বাংলাদেশের জন্য এখনো অরাজনৈতিক ইসলামিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে বলে সম্প্রতি এক গবেষণায় জানিয়েছে ব্রাসেলসভিত্তিক থিংকট্যাঙ্ক সাউথ এশিয়া ডেমোক্র্যাটিক ফোরাম (এসএডিএফ)। তাদের মতে হেফাজতের করণে ধর্মীয় উদারবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং উদার ও ধর্মনিরপেক্ষ চিন্তাভাবনা সঙ্ককুচিত হচ্ছে। তবে বাংলাদেশে ক্রমাগত সন্ত্রাস হ্রাস পেয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সাউথ এশিয়া ডেমোক্রেটিক ফোরাম (এসএডিএফ) হল ব্রাসেলসভিত্তিক একটি থিংকট্যাঙ্ক, যা দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে ইউরোপের সম্পর্ক নিয়ে কাজ করে।
বিজ্ঞাপন
এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসএডিএফ এর গবেষণা পরিচালক ড. সিগফ্রাইড ও. উলফ লিখেছেন যে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা ক্রমাগতভাবে হ্রাস পেয়েছে। তবুও এখনো ইসলামি চরমপন্থার বিষয়টি রয়ে গিয়েছে।
'বাংলাদেশে হেফাজত-ই-ইসলাম এবং ইসলামি চ্যালেঞ্জ' শিরোনামের গবেষণা প্রতিবেদনে এসএডিএফ গবেষণা পরিচালক উল্লেখ করেছেন যে, অতি-রক্ষণশীল ইসলামী গ্রুপিং বাংলাদেশের সবচেয়ে জটিল বিষয়।
এসএডিএফ হেফাজতকে বিভিন্ন পরিভাষা দ্বারা সংজ্ঞায়িত করেছেন। উদাহরণস্বরূপ- একটি ইসলামি চাপ গোষ্ঠী, একটি ইসলামবাদী ওকালতি আন্দোলন, একটি অতি রক্ষণশীল ইসলামবাদী দল, একটি সামাজিক-রাজনৈতিক চরমপন্থী গোষ্ঠী বা একটি ইসলামী সামাজিক আন্দোলন।
বিশ্লেষণে তিনি এমন ইসলামিক গ্রুপগুলোকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করার দাবিও তুলেছেন।
বিজ্ঞাপন
গোষ্ঠীর দ্বারা উত্থাপিত চ্যালেঞ্জগুলোর বিষয়ে কথা বলার সময় এসএডিএফ পরিচালক বলেছিলেন যে, হেফাজতের জন্য ব্যবহৃত পরিভাষাগুলো প্রকৃতপক্ষে সম্পূর্ণ চিত্র দেয় না, যে কীভাবে তারা রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক ভিত্তিকে চ্যালেঞ্জ করছে এবং এটি কীভাবে অবদান রাখছে।
তিনি উল্লেখ করেন যে, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ শুধু হিংসাত্মক গণবিক্ষোভ এবং নাশকতাই প্রত্যক্ষ করেছে না বরং সরকারের দৃঢ় পাল্টা প্রতিক্রিয়াও দেখেছে- যাতে রাষ্ট্র, নাগরিকত্ব এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা যায়।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, হেফাজতে ইসলামের অনেক সিনিয়র সদস্যকে প্রকাশ্য অস্থিরতায় তাদের ভূমিকার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছিল, এবং সংগঠনটিও নেতৃত্বের সংকটে ভুগছিল। যদিও কিছু বিশ্লেষক মনে করছেন যে, ইসলামি সংগঠনটি এখন অনেক কম হুমকি হয়ে উঠেছে।
এসএডিএফ পরিচালক ড. সিগফ্রাইড ও. উলফ হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ পলিটিক্যাল সায়েন্স (আইপিডব্লিউ) এবং সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটে (এসএআই) পড়ালেখা করেছেন।
তিনি এসএআই এর একজন সদস্য (অধিভুক্ত গবেষক), পাশাপাশি আইপিডব্লিউ এবং সেন্টার ডি সায়েন্স হিউম্যানিস (নয়া দিল্লি, ইন্ডিয়া) এর একজন সাবেক গবেষণা ফেলো। ড. ওল্ফ আফগানিস্তান-পাকিস্তান সমস্যাগুলোর ন্যাটো-স্পন্সর পর্যায়ক্রমিক কৌশলগত স্বাধীন গবেষণা এবং মূল্যায়নের পরামর্শদাতা হিসাবে কাজ করেন।
একে