সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

বিশ্বের সবচেয়ে ভারী বাড়ি: কোথায় অবস্থিত, কী কাজে ব্যবহৃত হয়?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২ ডিসেম্বর ২০২২, ১১:০০ এএম

শেয়ার করুন:

বিশ্বের সবচেয়ে ভারী বাড়ি: কোথায় অবস্থিত, কী কাজে ব্যবহৃত হয়?

বিশ্বের সবচেয়ে ভারী বাড়ির তকমা পেয়েছে রোমানিয়ার একটি উল্লেখযোগ্য ভবন। ভবনটির উচ্চতা ততটা বেশি না হলেও ওজনে রেকর্ড গড়েছে এটি।

মূলত বিশ্বের সবচেয়ে ভারী ভবনটি হলো রোমানিয়ার ‘প্যালেস অফ পার্লামেন্ট’ বা আইনসভা ভবন। এটি রোমানিয়ায় ‘রিপাবলিকস হাউস’, ‘পিপল্‌স হাউস’ বা ‘পিপল্‌স প্যালেস’ নামেও পরিচিত। রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টের একটি পাহাড়ের উপরে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে ভারী এই ভবন।


বিজ্ঞাপন


প্যালেস অফ পার্লামেন্টের উচ্চতা ২৭৬ ফুট (৮৪ মিটার)। তবে ভবনটি বেশ চওড়াও। ওই ভবনের বিস্তৃতি প্রায় ৩ লক্ষ ৬৫ হাজার বর্গমিটার (৩৯ লক্ষ ৩০ হাজার বর্গফুট)। এছাড়া মোট ২৫ লক্ষ ৫০ হাজার বর্গমিটার ঘনত্ব নিয়ে ‘দিয়ালুল স্পিরি’ নামক পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে প্যালেস অফ পার্লামেন্ট।

সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো, প্যালেস অফ পার্লামেন্টের ওজন। যে কারণে তা রেকর্ড গড়েছে। এই সংসদ ভবনের ওজন প্রায় ৪০৯ কোটি ৮৫ লক্ষ কিলোগ্রাম। বিশ্বের সবচেয়ে ভারী ভবন এই প্যালেস অফ পার্লামেন্ট।

palace of parliament bucharest

সবচেয়ে ভারী ভবনের পাশাপাশি আরও একটি রেকর্ডের অধিকারী প্যালেস অফ পার্লামেন্ট। এটি বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে দামি প্রশাসনিক ভবন। ২০২০ সালের হিসাব অনুযায়ী, প্যালেস অফ পার্লামেন্টের মূল্য প্রায় ৪০০ কোটি ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা)। প্রতি বছর এই ভবনে শুধু বিদ্যুৎ বাবদ খরচই হয় প্রায় ৬০ লাখ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৫০ কোটি টাকা)।


বিজ্ঞাপন


কমিউনিস্ট রোমানিয়ার প্রেসিডেন্ট নিকোলেই চাউসেস্কু প্যালেস অফ পার্লামেন্ট তৈরির জন্য উদ্যোগী হয়েছিলেন। ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৯৮৪ সালে।

প্রধান স্থপতি অ্যানকা পেত্রেস্কুর তত্ত্বাবধানে ৭০০ স্থাপত্যশিল্পীর ১৩ বছরের চেষ্টায় গড়ে ওঠে প্যালেস অফ পার্লামেন্ট। ভবনটির নির্মাণকার্য শেষ হয় ১৯৯৭ সালে।

palace of parliament bucharest

কী আছে বিশ্বের সবচেয়ে ভারী এই ভবনের অন্দরে? মূলত রোমানিয়ার আইনসভার দু’টি কক্ষ সেনেট এবং চেম্বার অফ ডেপুটির কাজকর্ম এখানে হয়ে থাকে। এ ছাড়াও প্যালেস অফ পার্লামেন্টে রয়েছে ৩টি জাদুঘর এবং ১টি আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্যালেস অফ পার্লামেন্টে মোট ১ হাজার ১০০টি ঘর থাকার কথা। কিন্তু ভবনটির নির্মাণ সম্পূর্ণ নয়। দু’টি বড় আকারের বৈঠকের ঘর ছাড়া মাত্র ৪০০টি ঘর রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে ভারী ভবনের মধ্যে। এই প্রশাসনিক ভবনে মাটির নীচে মোট ৮টি তলা রয়েছে। প্রেসিডেন্ট চাউসেস্কু পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা করেছিলেন। তাই মাটির গভীরে ভবনটি প্রশস্ত করেছিলেন তিনি।

প্যালেস অফ পার্লামেন্ট তৈরি করা হয় রোমানিয়ার নিজস্ব উপাদান দিয়ে। কেবল একটি হলঘরের দরজা রোমানিয়ান প্রেসিডেন্টকে উপহার হিসাবে দিয়েছিলেন তাঁর বন্ধু তথা কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট মোবুতু সেসে সেকো।

palace of parliament bucharest

এই ভবন তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছে ৩ হাজার ৫০০ ক্রিস্টল, ৪৮০টি ঝাড়বাতি, ১ হাজার ৪০৯টি আলো এবং আয়না। দরজা এবং জানলা তৈরিতে লেগেছে ৭ লক্ষ টন ইস্পাত আর ব্রোঞ্জ। এ ছাড়া মার্বেল পাথর এবং কাঠের ব্যবহারও হয়েছে অফুরন্ত।

স্থপতিরা জানিয়েছেন, পাহাড়প্রমাণ ওজনের কারণে প্রতি দিন একটু একটু করে বসে যাচ্ছে প্যালেস অফ পার্লামেন্ট। হিসাব করে দেখা গিয়েছে, প্রতি বছর ৬ মিলিমিটার করে বসে যাচ্ছে রোমানিয়ার এই প্রশাসনিক ভবন।

সূত্র: আনন্দবাজার

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর