বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

অভিবাসীদের জন্য দুঃসংবাদ, ইইউতেও অবস্থান বদলাবে ইতালি!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০১:২৩ পিএম

শেয়ার করুন:

অভিবাসীদের জন্য দুঃসংবাদ, ইইউতেও অবস্থান বদলাবে ইতালি!
ইতালির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন জর্জিয়া মেলোনি- ব্লুমবার্গ

ইতালির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন জর্জিয়া মেলোনি। ৪৫ বছর বয়সী এই নারী দেশটির কট্টর ডানপন্থী দল ব্রাদার্স অব ইতালির পার্টির নেত্রী। নির্বাচনে তার দল অন্তত ২৬ শতাংশ ভোট পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পথে রয়েছে। এরই মধ্যে তিনি বিজয়ীর বার্তা দিয়েছেন।

ব্রাদার্স অব ইতালির ক্ষমতা গ্রহণের মধ্য দিয়ে দেশটিতে এক ঐতিহাসিক পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।


বিজ্ঞাপন


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইতালিতে এত কট্টর ডানপন্থী কোন দল এর আগে ক্ষমতায় আসেনি। ব্রাদার্স অব ইতালি খুবই ডানপন্থী এবং বিতর্কিত এক দল, যাদের সঙ্গে ইতালির নব্য নাৎসীবাদী আন্দোলনের সম্পর্ক রয়েছে।

নির্বাচনী প্রচারে সবচেয়ে বড় ইস্যু ছিল অভিবাসন এবং জীবনযাত্রার ব্যয়। তবে এর পাশাপাশি গর্ভপাত, এলজিবিটি অধিকার এবং ইউক্রেন যুদ্ধের মতো বিষয় নিয়েও প্রচারণার সময় বিতর্ক হয়েছে।

মাত্র চার বছর আগেও ইতালির নির্বাচনে ব্রাদার্স অব ইতালি দলের ভোটের শেয়ার ছিল মাত্র চার শতাংশ। কিন্তু এখন এই দলই দেশটির ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে এসেছে।

জর্জিয়া মেলোনির বয়স ৪৫ বছর। মাত্র দশ বছর আগে ২০১২ সালে তিনি ব্রাদার্স অব ইতালি দলটি প্রতিষ্ঠা করেন। এর আগে তিনি সিলভিও বারলুসকোনির সরকারে সবচেয়ে কম বয়সে মন্ত্রী হয়েছিলেন।


বিজ্ঞাপন


তরুণ বয়সে তিনি ইতালির নব্য নাৎসীবাদী আন্দোলনের যুব শাখায় যোগ দেন। বেনিতো মুসোলিনির সমর্থকরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিল। গত বছর তিনি নিজের এক বইতে দাবি করেন, তিনি ফ্যাসিস্ট নন। তবে নিজেকে তিনি মুসোলিনির উত্তরসূরিদের সঙ্গেই চিহ্নিত করেছেন। তিনি বার বার ইতালিতে মুসলিম অভিবাসীদের আগমনের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

মেলোনি যে ডানপন্থী জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাতে আরও আছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বারলুসকোনির দল 'ফরজা ইতালিয়া' এবং আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাতিও সালভিনির দল 'লিগ পার্টি'।

মেলোনি সাম্প্রতিক সময়ে তার অনলবর্ষী কট্টর ডানপন্থী ভাবমূর্তি কিছুটা নরম করে এনেছেন। ইতালির ফ্যাসিবাদী অতীত ইতিহাসের সঙ্গে তার দলের সম্পর্ক নিয়ে ইঙ্গিত করা হলে তিনি বেশ ক্ষুব্ধ হন।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলো যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, মেলোনি তা সমর্থন করেন। একই সঙ্গে ইউরোপের ব্যাপারে তার কড়া কথাবার্তা তিনি সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা কমিয়েছেন।

কিন্তু তিনি এরপরও এমন এক পুরোনো শ্লোগান বেছে নিয়েছেন, যা ছিল ফ্যাসিবাদীদের শ্লোগান- 'ঈশ্বর, পিতৃভূমি এবং পরিবার'। তিনি 'এলজিবিটি লবি'র বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং লিবিয়ার বিরুদ্ধে এক নৌ-অবরোধ আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে সেই পথে ইউরোপে কোন অভিবাসী আসতে না পারে।

ইতালির এই নির্বাচনের দিকে ইউরোপের অনেক দেশই শংকিত নজর রাখছে। অর্থ এবং শেয়ার বাজারেও বিরাজ করছে নানা ধরনের শংকা। ইতালি হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। কিন্তু দেশটি ঋণের ভারে জর্জরিত।

ইউরোপীয় নেতারা এখনো পর্যন্ত ইউক্রেন যুদ্ধের ব্যাপারে একটা ঐক্যবদ্ধ অবস্থান বজায় রাখতে পেরেছেন। কিন্তু নির্বাচনে জর্জিয়া মেলোনির দল জেতার পর ইতালি কোন দিকে যাবে, তা নিয়ে অনেকের মনে আশংকা আছে।

ভিক্টর ওবানের নেতৃত্বে হাঙ্গেরি যেভাবে কট্টর ডানপন্থার দিকে ঝুঁকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে নানা বিষয়ে বিরোধপূর্ণ অবস্থান নিয়েছে, ইতালি সেই পথে হাঁটতে পারে, এমন আশংকা অনেকের।

সূত্র: বিবিসি

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর