রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

জলবায়ু পরিবর্তনে দরিদ্র দেশকে ক্ষতিপূরণ দিতে ঐতিহাসিক চুক্তি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০২২, ১০:৪২ এএম

শেয়ার করুন:

জলবায়ু পরিবর্তনে দরিদ্র দেশকে ক্ষতিপূরণ দিতে ঐতিহাসিক চুক্তি

ব্যাপক দেনদরবারের পর অবশেষে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে ঐতিহাসিক ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে কপ২৭ সম্মেলনে।

মিশরের শার্ম আল-শেখে চলমান 'কপ-২৭' জলবায়ু সম্মেলনের শেষ দিন শনিবার গভীর রাতে বড় সমঝোতা সই হয়। প্রেসিডেন্ট সামি শৌকরি চুক্তি স্বাক্ষরের ঘোষণা দেওয়ার পর সম্মেলনকক্ষ করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে। খবর বিবিসির, আল জাজিরার।


বিজ্ঞাপন


জলবায়ু বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ও ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে এই ক্ষতিপূরণ তহবিল চাওয়া হলেও ধনী দেশগুলো গত ৩০ বছর ধরে এর বিরোধিতা করে আসছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যা, নাইজেরিয়া ও অন্যত্র জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পরিস্থিতি বদলে যায়, শেষ পর্যন্ত বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে ক্ষয়ক্ষতির ইস্যুটি মিশরের সম্মেলনে প্রধান আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়। এ নিয়ে কূটনীতিকদের লাগাতার আলোচনা চলে। অবশেষে শনিবার গভীর রাতে ঐতিহাসিক সমঝোতার একমত হওয়ার ঘোষণা হলে সম্মেলনকক্ষে উপস্থিত সবার চোখেমুখে উচ্ছ্বাস আর স্বস্তির চিহ্ন দেখা যায়।

সম্মেলনে ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রান্স তিমারম্যানস জানান, ইইউ জলবায়ু বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র দেশগুলোর জন্য 'লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড' নামে একটি তহবিল গঠনে সম্মত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশগুলোর জোট 'জি–৭৭' এ তহবিলের দাবি জানিয়ে আসছিল।

এবারের 'কপ-২৭' সম্মেলনে এটি অন্যতম প্রধান দাবি ছিল। এই তহবিলের অর্থ দরিদ্র দেশগুলোর ভৌত ও সামাজিক অবকাঠামোর ওপর চরম জলবায়ুর ধ্বংসযজ্ঞ মোকাবিলা, উদ্ধারকাজ পরিচালনা ও পুনর্গঠনে ব্যয় করা হবে।

এ বিষয়ে ফ্রান্স তিমারম্যানস জানান, এমন গুরুত্বপূর্ণ একটা তহবিল গঠনের আগে সময় নিয়ে, ভেবেচিন্তে অগ্রসর হওয়া উচিত। তবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন চেয়েছে, দ্রুত 'জি–৭৭' এর দাবি মেনে নিতে। তাই তারা তহবিল গঠনে রাজি হয়েছেন। দাতাদের দ্বারা পরিচালিত এই তহবিল 'নিঃশর্ত' হবে না এবং অর্থ বহুজাতিক উন্নয়ন ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।


বিজ্ঞাপন


ইইউ এর পক্ষ থেকে তহবিল গঠনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন ক্যারিবীয় দেশগুলোর জোটের মহাসচিব কারলা বারনেট। তিনি জানান, জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র ও দ্বীপ দেশগুলোর জন্য আর্থিক সাহায্যের বিকল্প নেই। এই তহবিল এসব দেশের ভবিষ্যতের জন্য জরুরি।

অস্ট্রেলিয়ার জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী ক্রিস বোয়েন ইইউ এর উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন এবং বলেছেন যে তার দেশ তহবিলে যোগ দেবে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য ইইউর এই উদ্যোগ প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে মনে করছেন অনেকেই।

যুক্তরাষ্ট্র এর আগে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য জলবায়ু তহবিল গঠনে আপত্তি জানিয়েছিল। তবে ইইউর পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়ার পর এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি ওয়াশিংটন।

এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর