শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

রুটি বিক্রি করে আইফোন কিনল ১২ বছরের কিশোরী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ মার্চ ২০২৩, ০১:২৬ পিএম

শেয়ার করুন:

রুটি বিক্রি করে আইফোন কিনল ১২ বছরের কিশোরী

বারো বছরের বিয়াঙ্কা জেমি ওয়ারিয়াভা সেই দিনটির কথা কখনো ভুলবে না যেদিন তাদের বাড়িতে আইফোন-১৪ ডেলিভারি দেওয়া হয়েছিল। এটি কোনো উপহার বা পুরস্কার ছিল না। এটি ছিল তার ছয় সপ্তাহের কঠোর পরিশ্রমের ফল।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের অন্যতম শহর দুবাইয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী বিয়াঙ্কা একটি নতুন ফোন চেয়েছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির কারণে তার বাবা-মা তাকে ফোন কিনে দিতে পারেনি। এরপর গত ফেব্রুয়ারি মাসে তার মাথায় ফলপ্রসু ধারণা আসে।


বিজ্ঞাপন


ফিলিপিনো মা জেমিনি ওয়ারিয়াভা একবার কিছু রুটি বানিয়ে বিয়াঙ্কার লাঞ্চবক্সে দিয়েছিলেন। সে তার বন্ধুদের সঙ্গে রুটি ভাগ করেছিল। বিয়াঙ্কা জানায়, 'তারা রুটি নরম ও স্বাদের কারণে খুব পছন্দ করেছিল। তারা পরেরদিন আবারও তাকে কিছু রুটি আনতে বলেছিল।'

Dubai 12-yr-old girl buys iPhone 14

তারপর বিয়াঙ্কার এক বন্ধু তাকে একটি ধারণা দিয়েছিল। তাদের বিনামূল্যে দেওয়ার পরিবর্তে, কেন সেগুলো বিক্রি করবে না? বিয়াঙ্কা বলে, তারপরই আমরি বুঝতে পেরেছিলাম যে এর মাধ্যমে আমি আয় করতে পারি এবং আইফোন ১৪ কিনতে পারি।

বিয়াঙ্কার বাবা-মা দুজনেই বিশেষজ্ঞ রাঁধুনি। তারা দুবাইয়ের পাঁচ তারকা হোটেলে কাজ করেন। বিয়াঙ্কা বাবা-মাকে রান্নাঘরে রান্না করতে দেখে দেখে বড় হয়েছে। যখন তারা তার রুটি বিক্রি করার পরিকল্পনার কথা জানতে পেরেছিল, তখন তারা তাকে সর্বাত্মক সমর্থন করেছিল। তার ভারতীয় বাবা জেমিভাই ওয়ারিয়াভা তাকে প্রাথমিক মূলধন হিসেবে ১০০ দিরহাম দেন। আর তার মা তাকে রুটি তৈরিতে সহযোগিতা করেন।


বিজ্ঞাপন


জেমিনি বলেন, তাদের মেয়ে ৫ বছর বয়স থেকেই পিজ্জা পার্লারে সাহায্য করত। তখন থেকেই সে রান্নায় আগ্রহী।

Dubai 12-yr-old girl buys iPhone 14

বিয়াঙ্কা চার টুকরা রুটি বিক্রি করত ১০ দিরহামে। উদ্যোগের প্রথম দিনে মাত্র দুটি অর্ডার পেয়েছিল সে। এরপর গড়ে সে প্রতিদিন ৬০ পিস করে রুটি বিক্রি করত।

বিয়াঙ্কা বলে, এটি শুধু সাধারণ রুটি নয়, যা আমি তৈরি করেছি। আমার কাছে প্লেইন সফট রোল, ওরিও, উবে, পনির, পনিরের সাথে টার্কি সালামি এবং চিকেন ফ্র্যাঙ্কের মতো স্বাদ ছিল। আমার শিক্ষক ও সহপাঠীরা সেগুলোর প্রেমে পড়ে।'

মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে ৩ হাজার দিরহামের আইফোন-১৪ কেনার জন্য তার কাছে যথেষ্ট অর্থ ছিল।

তবে এই কাজ মোটেও সহজ ছিল না বিয়াঙ্কার জন্য। অনেকে তাকে ঠাট্টাও করত। সে বলে, কয়েকজন ছাত্র আমাদের আর্থিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। তারা সরাসরি বলেছে যে, তুমি কেন তোমার বাবা-মাকে ফোন কিনে দিতে বলো না। কিন্তু আমি আমার লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য দৃঢ় ছিলাম।

Dubai 12-yr-old girl buys iPhone 14

বিয়াঙ্কা বলেন, আমার বাবা-মা, সহপাঠী, শিক্ষক এবং প্রতিবেশীরা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন। আমি তাদের জন্য কৃতজ্ঞ।

বিয়াংকা তার এই যাত্রা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তার পরবর্তী লক্ষ্য? নিজের বেকারি এবং কফি শপ খোলা।

বিয়াঙ্কার কর্মকাণ্ডে গর্বিত মা জেমিনি। তিনি বলেন, বিয়াঙ্কার গল্প তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে পারে।

সূত্র: খালিজ টাইমস

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর