বিতর্কিত ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ নামের বই লেখার কারণে ভারতীয় বংশোদ্ভূত লেখক সালমান রুশদির ওপর হামলা চালান নিউ জার্সির ২৪ বছরের যুবক হাদি মাতার। তিনি আয়াতুল্লাহ খোমেনির ফতোয়ায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এমন কাজ করেন বলে জানা গেছে।
প্রাথমিক তদন্তে নিউইয়র্ক পুলিশ জানতে পেরেছে, ইসলাম ধর্মাবলম্বী হাদি শিয়া সম্প্রদায়ের। তার জন্ম ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ লেখার এক দশক পরে। জন্মস্থান যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া হলেও তিনি মূলত ইরানি বংশোদ্ভূত। শিয়া কট্টরপন্থায় বিশ্বাসী হাদির আনুগত্য রয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় সামরিক সংগঠন ‘ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ড’-এর প্রতি। তবে তিনি সরাসরি কোনো কট্টরপন্থী সংগঠনের সদস্য কি না, তা এখনও জানা যায়নি। প্রসঙ্গত, বিতর্কিত উপন্যাস ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ লেখার পর ১৯৮৯ সালে রুশদিকে হত্যার ফতোয়া জারি করেছিলেন ইরানের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি। শুক্রবার ওই মৃত্যুদণ্ড প্রায় কার্যকর করে ফেলেছিলেন হাদি।
বিজ্ঞাপন
প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা হাদি এ ক্ষেত্রে একাই জড়িত। তিনি একাই রুশদিকে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন। তা কার্যকর করার দায়িত্বও একাই নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। রুশদির অনুষ্ঠানের প্রবেশপত্র তিনি কীভাবে জোগাড় করেছিলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। উদ্ধার হওয়া প্রবেশপত্রটি ছিল ফেয়ারভিউর একটি ঠিকানার। ম্যানহাটন থেকে হাডসন নদী পেরিয়ে ওই ছোট শহরে হাদির সর্বশেষ ঠিকানা ছিলো বলে পুলিশের দাবি করেছে।
শুক্রবার রাতে হাদির ঠিকানায় তল্লাশি করতে গিয়েছিল মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। সেখানে বেশ কিছু নথিপত্র উদ্ধার হয়েছে বলে প্রকাশিত কয়েকটি খবরে দাবি করা হয়েছে। হাদি ভুয়ো নথিপত্রের সাহায্যে ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়েছিলেন বলেও প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার নিউইয়র্ক থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে শতকা ইন্সটিটিউশনের মঞ্চে বক্তৃতা করতে ওঠার সময় হাদি হামলা চালান রুশদির ওপর। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, মঞ্চে ওঠার সময় রুশদির ওপর ছুরি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ বার ছুরির কোপ বসান ওই বিতর্কিত লেখকের ঘাড়ে-বুকে-পেটে। এরপর মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রুশদি। পরে ঘটনাস্থলে এসে পুলিশ রুশদিকে হেলিকপ্টারে করে তড়িঘড়ি হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। গ্রেফতার করা হয় হামলাকারী হাদিকে। এখন পুলিশ হেফাজতেই রয়েছেন তিনি।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
বিজ্ঞাপন
এমইউ

