শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

আইএমএফের শর্ত মেনে নিল পাকিস্তান, কিন্তু রাখতে পারবে কি?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৫:২৯ পিএম

শেয়ার করুন:

আইএমএফের শর্ত মেনে নিল পাকিস্তান, কিন্তু রাখতে পারবে কি?

পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট বেড়েই চলেছে। অত্যন্ত কম বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের কারণে দেশের আমদানি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমন অবস্থায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর ঋণ পেতে তাদের সব শর্ত মেনে নিয়েছে ইসলামাবাদ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটি কি রক্ষা করতে পারবে তারা?

শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) জোট সরকার ১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ পাওয়ার জন্য সব শর্ত পূরণ করতে সম্মত হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


আইএমএফ যে শর্তগুলো দিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে বিদ্যুত ভর্তুকি বাদ দেওয়া, আন্তর্জাতিক দামের সঙ্গে মিলিয়ে গ্যাসের শুল্ক সামঞ্জস্য করা, বাজার-নির্ধারিত বিনিময় হার কার্যকর করা এবং ঋণপত্র খোলার উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া। পাকিস্তান এবং আইএমএফের মধ্যে চুক্তি হলে পাকিস্তান তার প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক সহায়তা পাবে। ইসলাম খবরের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে এএনআই।

যদি পিডিএম সরকার আইএমএফ এর শর্তগুলোর কোনটি পূরণ করতে ব্যর্থ হয় তবে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন এবং অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক ঋণদাতাদের থেকে সম্ভাব্য তহবিল প্রবাহও প্রত্যাহার করা হবে। পাকিস্তানের আইএমএফের শর্ত পূরণ না করার রেকর্ড রয়েছে।

সৌদি আরব ও চীনের ঋণ এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। পাকিস্তান তার জাতীয় রেলপথের আপগ্রেডেশনের জন্য চীন থেকে আরও ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

pakistan


বিজ্ঞাপন


খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের বিভিন্ন সমুদ্রবন্দরে ৯ হাজার কন্টেইনার আটকে আছে যা প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ ব্যাহত করেছে। মূল্যস্ফীতি প্রায় ৩০ শতাংশে উঠেছে। আমদানিকারকরা ডলারের অভাবের কারণে কন্টেইনার থেকে পণ্য খালাস করতে পারছেন না। এছাড়া শিপিং কোম্পানিগুলো সময়মত অর্থ প্রদানে দেশটির ব্যর্থতার জন্য কার্যক্রম স্থগিত করার হুমকি দিচ্ছে।

স্টেট ব্যাংক অফ পাকিস্তানের কাছে মাত্র ৪.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে। এটি মাত্র তিন সপ্তাহের আমদানি ব্যায় মেটানোর জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

টেক্সটাইল শিল্প আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা এবং বাজারের শেয়ার হারানোয় বন্ধ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। দেশে সংকট তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে রয়েছে । ২০২০ সালে আইএমএফ এর বেলআউট প্যাকেজ স্থগিত, ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা পাকিস্তানকে আরও সংকটের দিকে নিয়ে গেছে।

পাকিস্তানকে ঋণ ছাড় দেওয়ার বিষয়ে আলোচনায় বসতে ইসলামাবাদ পৌঁছেছেন আইএমএফের কর্মকর্তারা। বেইআউট কর্মসূচির দীর্ঘ-প্রতীক্ষিত পর্যালোচনা শেষ করতে প্রয়োজনীয় সব শর্ত পূরণে পাকিস্তান সরকারকে তাগাদা দিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলেছে, কঠোর অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত কার্যকরে বিরোধীদের বাধা সৃষ্টির সম্ভাবনা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন।

পাকিস্তানের সঙ্গে ১০দিনের লম্বা আলোচনার উদ্বোধনী রাউন্ডেই তিনি তার এ উদ্বেগের কথা তুলে ধরেন, জানিয়েছেন একাধিক সরকারি কর্মকর্তা।

খেলাপি হওয়া ঠেকাতে পাকিস্তানের এই মুহূর্তে যত দ্রুত সম্ভব আইএমএফের ছাতা দরকার, অবশ্য এরপরও তাকে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে। আইএমএফ এর শর্ত মানতে গেলে আরও অনেক বিপদে পড়তে হতে পারে শাহবাজ শরিফ সরকারকে। তারা কতটুকু সামলে উঠতে পারবে তা সময়ই বলে দেবে।

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর