মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পর এবার ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাত বন্ধ করার জন্য মধ্যস্থতা করার দাবি করছে চীন।
মঙ্গলবার বেজিংয়ে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ও চীনের বৈদেশিক সম্পর্ক নিয়ে একটি আলোচনাসভায় চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এই দাবি করেছেন। এসময় ভারত ও পাকিস্তানের সংঘাত ছাড়াও বেইজিংকে মিয়ানমারের উত্তেজনা, কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের মধ্যে উত্তেজনা এবং ইরানের পারমাণবিক সমস্যাসহ অন্যান্য বৈশ্বিক সংঘাতের জন্য শান্তি আলোচক হিসাবে তুলে ধরেছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
ওয়াং বলেছেন, ‘দীর্ঘস্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে আমরা কাজ করেছি এবং মূল কারণগুলি খুঁজে বের করে তা সমাধানের চেষ্টা করেছি। এই নীতি অনুসরণ করে আমরা উত্তর মিয়ানমার, ইরানের পরমাণু বিষয়ক ইস্যু, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা, ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের বিষয়টি এবং হালে ঘটা কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের সংঘাতে মধ্যস্থতা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই বছর, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির পর থেকে স্থানীয় যুদ্ধ এবং সীমান্ত-আন্তঃসংঘাত যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতাও ছড়িয়ে পড়তে থাকে। তবে, স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য, আমরা একটি বস্তুনিষ্ঠ এবং ন্যায্য অবস্থান গ্রহণ করেছি এবং লক্ষণ এবং মূল কারণ উভয়কেই মোকাবেলা করার দিকে মনোনিবেশ করেছি।’
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করেছিল নয়াদিল্লি। ইসলামাবাদ এতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করলেও গত ৭ মে ভোরে পাকিস্তানে বিমান হামলা চালায় ভারত। ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযান ‘অপারেশন বুনিয়ান উল মারসুস’ পরিচালনা করে পাকিস্তান।
বিজ্ঞাপন
পরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে চার দিনের তীব্র সংঘাত শেষে যুদ্ধবিরতিতে যায় দুই দেশ। পাকিস্তান বিষয়টি স্বীকার কররেও ট্রাম্পের এই দাবি অস্বীকার করে আসছে ভারত। নয়াদিল্লির দাবি, যুদ্ধ বন্ধে তারা পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিকভাবে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছিল, যেখানে তৃতীয় পক্ষের কোনো ভূমিকা ছিল না, এমনকি ট্রাম্পেরও কোনো কৃতিত্ব নেই।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি অনুযায়ী, ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব সংঘাত কমানোর উদ্যোগ নেয়। ১০ মে ভারতের ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনের সঙ্গে তার পাকিস্তানি সমকক্ষের যোগাযোগের পর নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) জুড়ে গোলাগুলি ও সামরিক তৎপরতা বন্ধে উভয় পক্ষ একটি সমঝোতায় পৌঁছে।
অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিগত কয়েকমাসে বারবার দাবি করেছেন, তার মধ্যস্থতায় পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান ‘পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক’ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছিল।
তিনি আরও দাবি করেন, ভারতের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকিই ছিল ‘শান্তি প্রতিষ্ঠার আসল অস্ত্র’।
সূত্র: এনডিটিভি
এমএইচআর

