সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

আদানির পতন অব্যাহত, প্রভাব পড়ছে ভারতীয় অর্থনীতিতে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:৫৯ পিএম

শেয়ার করুন:

আদানির পতন অব্যাহত, প্রভাব পড়ছে ভারতীয় অর্থনীতিতে
হু হু করে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দর পড়তেই তার প্রভাব দেখা দিয়েছে ভারতীয় অর্থনীতিতে

গৌতম আদানির কোম্পানির শেয়ারের দরের পতন এখনও অব্যাহত রয়েছে। এভাবে কোম্পানিটির শেয়ারের দরে পতনের কারণে ভারতীয় অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রাখা টাকা কতখানি সুরক্ষিত? জাগছে প্রশ্ন। এবার সাধারণ মানুষের কৌতূহল দূর করতে মুখ খুলেছে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া। একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, ভারতের ব্যাংকগুলো নিরাপদ ও সুরক্ষিত রয়েছে।

যাবতীয় আশঙ্কা আর সংশয়ের মধ্যে আদানি পোর্টস, এন্টারপ্রাইজেস-সহ গোষ্ঠীর চারটি সংস্থার শেয়ার দর শুক্রবার কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায়। তবে বাকিগুলোর বিপর্যয় আটকানো গেল না সূচকের বিপুল উত্থান সত্ত্বেও। এ দিন সেনসেক্স ৯০৯.৬৪ পয়েন্ট উঠে পৌঁছে যায় ৬০,৮৪১.৮৮ অঙ্কে। নিফটি ২৪৩.৬৫ পয়েন্ট এগিয়ে হয় ১৭,৮৫৪.০৫। আর তার মধ্যে দাঁড়িয়েই আদানি ট্রান্সমিশন, আদানি গ্রিন এনার্জি, আদানি পাওয়ার, আদানি টোটাল গ্যাস, আদানি উইলমার, এনডিটিভি-এর শেয়ারের দাম আরও মুখ থুবড়ে পড়তে থাকে।


বিজ্ঞাপন


আদানি শিল্প গোষ্ঠীর দর অবশ্য শেষে ১.২৫% বেড়েছে। তবে বিএসই-তে এক সময় তা ৩৫% পড়ে নেমেছিল ১০১৭.১০ রুপিতে। যা এক বছরে সব থেকে কম। সকালের লেনদেনে অনেকগুলো পড়তে পড়তে পতনের ন্যূনতম সীমায় ঠেকে আদানি কোম্পানি ।

বিশেষজ্ঞদের দাবি, আমেরিকার ডাও জোন্সের ‘সাসটেনেবিলিটি সূচক’ (আর্থিক, সামাজিক বা পরিবেশগত স্থিতিশীলতার বিচারে বিশ্বের সেরা সংস্থাগুলোকে নিয়ে তৈরি শেয়ার সূচক) থেকে আদানি এন্টারপ্রাইজেসকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভারতে শেয়ার বাজার খোলার পরে অস্থির করে তোলে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে। এসঅ্যান্ডপি ডাও জোন্স সূচক বিবৃতিতে জানায়, আদানিদের সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল এবং সংবাদমাধ্যমের বিশ্লেষণ খতিয়ে দেখেই এমনটা করা হয়। এ মাসের ৭ তারিখে সূচকটি খোলার আগে তা কার্যকর হবে। 

অনেকের দাবি, পরে ফ্রান্সের টোটাল এনার্জিস আদানি গোষ্ঠীর কিছু সংস্থায় তাদের লগ্নি ধরে রাখা নিয়ে জোরালো বার্তা দিলে বাজারের পরিস্থিতি বদলায়। তবে প্রমাদ গুনছেন গৌতম আদানির বিভিন্ন সংস্থায় লগ্নিকারীরা। গত ছয় দিনের লেনদেনে মোট ৮.৭৬ লাখ কোটি ভারতীয় রুপির শেয়ার সম্পদ হারিয়েছেন তারা।

এদিকে শুক্রবার আদানি গোষ্ঠীর নাম উল্লেখ না করে এক বিজ্ঞপ্তিতে ভারতের ‘রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া’ জানিয়েছে, ‘‘একটি ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে ভারতীয় ব্যাংকগুলোর সম্পর্ক নিয়ে আমজনতার দুশ্চিন্তার ছবি ফুটে উঠেছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে। আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে ব্যাংকিং ক্ষেত্র ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ওপর কড়া নজরদারি চালাবে আরবিআই।’’


বিজ্ঞাপন


সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করে রিজার্ভ ব্যাংক আরও জানায়, ব্যাংকিং সেক্টর শক্তিশালী ও স্থিতিশীল রয়েছে। পর্যাপ্ত মূলধন, সম্পদের গুণমান, তারল্য, লাভজনক অবস্থান সংক্রান্ত বিভিন্ন মাপকাঠিই সুষ্ঠ পর্যায়ে আছে। ব্যাংকগুলোও রিজার্ভ ব্যাংকের ‘লার্জ এক্সপোজার ফ্রেমওয়ার্কে’র নির্দেশিকা মেনে চলছে। প্রতি মুহূর্তে সজাগ রয়েছে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া। ভারতীয় ব্যাংকিং সেক্টরের ওপর চলছে পর্যবেক্ষণ।

উল্লেখ্য, হু হু করে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দর পড়তেই তার প্রভাব দেখা দিয়েছে ভারতীয় অর্থনীতিতেও। বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির তকমা খোওয়াতে হয়েছে ভারতকে। এই পরিস্থিতিতে ভারতকে টপকে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে উঠে এসেছে ফ্রান্স। এক ধাক্কায় ৩.২ ট্রিলিয়ন ডলার কমে গিয়েছে ভারতের বাজার মূলধন। মাত্র ১০ কোটি ডলারের ব্যবধানে ভারতের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে ব্রিটেন। যদিও আদানিদের দাবি, একাধিক সংস্থায় ১০০ শতাংশ মালিকানা রয়েছে তাদের হাতে। সেই সংস্থাগুলোর ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না। তাই আচমকা তাদের সম্পত্তি কমে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। কিন্তু তাদের আশ্বাস সত্ত্বেও তৈরি হচ্ছে নানা আশঙ্কা। 

সূত্র : ফিনান্সিয়াল টাইমস, এএনআই, এবিপি 

এমইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর