শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

‘মার্কেটে মাল টানছে না, ব্যবসা খারাপ’

আমিনুল ইসলাম মল্লিক
প্রকাশিত: ২৩ এপ্রিল ২০২২, ১২:০৯ পিএম

শেয়ার করুন:

‘মার্কেটে মাল টানছে না, ব্যবসা খারাপ’
তাঁত ব্যবসায়ী হাজী মো. আবু রায়হান

বাঙ্গালীর পুরোনো ঐতিহ্য শাড়ী, লুঙ্গী, গামছা। ঈদ, পূজা-পার্বণ, পহেলা বৈশাখসহ নানা অনুষ্ঠানে এগুলোর ব্যবহার বেড়ে যায়। এসব উৎপাদনে রং-সুতা, কসটিক সোডা, হাইড্রোজ সোডিয়ামসহ অনেক উপকরণের প্রয়োজন হয়। যেগুলোর দাম এখন অনেক বেশি। ফলে দাম বেড়েছে শাড়ি লুঙ্গির, কমেছে চাহিদা। তাই অন্যান্য বারের তুলনায় এবারের ঈদে তাঁত ব্যবসায়ীদের দুশ্চিন্তা বেড়েছে। এ বিষয়ে ঢাকা মেইলের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন সিরাজগঞ্জের তালুকদার কটেজের মালিক তাঁত ব্যবসায়ী হাজী মো. আবু রায়হান।      

ঢাকা মেইল:  শাড়ি-লুঙ্গি উৎপাদন কেমন করছেন?
হাজী মো. আবু রায়হান: খুব একটা ভালো না। রং-সুতাসহ শাড়ি লুঙ্গি উৎপাদনের সব উপকরণের দাম বেড়েছে। ২০২১ সালের মাঝামাঝি থেকে এসব জিনিসের দাম বৃদ্ধি এজন্য ব্যবসা ভালো না। রং-সুতার দাম আগের চেয়ে বেড়েছে। সুতার দাম আগে ছিল একশত্রিশ টাকা পাউন্ড (পঞ্চাশ সুতা)। সেটি বৃদ্ধি এখন হয়েছে তিনশ টাকা পাউন্ড। আশি সুতার দাম বেড়ে হয়েছে তিনশ আটত্রিশ টাকা পাউন্ড। আর রংয়ের দাম বেড়েছে অনেক। আগে যে রং ছিল চারহাজার টাকা কেজি, এখন সেটি সাত হাজার টাকা কেজি দরে কিনতে হয়। 


বিজ্ঞাপন


ঢাকা মেইল: দাম বাড়লো কেন?
হাজী মো. আবু রায়হান: সঠিক জানি না। তুলার দাম বেশি, নাকি ডলারের দাম বেশি। নাকি সিন্ডিকেট এসবের দাম বাড়িয়েছে তা জানি না। 

tat

ঢাকা মেইল: রং-সুতা বাদে অন্যান্য জিনিসের দাম কেমন?
হাজী মো. আবু রায়হান: মেডিসিন কষ্টিংয়ের দাম আগে ছিল ২২শ টাকা বস্তা। এখন হয়েছে ৩৮শ টাকা বস্তা। শ্রমিকের মজুরি আগের চাইতে একটু বেশি। বিদ্যুত বিল বেশি। এসব মাল উৎপাদনে সব উপকরণের দাম বেশি। আগে সাধারণ মানুষ পড়ার জন্য একটি লুঙ্গি কিনত ২শ টাকা দিয়ে সেটি এখন কিনতে হয় ৩শ টাকা দিয়ে। কিন্তু এতেও আমাদের তেমন লাভ হয় না। আগে যে লুঙ্গিগুলো ৬শ টাকা থান বিক্রি করেছি। সেগুলো এখন ১ হাজার টাকা বিক্রি করলে আমাদের জান বাঁচে না। 

ঢাকা মেইল: দাম বৃদ্ধির বিষয়টি কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরেছেন?
হাজী মো. আবু রায়হান: এগুলোর দাম বৃদ্ধি নিয়ে আমরা অনেক আলোচনা-সমালোচনা করেছি। কিন্তু  আমাদের বক্তব্য কোনো মিডিয়া তুলে ধরেনি। 


বিজ্ঞাপন


ঢাকা মেইল: বর্তমানে ব্যবসার পরিস্থিতি কেমন? 
হাজী মো. আবু রায়হান: প্রত্যেকটা মহাজনের ব্যবসা খারাপ। প্রত্যেক মহাজন ও তাঁতী ক্ষতিগ্রস্থ। ব্যবসবার অবস্থা ভালো না।  

ঢাকা মেইল: এবারের ঈদকে কেন্দ্র করে উৎপাদন কেমন করছেন?
হাজী মো. আবু রায়হান: প্রত্যেক রোজার ঈদে আমরা একটু ইনকাম করি। সারা বছর যাই করি রোজার ঈদে ইনকাম একটু বেশি করি। উৎপাদন বেশি করি। কিন্তু এবারের ঈদে আমাদের ব্যবসা ভালো না। এবারের ব্যবসা আগেও চেয়ে বেশি খারাপ। মার্কেটে মাল টানছে না, দাম বেশি। রংয়ের দাম বেশি, সুতার দাম বেশি। বিভিন্ন অবস্থার কারণে মাল মার্কেটে টানছে না। কিন্তু আমাদের ওই রেটে বিক্রি করে জান বাঁচানো কঠিন। 

tat

ঢাকা মেইল: আপনি কতদিন ধরে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত?
হাজী মো. আবু রায়হান: আমি আজ থেকে প্রায় ৩০ বছর আগে এ ব্যবসা শুরু করেছি। আমরা পারিবারিকভাবে এ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। অভিজ্ঞতা তো কম হলো না। অন্যান্য বারের তুলনায় এবারের ব্যবসা খারাপ।  

ঢাকা মেইল: সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে এ বিষয়ে আপনার কোনো চাওয়া আছে?
হাজী মো. আবু রায়হান: সরকার যদি বাইরে থেকে রং-সুতা আমদানি করে দাম শিথিল রাখে। তাহলে আমাদের জন্য সুবিধা হতো। 

এআইএম/ একেবি
 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর