মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

আদানির সম্রাজ্যে আঘাত হানা কে এই এন্ডারসন?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৪:১১ পিএম

শেয়ার করুন:

আদানির সম্রাজ্যে আঘাত হানা কে এই এন্ডারসন?

নাথান এন্ডারসন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন গবেষক। তার এক প্রতিবেদনের কারণেই ভারতের শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির এখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। ৮ দিনের ব্যবধানে ভারতের আদানি গ্রুপ হারিয়েছে ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। চাপ পড়েছে ভারতীয় অর্থনীতিতেও। কেই এই এন্ডারসন, তার কাজই বা কী?

এন্ডারসন হলেন ‘হিন্ডেনবার্গ’ নামক একটি গবেষণা সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা। এই সংস্থার প্রধান কাজ হলো মানবঘঠিত দুর্যোগ এবং আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্ত করা ও সত্যটা সামনে আনা। খবর ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের


বিজ্ঞাপন


আদানি গ্রুপকে কাঁপিয়ে দেওয়া হিন্ডেনবার্গ সংস্থায় কাজ করেন মাত্র দশ জন। ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এন্ডারসনের হিন্ডেনবার্গ আদানি গ্রুপের আর্থিক দুর্নীতি প্রকাশ্যে এনে পুরো পৃথিবীর মানুষকে অবাক করে দিয়েছে। শেয়ারবাজারে ঝড়ের গতিতে আদানি গ্রুপের পতন শুরু হয়েছে। এই পতন কোথায় গিয়ে থামবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

১৯৩৭ সালে মার্কিন বাজারে অন্যতম আর্থিক কেলেঙ্কারি ছিল 'হিন্ডেনবার্গ কাণ্ড'। সেই ঘটনার সূত্রেই নিজের সংস্থার নাম দিয়েছেন নাথান। কানেটিকাট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিষয়ে স্নাতক নেওয়া নাথান ফ্যাক্টসেট রিসার্চ সিস্টেমস ইনকর্পোরেটেড নামক একটি ডেটা কোম্পানিতে ফিনান্সে তার কর্মজীবন শুরু করেন। ফ্যাক্টচেকে বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা কোম্পানিগুলোর সাথে কাজ করেন তিনি।

nathan-anderson

এর আগে এক সাক্ষাৎকারে নাথান জানিয়েছিলেন, তিনি ইসরায়েলে অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার হিসাবেও কাজ করেছেন।


বিজ্ঞাপন


বছর খানেক আগে মার্কিন ইলেকট্রিক ট্রাক প্রস্তুতকারক নিকোলা করপোরেশনের জালিয়াতি উন্মোচন করে বিশ্বে পরিচিতি পান অ্যান্ডারসন ও তার প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ। 

২০২০ সালের জুন মাসে মার্কিন শেয়ারবাজারে আত্মপ্রকাশ করে নিকোলা। এরপরই হু হু করে বাড়তে থাকে নিকোলার শেয়ারের দর। বিখ্যাত ফোর্ড মোটরকে ছাড়িয়ে কয়েক মাসের মধ্যেই কোম্পানিটির বাজারমূল্য ৩৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। বর্তমানে কোম্পানিটির মূল্য মাত্র ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার।

নাথান তার সংস্থার মাধ্যমে আর্থিক কেলেঙ্কারি সম্বন্ধে আদানি গ্রুপের উদ্দেশে ৮৮টি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন। তার একটিরও উত্তর দিতে পারেনি আদানি গ্রুপ। সেখানে বলা হয়, গত তিন বছরে আদানি গ্রুপ ১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি আয় করেছে মূলত শেয়ারের মূল্য বাড়িয়ে।

nathan-anderson

নিকোলার প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে সাবেক কর্মীরা সহায়তা করেছিলেন বলে জানিয়েছে হিন্ডেনবার্গ। একই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে আদানিকে নিয়ে করা প্রতিবেদনেও। সেই সঙ্গে প্রচুর নথিপত্র ঘাঁটতে হয়েছে তাদের।

গৌতম আদানি-কে 'দীর্ঘতম এবং সবচেয়ে বড় কর্পোরেট প্রতারক' হিসেবে উল্লেখ করে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে হিন্ডেনবার্গ। তাদের প্রতিবেদনের জবাবে ৪১৩ পাতার একটি ব্যাখ্যা প্রকাশ করেছেন গৌতম আদানি।  কিন্তু, তার এ প্রচেষ্টাও কার্যত ব্যর্থ হচ্ছে। আস্থা ফেরাতে পারছেন না বিনিয়োগকারীদের। শেয়ারের বাজারমূল্য হারাতে থাকায় ও ডলার-ভিত্তিক বন্ডের ধসে তার ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য এখন পতনের মুখে।

২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৬টি কোম্পানির সম্ভাব্য অন্যায় কার্যকলাপকে চিহ্নিত করেছে হিন্ডেনবার্গ।

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর