শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

লাসাকে কেন নিষিদ্ধ শহর বলা হয়?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০২৩, ১২:৪২ পিএম

শেয়ার করুন:

লাসাকে কেন নিষিদ্ধ শহর বলা হয়?

নবম শতাব্দী থেকে তিব্বতের ধর্মীয় কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল লাসা। ১৬৪২ সালে এই নগরকে তিব্বতের রাজধানীর স্বীকৃতি দেওয়া হয়। লাসা তিব্বতের রাজধানী হলেও একে নিষিদ্ধ শহরও বলা হয়ে থাকে। শহরটির আয়তন ১৬৮ বর্গ কিলোমিটার।

চীন ও তিব্বতের কিছু মানুষ প্রায়ই তিব্বতকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করত। কিছু কিছু তিব্বতীয় এই অঞ্চলকে চীনের অংশ মানতে রাজি নয়। ১৯৫১ সালে চীনা কমিউনিস্টরা অঞ্চলটিকে নিয়ন্ত্রণ করেছিল তখন লাসা তিব্বতের রাজধানী ছিল।


বিজ্ঞাপন


lhasa tibet

১৯৫৯ সালে তিব্বতিরা চীনের বিরুদ্ধে স্বাধীকার আন্দোলন শুরু করে। ১৯৬৫ সালে লাসাকে তিব্বত  স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানী ঘোষণা করা হয়। প্রাচীন মন্দির ও প্রাচীন স্থানগুলি তিব্বতের পবিত্র স্থান বলে বিবেচিত হয়। দালাই লামার শীতকালীন আবাস, বিভিন্ন মঠ এবং পোটলা  প্রাসাদ এখানকার কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থান। তিব্বতের প্রায় বাসিন্দা বৌদ্ধ ধর্মের অন্তর্ভুক্ত। তিব্বতের মোট জনসংখ্যার বেশিরভাগই বাস করেন লাসায়।

এখানকার বাসীন্দারা খুবই পরিশ্রমী। চীনের অধীনে হওয়ার পর থেকেই গোটা বিশ্বের কাছে তিব্বত নিষিদ্ধ দেশ এবং লাসা নিষিদ্ধ নগরী হিসেবে পরিচিত। বিশ্বের কোনো দেশ ইচ্ছা করলেও লাসায় আসতে পারে না। আসলে তিব্বতের পথ খুবই দুর্গম। প্রকৃতি চোখ ধাঁধিয়ে দিলেও সেখানে পৌঁছানো খুব কঠিন। বছরের আট মাস বরফে ঢাকা থাকে এই অঞ্চল।

lhasa tibet


বিজ্ঞাপন


তিব্বত মালভূমির দক্ষিণ দিকে পুরোটাই হিমালয় পর্বতমালায় ঘেরা। উওরে রয়েছে তাকলামাকান মালভূমি। উত্তর-পূর্ব দিকে রয়েছে কিলিয়ান  পর্বতমালা (এর অনেকটা উত্তরে গোবি মরুভূমি অবস্থিত)। এসব পেরিয়ে তিব্বতে আসা দুরুহ। এসব কারণে মানুষ তিব্বতকে এড়িয়ে চলে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো তিব্বতের উচ্চতা।

তিব্বতের বেশিরভাগ ভূভাগ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৬ হাজার ফুট উঁচু। এই উচ্চতাই স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়া কষ্টকর। অভ্যাস না থাকলে প্রায় অসম্ভব। লাসা এতই উচুঁ যে একে পৃথিবীর ছাদও বলা হয়। 

lhasa tibet

প্রাকৃতিক বাধা পেরিয়ে যদি কেউ যাবার চেষ্টা করে সেক্ষেত্রে ও সমস্যা দেখা যায়। এই শহরের আসতে গেলে দরকার আছে চীনের বিশেষ অনুমতি। সেটি সাধারণত খুব কম দেওয়া হয়। কেউ তিব্বতের আকাশপথও ব্যবহার করতে পারে না। এসব কারণে মানুষের নাগালের বাইরেই থেকে গেছে লাসা।

এটি চীনের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। যদিও অনেকেই তিব্বতিদের চীনের অংশ মানতে রাজি নয়। এ কারণেই ১৯৬৯ সালে তিব্বতিরা দালাইলামার নেতৃত্বে চীনের বিরুদ্ধে স্বাধিকার আন্দোলন গড়ে তুলে যা শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি। নিষিদ্ধ দেশ হিসেবে তিব্বতের পরিচিতির মূলে আছে এর বৈরি প্রাকৃতিক পরিবেশ, নিষিদ্ধতা, অদ্ভূত জীবনযাপন।

lhasa tibet

এসব কারণে তিব্বত বরাবরই মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ থাকায় মানুষ বছরের পর বছর ধরে তাদের এই কৌতূহল নিবারণ করতে সক্ষম হয়নি। আর এ সবকিছু মিলিয়েই তিব্বতের পরিচিতি গড়ে উঠে নিষিদ্ধ দেশ হিসেবে। আর লাসা হয় নিষিদ্ধ শহর।

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর