মালয়েশিয়ার জোহর এলাকার এক মা তার মেয়েকে একাধিক পুরুষদের শয্যাসঙ্গিনী হতে বাধ্য করেছেন। এমন ঘটনায় ওই অঞ্চলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। জানা গেছে, ঋণ শোধ করতে নিজের ছোট মেয়েকেই একাধিক পুরুষের বিছানায় তুলে দিয়েছেন তিনি।
১৭ বছরের ওই কিশোরীকে শেষমেশ তার মায়ের খপ্পর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে রাখা হয়েছে শিশুদের রাখার বিশেষ জায়গায়।
বিজ্ঞাপন
মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম ‘চায়না প্রেস’ জানিয়েছে, একাধিক ব্যক্তির থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন ওই নারী। কিছু ঋণ মেয়ের নামেও নেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে।
এদিকে নির্যাতিতা কিশোরী দাবি করেছেন, চলতি বছরের শুরুতে ৬০ বছর বয়সী এক ভাড়াটিয়ার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে হয়েছে তাকে। এটা জোরপূর্বক ঘটনা। তিনি এমন কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন তার নিজ মায়ের কারণে।
ওই ৬০ বছর বয়সী বৃদ্ধকে ‘গডফাদার’ বলে ডাকেন এ কিশোরী। কিশোরীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য টাকা দিতেন এ ‘গডফাদার’। ওই টাকা পরে তার মাকে দিতেন ওই কিশোরী।
যত দিন কিশোরীর সঙ্গে ওই বৃদ্ধ শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতেন, তত দিন একে অপরকে ‘বয়ফ্রেন্ড’, ‘গার্লফ্রেন্ড’ বলে সম্বোধন করতেন। ঋণের টাকা মেটাতে ওই বৃদ্ধ যাতে আর্থিকভাবে সাহায্য চালিয়ে যান, সে কারণেই তার শয্যাসঙ্গিনী হতে কিশোরীকে বাধ্য করতেন তার মা। এমনই অভিযোগ করেছেন ওই কিশোরী।
বিজ্ঞাপন
ওই ব্যক্তির কাছ থেকে নিয়মিত ঋণ নিতেন কিশোরীর মা। একইভাবে অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে যৌন মিলনে কিশোরীকে বাধ্য করা হতো বলে অভিযোগ আছে।
এভাবে কিছু দিন চলার পর বাড়ি ছেড়ে পালান ওই কিশোরী। চলতি বছরের মার্চ মাসে বাড়ির কাছে একটি শিশুদের আবাসে আশ্রয় নেন তিনি।
পরে এক সমাজকর্মী কিশোরীর ব্যাপারে জানতে পারেন। কিশোরী যাতে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে, তা নিশ্চিত করতে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন ওই সমাজকর্মী।
শিশুদের আবাসে ওই কিশোরীর চলে যাওয়ার পর তার মায়ের সঙ্গে ওই সমাজকর্মী একটি চুক্তি করেন। আগামী দিনে মেয়ের ব্যাপারে নাক গলাবেন না, এ শর্তে চুক্তি হয়।
কিন্তু ওই চুক্তি ভেঙে কিশোরীর মা পাল্টা দাবি করেন, শিশুদের ওই আবাসের পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত কর্তৃপক্ষ তার মেয়েকে আটকে রেখেছেন। এরপরই একাধিকবার ফোনে হুমকি পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তারা।
হেনস্থার জেরে বাধ্য হয়ে গত ২০ সেপ্টেম্বর পুলিশের দ্বারস্থ হয় ওই কিশোরী। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, মায়ের কাছে আর ফিরতে চান না। নতুন জীবন শুরু করতে চান।
‘চায়না প্রেস’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে ৫৭ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তবে এ ঘটনায় কিশোরীর মাকে গ্রেফতার করা হয়েছে কিনা, তা জানা যায়নি। বর্তমানে শিশুদের আবাসে থেকেই ঘুরে দাঁড়াতে চান ওই কিশোরী।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
এমইউ

