যই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর স্যারের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, তিনি জয়-লেখকদের ভাষায় কথা বলেন। তার ওপর যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের অভিভাবক। তার কাছ থেকে আমরা সে অভিভাবকের আচরণই আশা করি। অন্যান্য সংগঠনকে যে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকেন আমরা আশা করব ছাত্রদলকেও সেই একই সুযোগ-সুবিধা দেবেন।

ঢাকা মেইল: ছাত্রলীগ বলছে- ছাত্রদল ‘বহিরাগত’ এ জন্য সাধারণ ছাত্ররা তাদের প্রতিহত করেছে এ বিষয়ে কী বলবেন?

আমানুল্লাহ আমান: ছাত্রলীগ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মাঝেমধ্যেও কোনো সত্য কথা বলে না। বলা হচ্ছে- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক ৮-৯ সেশনের শিক্ষার্থী। আমি ৯-১০ সেশনের। যদি ছাত্রলীগ সভাপতি সাধারণ সম্পাদক শিক্ষার্থী হয় তাহলে আমি বহিরাগত হলাম কীভাবে? যদি ৮-৯ সেশনের ছাত্রলীগের নেতারা ক্যাম্পাসে থাকতে পারে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের রুম দখল করে, আর আমরা এক ঘণ্টা মধুর ক্যান্টিন অবস্থান করি। তাহলে আমরা এক ঘণ্টা অবস্থান করি এটা কী শিক্ষার্থীদের সমস্যার কারণ, না কি যারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের রুম দখল করে আছে তারা শিক্ষার্থীদের সমস্যার কারণ? তারা শিক্ষার্থীদের শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। তাদের বিরোধিতার ভাষায় হচ্ছে মিথ্যে।

ঢাকা মেইল: সংঘর্ষের ঘটনায় আপনারা মামলা করেছেন কি না?

আমানুল্লাহ আমান: মামলা একটি হয়েছে। এছাড়া আরও যারা গুরুতর অসুস্থ, তারা সুস্থ হলে আরও একাধিক মামলা হবে।

ঢাকা মেইল: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

আমানুল্লাহ আমান: আপনাকেও ধন্যবাদ।

এমই/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর