শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

ইউক্রেনীয় শরণার্থীকে ব্রিটিশ নাগরিকের বিয়ে, কথা হয় ট্রান্সলেটরে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮ নভেম্বর ২০২২, ০৪:০০ পিএম

শেয়ার করুন:

ইউক্রেনীয় শরণার্থীকে ব্রিটিশ নাগরিকের বিয়ে, কথা হয় ট্রান্সলেটরে
এক দম্পতি এটা প্রমাণ করেছেন যে প্রেমই মহাবিশ্বের সবচেয়ে বড় শক্তি

অনেকে বলেন যে ভালোবাসা কোনো কারণ জানে না এবং এর কোনো সীমা ও দূরত্ব নেই। এখন এক দম্পতি এটা প্রমাণ করেছেন যে প্রেমই মহাবিশ্বের সবচেয়ে বড় শক্তি। তারা একে অপরের সঙ্গে কথা বলতে না পারলেও একে অপরের প্রেমে পড়েছিলেন। ব্রিটিশ নাগরিক লুক ডিকিনসন ও ইউক্রেনীয় উদ্বাস্তু ভিরা ক্লিমোভা এমন অসাধারণ প্রেমের উদাহরণ। তারা সম্প্রতি গাঁটছড়া বেঁধেছেন। এজন্য গুগল ট্রান্সলেটরকে ধন্যবাদ যা তাদের মধ্যে যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টি করেছে।

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক গণমাধ্যম মেট্রোর একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ভ্লাদিমির পুতিনের রাশিয়ান বাহিনীর আক্রমণের ভয়ে পালিয়ে আসা ইউক্রেনীয়দের সাহায্য করার জন্য তারা একটি ফেসবুক গ্রুপে চ্যাট করতে শুরু করেন। এ সময় তারা এক অপরের প্রেমে পড়েন। অবশ্য গুগল ট্রান্সলেটর না থাকলে তাদের এ প্রেমের গল্প পরিণতি পেত না।


বিজ্ঞাপন


গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ৩৭ বছর বয়সী ভিরা ক্লিমোভা ইউক্রেনের ওডেসার নাগরিক। (যুদ্ধের সময়) তিনি তার ১৫ বছরের মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে বিদেশে পালান। অবশেষে কিছু জিনিসপত্র সঙ্গে নিয়ে তিনি ব্রিটেনের ব্রিস্টলে পৌঁছেন। সেখানে তার এক মোলডোভান বন্ধু থাকতেন।

এমন শরণার্থী জীবনে তিনি ২৮ বছর বয়সী লুক ডিকিনসনের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি ভিরার মতো শরণার্থীদের সাহায্য করতে পারেন কিনা তা দেখার জন্য ফেসবুক গ্রুপে লগইন করেছিলেন।

এ বিষয়ে মেট্রোকে লুক ডিকিনসন বলেন, ‘আমরা যখন (ফেসবুক গ্রুপে) কথা বলা শুরু করি, তখন ভিরা অনেক গোছানো ছিলো। তার নথিপত্রগুলোও প্রস্তুত ছিলো। যখন আমি তার ছবি দেখি তখন তাকে ‘হ্যালো’ বলি। তাকে একটি ব্যক্তিগত মেসেজ বা চিঠি দেই। আমাদের মধ্যে হাসি এবং কৌতুকের প্রসঙ্গ ছিলো। এ হাস্যরসের অনুভূতি ছিলো অসাধারণ। সবাই সবসময় বলে যে কেউ ইংরেজি হাস্যরসের অনুভূতি বোঝে না, কিন্তু ভিরা সহজেই তা বুঝত। আমি চিঠি লেখার ক্ষেত্রে গুগল ট্রান্সলেটর ব্যবহার করেছি। কারণ, আমার প্রেমিকা কোনো ইংরেজি বুঝত না। আমি তাকে সত্যিই পছন্দ করতাম, তাই তার ইংরেজি না পারা আমার কাছে কোনো ব্যাপার না।’

ভিরা ও তার মেয়ে ৬ এপ্রিল ব্রিস্টলে পৌঁছেছিল। এরপর ভিরা ইংরেজি শেখা শুরু করে যাতে করে সে ইউক্রেনের মতো ব্রিটেনেও অ্যাকাউন্টেন্সির কাজ করতে পারে। তিনি তার নতুন জীবনে স্থায়ী হওয়ার পরে, ডিকিনসন তাকে মদ ও চা পানের দাওয়াত দেন। প্রথমবার দেখা করার পর তাদের মধ্যে তীব্র প্রেমের অনুভূতি সৃষ্টি হয় এবং তারা বুঝতে পারেন যে তারা আর আলাদা থাকতে পারবেন না। এরপর তারা বিভিন্ন স্থানে একত্রে ঘোরাফেরা করেন। ওই প্রথম দেখার দু’সপ্তাহ পরে তারা এক-অপরকে বিয়ে করে নেন।


বিজ্ঞাপন


মূলত একটি  নৈশভোজের সময় ডিকিনসন বিয়ের প্রস্তাব দেন। ভিরা সঙ্গে সঙ্গে হ্যাঁ বলে দেন। এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর ব্রিস্টল রেজিস্টার অফিসে তারা বিয়ে করেন। এরপর একটি লাইব্রেরির ককটেল পানীয়র বার কক্ষে তাদের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা হয়।

এ বিষয়ে ভিরা ক্লিমোভা বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করতে পারছি না যে আমি কতটা ভাগ্যবান মানুষ। আমি যুদ্ধকবলিত অঞ্চল থেকে এসেছি এবং আমাকে বাড়ি ছাড়তে হয়েছে। কিন্তু, এত কিছুর পরেও আমি আমার মনের মানুষকে খুঁজে পেয়েছি। আমরা দু’জনেই এ বিষয়টা জানতাম যে আমাদের একসাথে থাকতে হবে।’

সূত্র : এনডিটিভি

এমইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর