শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

‘এখানে একটা পুস্কনি ছিল, সেটাই এখন জাতীয় ঈদগাহ’

আমিনুল ইসলাম মল্লিক
প্রকাশিত: ২৯ এপ্রিল ২০২২, ০৪:৩৪ পিএম

শেয়ার করুন:

‘এখানে একটা পুস্কনি ছিল, সেটাই এখন জাতীয় ঈদগাহ’
মোজাম্মেল হক ৪০ বছর ধরে জাতীয় ঈদগাহ প্রস্তুতির কাজ করছেন। ছবি: ঢাকা মেইল

প্রতি বছর সুপ্রিম কোর্টের পাশে জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার প্রধান জামাত হয়ে থাকে। রাষ্ট্রপতি, ঢাকার মেয়রসহ ভিভিআইপিরা এই জামাতে অংশ নেন। তবে করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছরে চারটি ঈদের জামাত জাতীয় ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হয়নি। এবার করোনার প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকায় প্রধান জামাত জাতীয় ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হবে। এখানে ঈদ জামাতের সর্বশেষ প্রস্তুতি চলছে।  

প্রায় ৪০ বছর ধরে এই ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুতের কাজ করছেন মোজাম্মেল হক। তিনি পিয়ারু অ্যান্ড সন্স নামের একটি ডেকোরেটরের ব্যবস্থাপক। জাতীয় ঈদগাহের মাঠের ইতিহাস এবং এখানকার ঈদ জামাতের নানা প্রস্তুতি নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে।

ঢাকা মেইল: কতদিন যাবত এই মাঠের কাজ করছেন?

মোজাম্মেল হক: মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের জন্য প্রায় ৪০ বছর হলো জাতীয় ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুতের কাজ করছি। এর মধ্যে ১৫ বছর যাবত সরাসরি কাজ করছি। তার আগেও এই মাঠের জন্য কাজ করেছি। আমাদের পিয়ারু অ্যান্ড সন্স ডেকোরেটরের আগে অন্যরা কাজ করতেন, তখনও আমি জড়িত ছিলাম কাজের সঙ্গে।

ঢাকা মেইল: ঈদগাহ মাঠের শুরুটা কীভাবে?

মোজাম্মেল হক: ১৯৭৭-৭৮ সালে দেখেছি, এই জায়গায়টি ছিল ছোট একটি পুস্কনি (পুকুর)। এখানে পুলিশ সদস্যরা ট্রেনিং করতেন। আমি দেখেছি এই পুস্কনিতে ট্রেনিং করতে এসে দুই পুলিশ সদস্য মারা যান। আর এই মাঠে (জাতীয় ঈদগাহ) ওরস বসত মাজারের। ওরসে এসে সবাই ঢোল তবলা বাজাতো। পরে এরশাদ সাহেব ক্ষমতায় আসার পর জাতীয় ঈদগাহ বানান। সেই থেকে সবাই এই ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল-ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন।


বিজ্ঞাপন


01

ঢাকা মেইল: ব্যবসায়িক কারণে নাকি উৎসবে শামিল হতে এখানে সময় দেন?

মোজাম্মেল হক: ব্যবসার চেয়ে নিজের আবেগটাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে ঈদগাহ ময়দানের কাজ করি। অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলমান এখানে নামাজ আদায় করবেন। আমিও একজন মুসলিম, নিজেও নামাজ আদায় করি। এগুলো যেমন ধর্মীয় ব্যাপার পাশাপাশি উৎসব। আমি আমার ধর্মীয় অনুভূতি ও উৎসবকে সামনে রেখেই আবেগ দিয়ে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের জন্য কাজ করি।

ঢাকা মেইল: এবারের প্রস্তুতি কেমন?

মোজাম্মেল হক: গত ৫ এপ্রিল থেকে জাতীয় ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুত করছি আমরা। আমাদের পিয়ারু অ্যান্ড সন্স ডেকোরেটরের হাজারো শ্রমিক এখানে পরিশ্রম করছেন। ৫ এপ্রিল থেকে প্রতিদিন ১৫০ জন করে শ্রমিক কাজ করেছেন ময়দান প্রস্তুত করতে। শেষের দিকে কাজ করেছেন ১০০ জন করে। দুই/একদিনের মধ্যেই আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত করতে পারবো ঈদগাহ ময়দান।

ঢাকা মেইল: কত মানুষ নামাজ আদায় করবেন এখানে?

মোজাম্মেল হক: এবার ময়দানের ভেতরে পুরুষ ও নারী মিলে প্রায় ৯০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করবেন। এর মধ্যে পৃথক করে নারীদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিগত বছরের তুলনায় এবার প্রবেশপথের সংখ্যা আরও বাড়ানো হয়েছে। বৃষ্টির শঙ্কা থাকায় মাঠের দুই লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি বর্গফুট জায়গাজুড়ে সামিয়ানা ও বৃষ্টি প্রতিরোধক ত্রিপল দেওয়া হবে।

02

ঢাকা মেইল: মুসল্লিদের সুবিধার জন্য এবার কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?

মোজামম্মেল হক: গরম থেকে আরামের জন্য লাগানো হয়েছে ১০টি বড় এয়ারকুলার (শীতল বাতাসের জন্য) ফ্যান, স্ট্যান্ড ফ্যান ১৫০টি, ৫০৫০টি সিলিং ফ্যান। মুসল্লিদের নামাজের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য বসানো হয়েছে আইনশৃঙ্খলার নিরাপত্তা চৌকি। র‌্যাব-পুলিশ গোয়েন্দা সংস্থার জনবল কাজ করবেন সার্বক্ষণিক। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুরো ময়দান লাগানো হবে সিসি ক্যামেরা। বিস্ফোরক দ্রব্য আছে কি না তা দেখার জন্য প্রবেশপথে থাকবে মেটাল ডিটেক্টর। নিরাপত্তার জন্য বিশেষ বাহিনীর সাথে থাকবে ডগ স্কোয়াড, মোবাইল ওয়াচ টাওয়ার, মোবাইল কমান্ড সেন্টার, বোম ডিসপোজাল ইউনিট। র‌্যাব ও পুলিশের আলাদা দুটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।

 এআইএম/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর