শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

পাকিস্তানে বৈষম্যের শিকার সংখ্যালঘু নারীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৩:০৬ পিএম

শেয়ার করুন:

পাকিস্তানে বৈষম্যের শিকার সংখ্যালঘু নারীরা
ছবি: আইএফএফআরএএস

পাকিস্তানে রাজনৈতিক অস্থিরতা নতুন কিছু নয়। এছাড়া দেশটির জাতীয় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে অর্থনৈতিক সংকট। তবে এসব কিছুর মধ্যেও জাতিগত সমস্যা ও আধিপত্য দেশটির জন্মলগ্ন থেকেই একটি বড় সমস্যা হয়ে আছে। এর শিকার হচ্ছেন সংখ্যালঘু নারীরাও।

এক প্রতিবেদনে একথা জানিয়েছে কানাডাভিত্তিক অধিকার সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর রাইটস এন্ড সিকিউরিটি (আইএফএফআরএএস)।


বিজ্ঞাপন


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে শুরু থেকেই সংখ্যালঘুরা বৈষম্যের শিকার। দেশটি ক্রমবর্ধমান রক্ষণশীল ইসলামবাদীর দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং হিন্দু, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের, বিশেষ করে নারীদের অবস্থার অবনতি হচ্ছে।

সেখানে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে হিন্দু ও খ্রিস্টান গোষ্ঠীগুলোর পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে ভালো নয়। এসব সম্প্রদায়ের নারীরা কর্তৃপক্ষ, রাজনৈতিক দল, ধর্মীয় দল, সামন্ততান্ত্রিক কাঠামো এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠদের বৈষম্যমূলক মনোভাবের সবচেয়ে বেশি শিকার।

ধর্মীয় সংখ্যালঘু নারী ও মেয়েদের অপহরণ, জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত, বিয়ে এবং নির্যাতন করার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। 
বেশিরভাগ সময় এসব নারীদের পরিবার আইনি উপায় ব্যবহার করে এই অপরাধগুলোকে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়। 

মানবাধিকার সংগঠনগুলোও পাকিস্তানের সংখ্যালঘু নারীদের ক্ষেত্রে এসব সমস্যা নথিভুক্ত করেছে।


বিজ্ঞাপন


পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বুনের জেলায় ২০ আগস্ট সন্ধ্যায় শিখ সম্প্রদায়ের একজন শিক্ষিকা দিনা কৌরকে জোরপূর্বক অপহরণ করে ধর্মান্তরিত করা হয়। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের সহায়তায় কৌরকে তার অপহরণকারীর সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়।

তার বাবা গুরুচরণ সিং থানায় গেলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এই ঘটনার জন্য খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে শিখ সম্প্রদায়ের ব্যাপক প্রতিবাদ সত্ত্বেও স্থানীয় পুলিশ দিনা কৌরকে অপহরণ এবং জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করার বিষয়ে কোনো তদন্ত শুরু করেনি।

জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণ এবং বিয়ের উদ্দেশ্যে অপহরণ পাকিস্তানে একটি প্রধান সমস্যা। ভুক্তভোগীদের বেশিরভাগই খ্রিস্টান এবং হিন্দু মেয়ে। তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে অনেক বয়স্ক মুসলিম পুরুষদের বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়। 

এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ২০২১ সালের প্রথমার্ধে পাঞ্জাব প্রদেশে প্রায় ৬,৭৫৪ জন নারীকে অপহরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১,৮৯০ জন নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে, ৩,৭২১ জনকে নির্যাতন করা হয়েছে যাদের ৭৫২ জন শিশু।

বিশেষ করে সিন্ধু প্রদেশের বাদিন, মিরপুখাস, সাংঘর, উমর কোট এবং থারপারকার জেলায় হিন্দু নারীরা অনেকটা দাসত্বের শিকার হচ্ছেন। তারা মনিবদের কাছে ঋণী থাকেন এবং তাদের কথা শুনতে বাধ্য হন।

সঠিক তদন্তের অভাব, অভিযুক্তদের বিচার এবং এই ধরনের অপহৃত শিকারদের তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে পুনরায় একত্রিত করার অধিকার অস্বীকার করা এসব নারীদের অরক্ষিত শিকারে পরিণত করেছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ জরুরি বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর